বুধবার, ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

২৫ ডিসেম্বর যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন ” বড় দিন ” বাইবেল কি বলে ?

সকল প্রশংসা সেই মহান স্রষ্টার, যিনি সমগ্র পৃথিবীর স্রষ্টা। যিনি দয়াবান, করুণাময়, সঠিক পথের পথপ্রদর্শক, যিনি বিচার দিবসের মালিক। যিনি আমাদেরকে সর্বদা দেখেন, এখনও দেখছেন। যিনি আমাদের পাপ থেকে মুক্তি দান করেন। শান্তি বর্ষিত হোক আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও প্রেরিত যীশু ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর; তার সঙ্গী-সাথী ও উম্মতের ওপর এবং সকল মানুষের ওপর।
 
প্রিয় পাঠক! আমি যীশু খ্রিস্টকে ভালোবাসি। আমি তাঁর প্রকৃত ভক্ত। আমি তার প্রকৃত বাণীর প্রচারক। আমি চাই তাঁর নিয়ে আসা বার্তা-সুখবর সারা বিশ্বের প্রতিটি ঘরে-ঘরে, অলিতে-গলিতে, আনাচে-কানাচে এবং প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দিতে। অনেকে-ই তাঁকে চিনে না, জানে না, জানার চেষ্টাও করে না। আমি কুরআন পড়েছি, বাইবেল পড়েছি। আমরা অনেকে যীশু খ্রিস্টের বাইবেলে বর্ণিত জীবনীই জানি। অথচ বাকি আছে আরও অনেক কিছু অজানা। তাই আমি আজ এই বড়দিনে উপহার হিসেবে, জানাতে চাই যীশু খ্রিস্টের অজানা জীবন।
 
যীশুর জন্ম তারিখ
২৫শে ডিসেম্বর তারিখটি শুধু খ্রিস্টান বিশ্বেই নয়, পৃথিবীর যে কোনো দেশের, যে কোনো ধর্মমতে মানুষের কাছেই যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনের বিশেষ মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়ে আছে। কিন্তু সত্যসন্ধানী ঐতিহাসিক কিংবা গবেষকদের মধ্যে অথবা বাইবেলের নতুন নিয়মের ইতিহাসে এর কোনো সমর্থন নেই।
 
বড় দিনের ইতিহাস সম্বন্ধে merit students encyclopaedia (vol.4,p477-478) বলে:
“খ্রিস্টান ধর্মের প্রথম দিকে সাধুসন্ত, সহীন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য তাদের জন্মবার্ষিকীর পরিবর্তে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করার একটি প্রথা চালু ছিল। জন্মতিথি প্রতিপালন ছিল নীচুজাতের প্রথা। তাই প্রাথমিক যুগের খ্রিস্টান ধর্মবেত্তারা এর প্রতি চরম বিরোধিতা পোষণ করতেন। কিন্তু এরূপ বিরোধিতা সত্বেও ২০০খ্রিস্টাব্দের দিকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই খ্রিস্টের জন্মদিন উদযাপন করতে শুরু করে।
যেহেতু যীশুর জন্মের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ জানা নেই এবং ২০০খ্রিস্টাব্দেও জানা ছিল না, তাই বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায় বিভিন্ন সময়ে যীশুর জন্ম উপলক্ষে ভোজের আয়োজন করতো। ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে পোপ প্রথম জুলিয়াস ঘোষণা করলেন যে, যীশুর জন্মের আসল তারিখ হলো ২৫শে ডিসেম্বর। চতুর্থ শতাব্দীর শেষ নাগাদ পশ্চিমের প্রায় সব সম্প্রদায়ই দিনটিকে স্বীকার করে নেয়। পূর্বদেশে জেরুজালেম এবং আর্মেনিয়ার খ্রিস্টান সম্প্রদায় তবুও যীশুর জন্মদিন হিসেবে ৬ জানুয়ারীকে উদযাপনের প্রথা চালু রাখে। বস্তুত ৬ই জানুয়ারী যীশুর অভিসিঞ্চন তিথি। আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের কাছে আজও ঐ দিনটিই হল বড় দিন। পূর্ব দেশীয় আরও কিছু সম্প্রদায়ের মাঝে ৬ জানুয়ারী উদযাপনের প্রথা চালু আছে।
 
