বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কারবালার ঘৃণ্য খুনি শিয়াদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নাম কথিত “মর্সিয়া মাতম” – লুৎফর ফরায়েজী

প্রথমে একটি বক্তব্য পড়ুন। আমাদের কিতাব থেকে নয়। শিয়াদের কিতাব থেকে। বইটার নাম “শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস”। যার লেখক হলেন শেইখ আব্বাস কুম্মি। প্রকাশক ওয়াইজম্যান পাবলিকেশন্স। সহযোগিতায়ঃ কালচারাল কাুউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র, ইরান।

তাহলে পরিস্কার। বইটি শিয়াদের। ইরানী কালচারাল সেন্টারের সহযোগিতায় বের হওয়া বই।

Default Ad Content Here

এবার পড়ুন উক্ত বইয়ের প্রথম খন্ডের ৬১ পৃষ্ঠার বক্তব্যঃ

“ইমামের শিয়ারা (অনুসারীরা) সুলাইমান বিন সুরাদ খুযাঈর বাড়িতে জড়ো হলো মুয়াবিয়ার মৃত্যু নিয়ে আলোচনা করতে, এবং আল্লাহর প্রশংসা এবং তাসবীহ করতে। সুলাইন উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন “মুয়াবিয়ার মৃত্যু হয়েছে এবং ইমাম হোসেইন (আ.) ইয়াযীদের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে অস্বীকার করেছেন ও মক্কায় চলে গিয়েছেন। তোমরা তার ও তার বাবার শিয়া (অনুসারী)। তাই যদি তোমারা তাকে সাহায্য করতে চাও ও তার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাও তাকে চিঠি লিখো এবং তাকে এ বিষয়ে জানাও। কিন্তু যদি তোমরা ভয় পাও যে তোমরা ঢিলেমী করবে এবং পিছু হটবে তাহলে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না (তাকে এখানে আমন্ত্রণ জানিয়ে)।” প্রত্যেকেই ঐক্যবদ্ধভাবে শপথ করলো যে তারা তাকে সাহায্য করবে এবং তার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তার আদেশে এবং তাদের জীবনকে এগিয়ে দিবে কোরবান করতে। যখন সুলাইমান তা শুনলেন তিনি তাদেরকে আহবান জানালেন ইমামকে চিঠি লেখার জন্য তারা লিখলো।” [শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস-১/৬১]

এখানে পরিস্কার যে, শিয়ারা পরামর্শ করে হযরত হুসাইন রাঃ কে কুফায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তারাই চিঠি লিখেছে। তারা হযরত হুসাইনকে রেখে পালাবে না, বিশ্বাসঘাতকতা করবে না বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।

এবার আমরা হাকীকতে হাল দেখি!

হযরত হুসাইন রাঃ কুফাবাসীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেনঃ

“হে জনতা, তোমরা যেন ধ্বংস হও, দুর্দশাগ্রস্ত হও। তোমরা উৎসাহের সাথে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলে তোমাদের সাহায্য করার জন্য এবং আমরা তা করার জন্য দ্রুত অগ্রসর হয়েছি। কিন্তু তোমরা এখন সে তরবারিগুলো কোষমুক্ত করেছো যা আমরা তোমাদের দিয়েছি এবং তোমরা আমাদের জন্য আগুন জ্বালিয়েছো যা আমরা তোমাদের ও আমাদের শত্রুদের জন্য জ্বালিয়েছিলাম। তোমরা তোমাদের শত্রুদের পক্ষ নিয়েছো এবং তাদের সাথে থেকে তোমাদের বন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অগ্রসর হয়েছো, যদিও তারা তোমাদের সাথে ন্যায়পরায়ণ আচরণ করে নি, না তোমরা তাদের কাছ থেকে কোন দয়া ও সদয় আচরণ আশা কর। তোমাদের উপর শত দুর্ভোগ আসুক। তোমরা আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো। [শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস-১/১৯৯-২০০]

