বৃহস্পতিবার, ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

দোয়া কবুলের মুহূর্তগুলো

দোয়া স্বতন্ত্র একটি ইবাদত। আল্লাহর কাছে মানুষ যত চাইবে আল্লাহ তত দেবেন। আল্লাহ চান বান্দা প্রতিটি বিষয়ে তার কাছে প্রার্থনা করুক। বান্দা যত চায় আল্লাহ তাতে তত খুশি হন। তবে দোয়া কবুলের জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও আদব আছে। নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে দোয়া করলে আশা করা যায় আল্লাহ তা কবুল করবেন। দোয়া কবুলের জন্য দিনরাতের মাঝে এমন অনেক সময় ও মুহূর্ত রেখেছেন, যে সময় দোয়া করলে তা কবুল হয় বলে হাদিসে বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে। দোয়া কবুলের কয়েকটি মুহূর্তের কথা এখানে আলোচনা করা হলো:

রাতের শেষ তৃতীয়াংশের দোয়া

Default Ad Content Here

প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশেই দোয়া কবুল করা হয়। শুধু শবেবরাত ও শবেকদরে নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহতায়ালা সবচেয়ে নিচের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেবো। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। (মুসলিম)

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (তিরমিজি)

জুমার দিনের দোয়া

জুমার দিন এমন অসাধারণ একটি নেয়ামতের সময় আছে, যে সময়টাতে দোয়া কবুল হওয়ার বিশুদ্ধ বর্ণনা রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে এসেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের একদিন শুক্রবার নিয়ে আলোচনা করলেন এবং বললেন, ‘জুমার দিনে একটি সময় আছে, যে সময়টা কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় পায় এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা মেটাবেন এবং তিনি (রাসূল সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সে সময়টা সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি)

জমজমের পানি পান করার সময়ের দোয়া

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হবে, তা কবুল হবে।’ (ইবনে মাজাহ)

সেজদার সময়ের দোয়া

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটতম অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদার সময়। সুতরাং তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও।’ (মুসলিম)

রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগার পরের দোয়া

সাহাবি হজরত উবাদা বিন সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ এবং এরপর বলে, ‘আল্লাহুম মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) অথবা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তাহলে তার দোয়া কবুল করা হবে এবং সে যদি অজু করে নামাজ আদায় করে, তাহলে তার নামাজ কবুল করা হবে।’ (বুখারি)

ফরজ নামাজের পরের দোয়া

সাহাবি হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বললেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পরে।’ (তিরমিজি)

বৃষ্টি ও আজানের সময়কার দোয়া

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া আর বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া।’ (আবু দাউদ)

এছাড়াও কদরের রাতের দোয়া, নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া, সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, বিশেষ করে ইফতারের সময়কার দোয়া, অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর থেকে উৎসারিত দোয়া, জিহাদের মাঠে শত্রুর মুখোমুখি দোয়া, আরাফার (হজের দিন) দিনের দোয়া, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার পর সেই ব্যক্তির দোয়া কবুল হয় বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।

Archives

March 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031