খ্রিস্টধর্মের উদ্ভবের বহু পূর্বেও ২৫শে ডিসেম্বর একটি বিশেষ ছুটির দিন ছিল। রোমানরা একে অজেয় সূর্যের জন্মদিন বলে জানতো। এই দিনে তারা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত দিনের আলোর জন্য ধন্যবাদ জানাত এবাং একে সূর্যের পূনর্জন্ম বলে চিহ্নিত করত। অজেয় সূর্যের জন্মদিনের এই উৎসবটি রোমানদের শীতকালীন মহান উৎসব স্যাটারনালিয়ার অন্তুর্ভূক্ত ছিল। এটি ছিল আদি খ্রিস্টানদের প্রধান শত্র“-মিত্ররা ধর্মের অনুসারীদের বিশিষ্ট ভোজন উৎসবের দিন।
 
গোড়ার দিকের খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলো স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে ২৫শে ডিসেম্বরকে সম্ভাব্য দিন বলে গ্রহণ করে এই জন্য যে, এতে খ্রিস্টানদের উৎসবকে বর্বরদের উৎসবের স্থলাভিষিক্ত করা যাবে এবং নীচুজাতের বিধর্মীদের দেবতাদের স্থলে পূজোর ধারাকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন না করেও যীশুকে স্থাপন করা যাবে।
 
আধুনিক ইউরোপে টিউটোনিক গোত্রের লোকেরাও ডিসেম্বরের শেষে শীতের উৎসব পালন করে। পরবর্তীতে ঐ গোত্র খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে তাদের অনেকগুলো আচার-পদ্ধতি খ্রিস্টানদের উৎসববের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। ”
 
Merit students Encyclopaedia Gi gZ the Macmillan family Encyclopaedia (vol.4,p415)
 
খ্রিস্টমাস সম্বদ্ধে বলেন:
“যীশুর জন্মবৃত্তান্তের প্রতি আস্থাবান থাকা সত্বেও চতুর্থ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা এই ঘটনাকে উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করতো না। সম্্রাট আরেলিনের আমলে ২৭৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে নীচুজাতের লোকদের শীতকালীন অয়নান্ত উৎসবের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানের জন্য ঐ দিনটিকে নির্ধারিত করা হয়। রোমানরা ‘অজেয় সূর্যের দিন’ হিসাবে ২৫শে ডিসেম্বরকে উদযাপন করতো এবং ভোজের আয়োজন করতো পূর্বদেশীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মাঝে ৬ই জানুয়ারী দিনটিকে অয়নান্ত দিন হিসেবে ধরা হতো এবং উৎসবের জন্য প্রাথমিকভাবে ভাল মনে করা হতো। যাহোক, কালক্রমে পশ্চিমারা পূর্বদেশীয়দের ঐ দিনটিকে ‘প্রাচ্যদেশীয় জ্ঞানীদের আগমনের দিন’ হিসেবে ধরে নেয় এবং ভোজের আয়োজন করে উদযাপন করে আর পূবদেশীয়রা পশ্চিমাদের বড়দিনকে উদযাপন করতে শুরু করে। এভাবে পশ্চিমারা বড়দিনের উৎসবকে দু’ভাগে ভাগ করে নিয়ে ২৫শে ডিসেম্বর (যীশুর জন্ম এবং মেষপালকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন) এবং ৬ই জানুয়ারী (প্রাচ্যদেশীয় জ্ঞানীদের প্রতি সম্মান উদযাপন করে।
 
