সোমবার, ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

কোরআন পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যয়নকারী, সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী – তারাবীহ ২য় পাঠ

This entry is part 2 of 27 in the series দরসে তারাবীহ

 

Default Ad Content Here

আজ দ্বিতীয় তারাবিতে সূরা বাকারা (২০৪-২৮৬) এবং সূরা আলে ইমরান (১-৯১) পড়া হবে। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে দ্বিতীয় পারার শেষার্ধ এবং তৃতীয় পারা পুরোটা। ২. সূরা বাকারা : (২০৪-২৮৬) ২০৪ থেকে ২১০ নম্বর আয়াতে মোনাফেক-কাফের ও মোমিনের আচার-বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা তুলে ধরা হয়েছে। ২১১ থেকে ২১৬ নম্বর আয়াতে মোমিনদেরকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েত দেওয়া হয়েছে। বনি ইসরাইলদের কথা উল্লেখ করে উম্মতে মুহাম্মদিকে সতর্ক করা হয়েছে। সত্য অস্বীকার করা, দলে-উপদলে বিভক্ত হওয়া, আল্লাহর দ্বীনকে বুলন্দ করার সংগ্রামে ধৈর্যচ্যুত হওয়ার মতো বিষয় থেকে বিরত থাকার হেদায়েত রয়েছে এ আয়াতগুলোতে।

২১৭ থেকে ২২১ নম্বর আয়াতে পবিত্র মাসে যুদ্ধের বিধান, মদ-জুয়ার অপকারিতা, এতিমদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা এবং মুশরিক নারীদের বিয়ে না করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। ২২২ থেকে ২৪২ নম্বর আয়াতে নারীদের ঋতুচলাকালীন বিশেষ বিধি-নিষেধ, তালাক, ইদ্দত ও দেনমোহর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

২৪৩ থেকে ২৫৩ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.) এর পর বনি ইসরাইলরা পরবর্তী নবীদের সঙ্গে জিহাদের প্রশ্নে কেমন পিঠটান আচরণ করেছিল, এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ২৫৪ থেকে ২৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহর মহত্ত্বের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। উদহারণস্বরূপ ইবরাহিম (আ.) এর তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।

২৬১ থেকে ২৮৩ নম্বর আয়াতে অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিধি-বিধান প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহর পথে ব্যয়ের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা, আল্লাহর পথে ব্যয় না করার পরিণাম, উশরের বিধান, দানের উপযুক্ত কারা- এসব বিধান আলোচনা করার পাশাপাশি সুদের পরিণতি, সুদ হারাম হওয়ার ঘোষণা এবং সুদ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশও রয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে ঋণ প্রসঙ্গে। ঋণ যেন লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে হয়, এসব নির্দেশনা সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে ২৮২ ও ২৮৩ নম্বর আয়াতে।

২৮৪ থেকে ২৮৬ নম্বর আয়াতে সূরা বাকারার উপসংহারস্বরূপ ঈমানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বান্দা তার রবের কাছে কিভাবে চাইবে- এ মর্মে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।মূলত আল্লাহই হলেন মুমিন বান্দার প্রকৃত অভিভাবক।

৩. সূরা আলে ইমরান : (মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত দুইশত, রুকু বিশ) ১ থেকে ৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পবিত্র কোরআনের মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়েছে। এ কোরআন পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যয়নকারী এবং সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী। কোরআনের আয়াতগুলো দুই ধরনের। ‘মুহকাম ও মুতাশাবিহ’ সুস্পষ্ট অর্থবোধক ও অস্পষ্ট। মোমিন ব্যক্তি সব ধরনের আয়াতের প্রতি বিশ্বাস রাখে। আর বক্র মনের মানুষ সবকিছুতে জটিলতা খোঁজে।

১০ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য জাহান্নামের ভয়াবহ আজাবের কথা বলা হয়েছে। পার্থিব জীবনের প্রতি মোহগ্রস্ততার হেতু কী- এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে ১৪ নম্বর আয়াতে। পরবর্তী অংশে ঈমান ও দাওয়াতের বিষয়ে সংক্ষেপে, তবে মৌলিক আলোচনা রয়েছে। ২১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করেনি, সত্য লুকিয়ে রেখেছিল, তাদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ক্ষমতা ও সম্মানের মালিক শুধু আল্লাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা এসব দান করেন, আবার যার থেকে ইচ্ছা এসব ছিনিয়ে নেন।

৩০ থেকে ৬২ নম্বর আয়াতে ইমরানের স্ত্রী, মরিয়ম (আ.) ও ঈসা (আ.) এর ঘটনা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ৬২ থেকে ৯১ নম্বর আয়াতে আহলে কিতাবদের সঙ্গে মুসলমানদের আচরণ ও দাওয়াতের পন্থা কেমন হবে, আহলে কিতাবের ব্যাপারে ইসলাম ও মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গি কী ধরনের হবে- এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।

লেখক:মাওলানা রাশেদুর রহমান ।। পেশ ইমাম ও খতীব, কেন্দ্রীয় মসজিদ, বুয়েট

Series Navigation<< সাহায্য চাইব কেবল তাঁরই কাছে – তারাবীহ ১ম পাঠপ্রকৃত সফলতা হল জান্নাতে দাখিল হতে পারা – তারাবীহ ৩য় পাঠ >>

Archives

March 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031