বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আরাকানী আলেমের জবানে তাদের দুরাবস্থার বর্ণনা- ক্যাম্প থেকে ফিরে

Khutbah Tv 

রেজোয়ানুর রহমানঃ মুফতী মুহিব্বুল্লাহ আরাকানী।তিনি পাঁচ বছর টেকনাফে একটি জামিয়ায় পড়াশোনা করেন।এরপর পটিয়া মাদ্রাসায় এক বছর পড়েন।তারপর চলে যান পাকিস্থান।দারুল উলুম করাচি থেকে দাওরা শেষ করেন।এরপর দুবছর ইফতা পড়ে বার্মায় ফিরে আসেন।ত্বকি উসমানি (দা.বা) উনার সম্মানিত উস্তাদ।

দেশে ফিরে বিভিন্ন মাদরাসায় বহু বছর ধরে দরস দিয়ে আসছিলেন।এ বছর বর্মি হুকুমাতের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বপরিবারে বাংলাদেশে হিজরত করেন।

Default Ad Content Here

বর্তমানে তার দুই ছেলে ও বিবিকে নিয়ে বালুখালি ক্যাম্পে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।উর্দুতে আমাদের সাথে অনেকক্ষন কথা বললেন।তার পরিবারের কথা বললেন,দেশের কথা বললেন।তার কওমের উপর মগদের নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা বললেন।

তার সামনে কাউকে হত্যা করা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করায় বললেন-
তার সামনে ৩০ জন মানুষকে আর্মি শহীদ করেছে।তাড়া খেয়ে একটা ঘরের ভিতর বেচারারা লুকিয়ে ছিল।চতুর্দিক থেকে ঘিরে প্রথমে গুলি।এরপর আগুন ধরিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

আড়াল থেকে মুহিব্বুল্লাহ সাহেব সব দেখছিলেন আর আফসোস করছিলেন।নিরস্ত্র অসহায় মানুষের আর কতটুকুই বা করার ছিল।উনার প্রয়োজনীয় সনদ,কাগজ-পত্র নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এলেন।মাদরাসা তো ১২ সালেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।বাকি কিতাবাদি সাথে করে নিয়ে আসতে চেয়েও পারেন নি।

বর্ডারের কাছে হওয়ায় তিনি বা তার এলাকার লোকজন তো পালিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছেন।কিন্তু আকিয়াব এবং অন্যান্য দুরবর্তি এলাকার মুসলমানদের কি হবে?তাদের সামনে তো বাংলাদেশে হিজরত করার কোন রাস্তা নেই।

আরসা সম্পর্কে জানার ইচ্ছা ছিল।আরাকানের উলামায়ে কেরাম এই গ্রুপটি সম্পর্কে কি বলেন তা এবার সরাসরি জিজ্ঞেস করার সুযোগ মিলেগেল।

মুফতি মুহিব্বুল্লাহ সাহেব কে একাকি এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম।উনি বললেন নাম তো সুনাহ্যে লেকিন ইসকি হাকিকত মুঝে পাতাহ নেহি।

উনি আরসার নাম শুনেছেন।তবে তাদের হাকিকত তিনি জানেন না।

তাদের কে ব্যাক্তিগত ভাবে চিনেন না।তার ধারনা মতে আরসা বর্মি হুকুমাতের তৈরি গ্রুপ হতে পারে।তিনি নিশ্চিত নন,তবে এরকম তার ধারনা।হয়তো সঠিকই অনুমান করেছেন।আবার ভুলও হওয়া অসম্ভব নয়।ভিতু আর গাদ্দারদের উৎপাত দীর্ঘদিন যাবৎ সহ্য করে আসছেন মজলুম আরাকানীরা।হুট করে অপরিচিত একটি দলের আগমন বড় রহস্যময় লাগারই কথা।

যদি সত্যিই আরসা বার্মা হুকুমাতের দাবার গুঁটি হয় তবে তো তাদের জন্য চরম দুর্ভোগ ছাড়া কিছু নয়।আর যদি আরসা বাস্তবেই রোহিঙ্গা কওমের পক্ষে লড়াই করার মানুষীকতা নিয়ে মাঠে নেমে থাকে তাহলে তাদের উচিৎ যত্র-তত্র হামলা করে পালানোর আগে অসহায় লোকগুলোর কথা একবার ভাবা।যারা ঐসব হামলার বদলে কচু কাচা হয়।

মুহিব্বুল্লাহ সাহেবের সাক্ষাতকার নেয়ার ইচ্ছা ছিল টেকনাফ ছেড়ে আসার দিন।কিন্তু ক্যামেরার ব্যাটারি,মোবাইলের ব্যাটারি কোনটিই সঙ্গ দিলো না।

পরের দিন আরাকানের উলামায়ে কেরাম আসর বাদ আমাদের মাহমুদ নগর মসজীদে একত্রিত হন।মুহিব্বুল্লাহ সাহেব এবং আরেক জন আরাকানী আলেম সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।আলহামদুলিল্লাহ মোবাইলে অল্প চার্জ দেয়ার ব্যাবস্থা করতে পারায় রেকর্ড করা সম্ভব হয়।অডিও বয়ানটি দ্রুতই আপলোড করবো ইংশা আল্লাহ।

(উখিয়া বালুখালি ক্যাম্প,ব্লক-এ ২৮,মাহমুদ নগর)

Archives

November 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30