রবিবার, ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
হেফাজতে ইসলাম বালাদেশের আমীর ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, শায়খুল ইসলাম আল্লমা শাহ আহমদ শফী আজ এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের আরকানে মুসলিম নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নির্বিচারে গণহত্যা বন্ধের দাবীতে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর জুমাবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল সফল করা আহবান জানিয়ে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সরকারী বাহিনী ও বৌদ্ধঅস্ত্রধারীরা যৌথভাবে ইতিহাসের বর্বতম হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। বার্মার মগসন্ত্রাসীদের পৈচাশিক আর নির্মমতার কোন নজীর দুনিয়াতে নেই।
তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে মুসলমানদের ঘর বাড়ি, মাদরাসা ও মসজিদগুলি আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে, শিশুসহ সব বয়সী মানুষদেরকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারছে, এমনকি জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করছে। প্রতিদিন নদীতে ভাসছে মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলমান শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধ নারী পুরুষের বিকৃত লাশ। মায়ের সামনে মেয়েকে, মেয়ের সামনে মাকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে নির্বিচারে হত্যা করছে সরকারী বর্বর বাহিনী। এদের কাছে মানবিকতা বলতে কিছুই নেই, এরা মানবতার শত্রু।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই বোন।নির্যাতিত, নিপীড়িত অসহায় মজলুম। এদের সাহায্য করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলিম মা বোনদের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলায় মেতে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা রাষ্ট্র ও জনগণের নৈতিক কর্তব্য। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সোচ্চার হোন, কুটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করুন। মানবতার শত্রুদের মোকাবিলায় বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রগুলোকে শামিল করুন। দেশের জনসাধার এব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করবে।
আল্লমা শাহ আহমদ শফী জাতিসংঘ ও আইসিকে মিয়ানমারের এই সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মুসলমান হওয়াটাই কি আরাকানের নির্যাতিত নাগরিকদের অপরাধ? যে নির্যাতন আজ আরাকান চলছে তার শতভাগের একভাগও যদি কোনও মুসলিম দেশে অমুসলিমদের ওপর করা হতো তাহলে বিশ্বসংস্থা ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের শক্তিধর দেশগুলো এভাবে নীরব ভূমিকা পালন করতো ? তাই, আরকানে মুসলিম গণহত্যার উসকানিদাতা অং সান সুচির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
আল্লমা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, আরকানে মুসলমানের ওপর যে নির্যাতন চলছে তা জাহেলী যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়ে ফেলছে। এই করুণ পরিস্থিতিতে কোন বিবেকবান ও ঈমানদার মানুষ নিরব বসে থাকতে পারে না। আরকানের অত্যাচারিত মুসলমানদের পাশে দাড়ানো, যার যার সামর্থানুযায়ী সাহায্য করা সকল মুসলমানদের ঈমানী ও মানবিক দায়িত্ব। তিনি আরকানে মুসলমানের ওপর নির্যাতন বন্ধে সোচ্চার ভ’মিকা রাখা এবং আগামীকাল শুক্রবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলসহ হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত সকল কর্মসূচী সফল করার জন্য সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম ও দেশবাসির প্রতি আহবান জানিয়েছেন।