মধ্যযুগে এসে ইউরোপে শীতকালীন অয়নান্ত উৎসব খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উৎসবগুলোর মাঝে চিরস্থায়ী আসন লাভ করে। ইংল্যাণ্ড এবং নিউ ইংল্যাণ্ডের পিউরিটানরা বড়দিন উদযাপন প্রথার বিলোপ সাধনের চেষ্টা করেছিলেন বটে, কিন্তু তাদের সে প্রচেষ্টা গণসমর্থন না পাওয়ায় বড়দিনের উৎসব টিকে যায়, আর শিল্প-বিপ্লবের সময় থেকে এর ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ঘটে। এর ফলে বড় দিনের উৎসবটি সত্যিকার বড়দিন থেকে পিছিয়ে নিয়ে যায়। চিরাচরিত খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে খ্রিস্টের আবির্ভাব-পূর্ব বড় দিন আসলে বার দিন ধরে (২৫শে ডিসেম্বর থেকে ৬ই জানুয়ারী পর্যন্ত) উৎসব পালনের পথ পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে। ”
 
যীশুর জন্ম সম্বন্ধে বাইবেলের নতুন নিয়েমে (লুক লিখিত সুসমাচারে ) বর্ণিত হয়েছে যে “যীশু যেদিন ভুমিষ্ঠ হন, সেদিন ঐ অঞ্চলে (বেৎলেহেমে )মেষ পালকেরা মাঠে অবস্থান করছিল এবং নিজ-নিজ মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল” (২:৮)। কিন্তু বেৎলেহেম নগর যে রাজ্যের অন্তর্গত সেই শুষ্ক মরুময় জুডিয়া রাজ্যে ডিসেম্বর মাসের প্রচণ্ড শীতের রাতে রাখালদের পক্ষে মেষপালা পাহারা দেওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব। কারণ তখন তাপমাত্রা এত নীচে নেমে যায় যে বরফ না পড়ে পারে না। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ঐ অঞ্চলে গরমের মৌসুমেই রাতের বেলায় মেষ চরানো হয়ে থাকে। কারণ, দিনের বেলায় প্রচণ্ড রৌদ্র উত্তপ্ত মরুভূমিতে মেষ চরানো কখনও সম্ভব নয়।
 
উপরোল্লেখিত লুকের বর্ণনার উপর আলোচনা করতে গিয়ে বিশপ বার্ণস তার Rise of Christianity’ পুস্তকের ৭৯ পৃষ্ঠায় বলেন:…অর্থ, “এমন কোনো সূত্র নেই যার মাধ্যমে ২৫শে ডিসেম্বরকে যীশুর আসল জন্মদিন বলে বিশ্বাস করা যায়। যদি আমরা লূক বর্ণিত জন্ম বৃত্তান্তের প্রতি কোনোরূপ বিশ্বাস স্থাপন করি এবং সেই সূত্রে রাতের বেলায় বেৎলেহেমের নিকট মাঠে মেষপালকদের মেষচারণের কথাকে বিশ্বাস করি, তাহলে অবশ্যই শীতকালে যীশুর জন্ম হয় নি, কারণ পার্বত্য এলাকা জুডিয়ায় রাতের বেলায় তাপমাত্রা এত নিচে নেমে যায় যে, তখন বরফ না পড়ে পারে না। এখানে বিশপ বার্ণস লূকের বর্ণনানুসারে যীশুর জন্ম ২৫শে ডিেিসম্বর তথা শীতকালে হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। কারণ লুকের বর্ণনায় আছে যে, যীশুর জন্মকালে মেষপালকেরা রাতের বেলায় তাদের মেষপাল চরাচ্ছিল। কিন্তু জেরুজালেমের পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে রাতের বেলায় এমন শীত নামে যে তখন বরফ পড়ে থাকে এবং বরফ পড়া ওই শীতের রাতে রাখালদের পক্ষে মেষ চরানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। এই অভিমত শুধু সাধারণ মানুষদের দ্বারাই নয়, বিশ্বাবিখ্যাত এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটেনিকা এবং চেম্নারস এসাইক্লোপিডিয়া’র খ্রিস্টমাস শীষক প্রবন্ধ লেখকদের দ্বারাও সমর্থিত।
 
