শুক্রবার, ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

চরমোনাইয়ের দুই নতুন সাহেবজাদার গল্প , যা আপনাকে বিস্মিত করবে

সাহেবজাদা ভূবনে বিরল সাহেবজাদাদের গল্প

সালাহুদ্দীন মাসউদ

Default Ad Content Here

বাবা একজন বিশ্ববিখ্যাত আলেম। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁকে রাহবার হিসেবে মেনে চলেন।
বংশীয় জমিদার এবং বর্তমান সময়ে বিত্ত বৈভবের অভাব নেই।
এই সমাজে এমন একজন পিতার সন্তানের কী অবস্থা হতে পারে?
স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিবারের সন্তানেরা ছোটকাল থেকেই খুব আমলওয়ালা হয় না বলেই আমরা জানি।

সেই পরিবেশে এমন চরিত্র বিরল যে, পিতা ওয়াজ করছেন আর সন্তান বসে বসে শুনছে এবং অঝোর ধারায় কেঁদে চলেছে।
এমন চরিত্র আর ঘটনা আজ বিরল।
ছবিতে দুইজন তরুণকে দেখছেন। ১৫/১৬ বছর বয়সের হবে।
এই বয়সের শাহজাদারা স্বাভাবিকভাবে যেমন হয়ে থাকে, এরা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।
প্রথমজন পীর সাহেব চরমোনাই সৈয়দ মাওলানা রেজাউল করিম সাহেবের বড় সাহেবজাদা মুহাম্মাদ আবরার। আর দ্বিতীয়জন নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করিম সাহেবের সাহেবজাদা মুজাহিদ।
চরমোনাই মাহফিলের বয়ানের সময় আমি তাদেরকে কাছ থেকে দেখেছি এবং বিস্মিত হয়েছি।
সেদিন বয়ান করছিলেন মুফতী ফয়জুল করিম সাহেব।
অত্যন্ত সহজ সরল দুই তরুণ আবরার এবং মুজাহিদ অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে হযরতের বয়ান শুনছিলো এবং অন্যান্য শ্রোতাদের মতো অবিরত কেঁদে চলেছিল।
শাহজাদা ভূবনে বিরল এই ঘটনা আমার ভেতরে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে।
বড় বড় হযরতদের সাহেবজাদারা তাদের বাবার বয়ানে বসে এবং মনযোগ সহকারে শুনে চোখের পানি ঝরায়, এমন ঘটনা কি আজকাল কল্পনা করা যায়?
চোখের পানি মুছে আমি ছবি দুটো ধারণ করি।
আমি বিস্মিত।
পরে পীর সাহেব হুজুরের পরিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানলাম, ওদেরকে এভাবেই তরবিয়্যত দেয়া হয়ে থাকে। ছোট থেকেই পীর সাহেবগণ সন্তানদের লালন-পালনে অত্যন্ত যত্নশীল।
পড়াশোনায় তারা অনেক ভালো। পড়াশোনা আর আমল তাদেন প্রধানতম ব্যস্ততা।
এই যুগে সাহেবজাদাদের এমন ঘটনা সত্যিই বিরল।
আরেকটি দৃশ্য দেখে আমার বিস্ময় তুঙ্গে উঠলো।
পীর সাহেব হুজুরের ছেলে আবরারের গায়ের জুব্বায় দুই দুইটি জায়গায় ছেড়া।
পরে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ছেড়া জুব্বা পড়ো কেন?
লাজুক চেহারায় স্বল্প কথায় জানালো, চলছে তো।
অতো বেশি কাপড়ের তো প্রয়োজন হয় না।

Image may contain: 2 people
বিস্ময়ের ঘোরে আমি ভন ভন করে ঘুরতে আরম্ভ করলাম। বলে কীরে?
বাপ-দাদার সম্পত্তি আর টাকা পয়সার অভাব নেই। চাইলেই অনেক দামি দামি কাপড় পরিধান করতে পারে। দুনিয়ার চাচচিক্যের প্রতি কোনো আকর্ষণ নেই।

ভেবে দেখলাম, মরহুম পীর সাহেব হুজুর তার সন্তানদেরকে এভাবেই মানুষ করেছেন বলে আজ তাঁর সন্তানেরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাবার রেখে যাওয়া মিশনকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
পীর সাহেব হুজুরদের সকল ভাইদের মধ্যে অন্যরকম একতা আর মিল মুহাব্বত।
শত ব্যস্ততার মধ্যেও তারা যখন বাড়িতে থাকেন, সব ভাই এবং সবার ছেলে সন্তানরা এক সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া করেন। খোশ গল্প করেন।
বাংলাদেশে কোনো বড় আলেমের রেখে যাওয়া সন্তানদের মধ্যে এবং তাদেন সন্তানদের মধ্যে এতোটা একতা আছে বলে আমার জানা নেই।
তাদেন নিষ্ঠা, সততা আর একতার কারণে চরমোনাইয়ের মেহনত দেশজুড়ে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে।
কাজের এই ধারাবাহিকতা আরো কতোটা উচ্চশিখরে গিয়ে পৌঁছে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

Archives

February 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728