শিয়াদের মুজাদ্দিদ মোল্লা বাকের মাজলিসির গ্রন্থ বিহারুল আনোয়ার ২য় খন্ডের ১২ পৃষ্ঠা থেকে ১৭ নং পৃষ্ঠায় এসেছে হযরত জয়নব বিনতে আলী রাঃ, হযরত উম্মে কুলসুম বিনতে আলী রাঃ এর খুতবা, হযরত জায়নুল আবেদীন রাঃ এর খুতবা পড়ে দেখুন। সেখানে কি পরিস্কার ভাষায় তারা বলছেন-

হে কুফাবাসী! তোমরা আমাদের ডেকেছো, আর তোমরাই আমাদের হত্যা করেছো। তোমরাই মুসলিম বিন আকীলকে হত্যা করেছো। তোমরা এখন কান্নাকাটির ঢং করছো। অথচ তোমরাই আমাদের হত্যা করলে। নবী পরিবারকে ধ্বংস করলে। হাশরের ময়দানে আমাদের নানার কাছে কি জবাব দিবে? {বিহারুল আনোয়ার, লেখক শিয়া মোল্লা বাকের মাজলিসী, ২য় খন্ড-১২-১৭, শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস-২/১৯-২১]

তৎকালিন কুফা কাদের আস্তানা ছিল? কারা হযরত হুসাইন রাঃ কে ডেকে এনেছিল? যাদের এলাকা। যাদের বাড়ি তারাই দাওয়াত দিয়ে হত্যা করেছে একথা আমাদের কথা নয় কারবালার প্রান্তরে রক্তাক্ত হওয়া জখমীদের বক্তব্য। আহত হওয়া ব্যক্তিদের বক্তব্য। তাও শিয়াদের লিখিত গ্রন্থে উদ্ধৃত বক্তব্য।

তারপরও কি বলবেন আমরা মিথ্যা বলছি? তারপরও বলবেন আমরা অপবাদ দিচ্ছি?

শিয়াদের লিখিত গ্রন্থ, কারবালার আহতদের স্বীকারোক্তি, তাদের খুতবা প্রমাণ করছে শিয়ারাই হযরত হুসাইন রাঃ এর হত্যাকারী। শিয়ারাই হযরত হুসাইন রাঃ এর কতলকারী। তারাই ষড়যন্ত্রকারী।

আর আজকে সারা পৃথিবীর মানুষকে উল্লু বানিয়ে তারাই আহলে বাইতের মোহাব্বতের নাটক করে বেড়াচ্ছে। পৃথিবীর বুকে এর চেয়ে বড় ধোঁকাবাজী, এর চেয়ে বড় বাটপারী এর চেয়ে হঠকারী কান্ড আর নির্মম রসিকতা আর হচ্ছে কি না? তা আমাদের জানা নেই।

শিয়ারা কারবালা প্রান্তর রক্তাক্ত করার পর, ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকান্ড চালানোর পর মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য সাজিয়েছে মাতমের নাটক। প্রতি বছর বুক চাপড়ে চাপড়ে সেই হত্যাকান্ডের প্রায়শ্চিত্ব করে বেড়াচ্ছে। কিয়ামত পর্যন্ত নিজেকে জখমী করে যাবে আর মৃত্যুর পরতো জাহান্নামের আজাব তাদের জন্য অপেক্ষা করছেই ইনশাআল্লাহ।
শিয়াদের কথিত মর্সিয়া, তাদের মাতম এটি নাটক। এটি ড্রামা। কিন্তু তারপরও আঘাতগুলো প্রতিকী হলেও এটাই তাদের শাস্তি। এটাই তাদের আজাব। মৃত্যু পর্যন্তের আজাব। আর মৃত্যু থেকে হাশর। হাশর থেকে জাহান্নাম পর্যন্ত এ আজাবেই তারা গ্রেফতার থাকবে ইনশাআল্লাহ। এটাই তাদের শাস্তি। আহলে বাইতের খুনীদের শাস্তি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

আহলে বাইতের খুনী, কারবালার নির্মম ঘটনার হোতা শিয়া কাফেরদের চক্রান্ত থেকে আল্লাহ তা’আলা আমাদের মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। আমীন।

Archives

December 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031