যীশুর জন্ম তারিখ সম্বন্ধে ব্রিটেনিকা বিশ্বকোষ বলে. … অর্থ, খ্রিস্টের জন্মদিন ও বছর সন্তোষজনকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি; কিন্তু গীর্জাধিকাররা ৩৪০ খ্রিস্টাব্দে যখন এই ঘটনার স্মৃতি-তর্পন উদযাপনের স্থির করলেন তখন তারা অতি বিজ্ঞানোচিতভাবে মকরক্রান্তিতে সূর্যের অবস্থান দিনকে নির্ধারণ করে ছিলেন যে, দিনটি তাদের অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ আনন্দোৎসবের দিন হিসেবে জনসাধারণের মাধ্যে পুর্বাহ্নে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল। মানব প্রণীত পঞ্জিকার পরিবর্তনের কারণে নক্ষত্র থেকে সূর্যের দূরতম স্থানে অপস্থঅনকালে এবং খ্রিস্টমাসের মধ্যে অল্প কদিনের তফাত হয়।
 
(Encyclopaedia 15th edition,vol.5.p.p-642&642A)
 
চেম্বার্স এনসাইক্লোপিডিয়া বলে, ……অর্থ. দ্বিতীয় স্থানে মকর-ক্রান্তি সূর্যেও জন্মদিন হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল এবং রোমে ২৪শে ডিসেম্বর সূর্যদেবের জন্মতিথি উপলক্ষে পৌত্তলিক উৎসব পালিত হয়। (খ্রিস্টান ) চার্চ এই জনপ্রিয় প্রচলিত আনন্দোৎসবকে বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে এক আধ্যাত্মিকতার অভিষেক দিয়ে ন্যায়পরায়ণ সূর্যদেবের উৎসব হিসেবে পালন করতে শুরু করে।
১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে বড় দিন সংখ্যা ‘নবযুগ’ পত্রিকায় ঢাকার বিশপ জমস লিখেন, চতুর্থ শতাব্দীর আগে ২৫শে ডিসেম্বর প্রভুর জন্মদিন বলে উল্লেখিত হয়নি। … তবে ২৫শে ডিসেম্বার কেন ধার্য করা হলো তা আমরা কেবল অনুমান করতে পারি। আমাদের পূর্বের তারিখগুলো আসল তারিখ নয় পুনরুত্থান দিন নিস্তার পর্বের তারিখের সাতে মিলে না। ”
(যীশু খ্রিস্টের অজানা জীবন-৩৫-৩৮)
মোটকথা কোনোভাবেই প্রমাণ করা যায় না যে ২৫শে ডিসেম্বর যীশু জন্ম দিন। আসুন আমরা জন্ম দিন ছেড়ে যীশুর শিক্ষার উপর আমল করি।
বাইবেলে এমন কোনো বাক্য নেই যেখানে আপনি পাবেন যে,২৫ ডিসেম্বর যিশু খৃষ্টের জন্ম হয়েছে।”ক্রিসমাস” বা “সান্তা” সম্পর্কে এমনকিছু বাইবেলের কোথাও কোনো আয়াত নেই।বাইবেলে এমন কোনো আয়াত নেই যেখানে লেখা আছে ঈসা মসিহ হলেন ঈশ্বর।
ঈশ্বরের খাওয়াদাওয়ার প্রয়োজন হয়না,যিশু খাওয়াদাওয়া করেছে।ঈশ্বরের ঘুমানোর প্রয়োজন নেই,যিশু ঘুমিয়েছে।ঈশ্বরের ইবাদতের প্রয়োজন নেই,যিশু ইবাদত করতেন।ঈশ্বর ইবাদত থেকে স্বাধীন কিন্তু যিশু ইবাদত করতেন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে!স্বয়ং ঈশ্বর কিভাবে নিজেই নিজের ইবাদত করতেন!
যিশু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ইবাদত করতেন,মুসলমানরাও তা-ই করে।যিশু রোযা রাখতেন,মুসলমানরাও তা-ই করে।যিশু দাড়ি রাখতেন,মুসলিমরাও দাড়ি রাখে।যিশুর মাতা যাকে খৃষ্টানরা মাতা মেরি বলে মুসলমানরা তাকেও সম্মান করে এবং মরিয়ম তিনিও মুসলমান নারীদের ন্যায় মাথা ঢেকে রাখতেন,ঢোলাঢালা পোশাক পড়তেন।অপরদিকে তথাকথিত খৃষ্টানরা যিশুর কোনো কিছুকেই অনুসরন করেনা!
আমরা মুসলিমরা প্রত্যেক খৃষ্টান ভাইকে ইসলাম সম্পর্কে আরো জানতে আমন্ত্রন জানাচ্ছি।ইসলাম অন্যকোনো ধর্ম নয়,বরং আপনার আমার প্রভুর মনোনীত একমাত্র গ্রহনযোগ্য ধর্ম।ইসলাম আপনাকে সেই একই বার্তা পৌছায় যা পৌঁছেছেন মুসা (আঃ),যিশু/ঈসা (আঃ) ও ইব্রাহীম (আঃ)।ইসলামের আক্ষরিক অর্থ হলো ‘ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সমর্পন করে দেওয়া’ এবং এটি আমাদেরকে ঈশ্বরের সাথে সরাসরি সম্পর্ক বজায় রাখতে শেখায়। এটি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন, কেবলমাত্র ঈশ্বর ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করা উচিত নয়। এটি এমন একটি শিক্ষা দেয় যে ঈশ্বর মানুষের মতো নয় অথবা এমন কিছু যা আমরা কল্পনা করতে পারি।
আল্লাহর ধারণাটি কুরআনে যেমন সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে: বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক। আল্লাহ, পরম নির্ভরস্থল।তিনি কাউকে জন্ম দেননি, কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কিছুই নেই। {সূরা ইখলাস: ১-৪}
 
আর স্মরন করো! মরিয়ম্পুত্র ঈসা বলেছিলেন,-হে ইসরাঈলের বংশধরগণ! আমি নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল,আমার সম্পর্কে তাওরাতে যা রয়েছে আমি তার সমর্থনকারী,আর সুসংবাদ দাতা এমন এক রাসূল সম্পর্কে যিনি আমার পরে আসবেন ,তার নাম আহমদ।তারপর যখন তিনি তাদের কাছে এলেন স্পষ্ট প্রমানাবলীসহ,তারা বললো- এ তো স্পষ্ট জাদু!
আর তার চাইতে কে বেশি অন্যায়কারী যে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা রচনা করে,অথচ তাকে আহ্বান করা হচ্ছে ইসলামের দিকে?আর আল্লাহ অন্যাকারী জাতিকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।{সূরা আস সাফঃ ৬-৭}
 
মুসলমান হওয়ার লাভ
 
ইসলাম গ্রহণ করার সবচাইতে বড় লাভ হল তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। যেমন মুহাম্মদ বলেন
“ ইসলাম গ্রহণ করার সাথে সাথে বে-গুনাহ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে।” আরো আপনার জন্য অপেক্ষা করছে চির শান্তির স্থান জান্নাত। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘শোন! যে-কেউ আল্লাহর নিকট সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে এবং সৎকর্মপরায়ণ হয় এর ফল তাার প্রতিপালকের নিকট রয়েছে এবং তাদের কোনো ভয় নেই তারা দুঃখিতও হবে না।”
– সুরা বাকারা-১১২
“নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে দাখিল করবেন উদ্যানসমূহে, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হবে। তাদেরকে তথায় স্বর্ণ-কঙ্কন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং তথায় তাদের পোশাক হবে রেশমী।”
-সূরা হজ্জ :২৩
ভাইয়া! আপনি যদি মুসলমান না হন তাহলে আপনাকে চিরকালের জন্য নরকের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে ও জাহান্নামের কঠিন আগুনে জ্বালানো হবে।
 
ইসলাম গ্রহণ না করার ক্ষতি
 
আল্লাহ তাআলা বলেন:
১৯।“এই দুই বাদী-বিবাদী, তারা তাদের প্রতিপালক সম্পর্কে বিতর্ক করে। অতএব যারা কাফের, তাদের জন্যে আগুনের পোশাক তৈরি করা হয়েছে। তাদের মাথার ওপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে।” ২০। “ফলে তাদের পেটে যা “আছে, তা এবং চর্ম গলে বের হয়ে যাবে।” ২১। “তাদের জন্যে আছে লোহার হাতুড়ি।” ২২।“তারা যখনই যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বলা হবে: দহনশক্তি আস্বাদন কর।”
 
সবশেষে আপনাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে বড়দিন উপলক্ষ্যে একটি ছোট হাদিয়া- “বড় দিনের উপহার” এই পুস্তিকাটিতে দেয়া আছে যীশুর জন্ম, যীশুর মাতা মেরীর সম্পর্কে কুরআন কী বলেছে এবং তাঁর জীবন বৃত্তান্ত। আরও আছে বড়দিনের রহস্য ও তার প্রকৃত ইতিহাস।
 
অধমের আকুল আবেদন
 
আমার প্রিয় ভাই ও বোন! আমি মন থেকে আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি, আপনি মুসলমান হয়ে চিরস্থায়ী নরকের আগুন থেকে বেঁচে যান। ভাইয়া! আমি চাই না, আপনি কঠিন আগুনে চিরদিন জ্বলুন। দেখুন! আপনি যদি মুসলমান হোন, তাহলে আমার কোনো লাভ নেই। আপনি আমাকে একটি টাকাও দিবেন না। শুধু আপনার ভালোবাসার কারণেই আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি। আপনার ভাইয়ের দাওয়াতটি গ্রহণ করে তার অন্তরকে সান্ত¡না দিন।
 
সত্যি বলছি, ভাইয়া! আপনাদের জন্য আমার মনটা খুব কাঁদছে যাতে নরক থেকে মুক্তি পেয়ে চিরস্থায়ী স্বর্গের বাসিন্দা হয়ে যান। ভাইয়া! শেষ বারের মতো আহ্বান করছি, আপনি মুসলমান হয়ে যান, মুসলমান হয়ে যান, মুসলমান হয়ে যান। না হয় কম পক্ষে আপনার এক মালিককে বলুন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে সত্য পথ দেখান এবং দেখার সাথে সাথে তা গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আর সকাল সন্ধ্যা বলুন “ইয়া হাদী, ইয়া রাহীম ” সকালে ১০০বার, বিকালে ১০০বার। অনেক বড় বড় বিপদ থেকে মুক্তি পাবেন। সর্বশেষ দুআ করি- হে আল্লাহ ! আমাদের প্রত্যেকটি ভাই-বোনকে ইসলামের সঠিক পথ দান করুন।! আমিন। হে আল্লাহ! আপনার বান্দাদেরকে আপনার সাথে জুড়িয়ে নিন। আপনার বান্দাকে নরকের কঠিন আগুনে নিক্ষেপ করিয়েন না। হে আল্লাহ! এই পুস্তিকাটি কোটি মানুষের হেদায়াতের মাধ্যম বনিয়ে দিন। আমীন।
পরিচালকঃ ইসলামী দাওয়াহ ইন্সটিটিউট, ঢাকা ।

Archives

July 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031