মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
বাংলাদেশের প্রায় ৩০ টা মেডিকেল কলেজের কমবেশি অর্ধলক্ষ ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমিপে এই লেখাটা।
রোহিঙ্গা মুহাজিরদের খেদমতের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন লেখাটা আজকে শেয়ার করছি। আশা করছি যাদের জন্য লেখাটা তাদের কাছে ফেসবুকের মাধ্যমেই পৌছাবে। এবং এটা সম্ভব বলেই বিশ্বাস করি যদি ফ্রেন্ড-ফলোয়ার লিষ্টের প্রায় ২০,০০০/- আইডির এক দশমাংশও প্রচেষ্টা করে!!
.
প্রথমে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন একটা পয়েন্ট বলে নেই,
…. বাংলাদেশের যে কোন যায়গা থেকে যে কোন মেডিকেল টিম কক্সবাজার আসার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা দেয়ার পুরো সময়টাতে তাদের থাকা খাওয়া এবং প্রতিদিন বিভিন্ন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আসা পর্যন্ত সকল খরচ “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের” ত্রাণ টিম বহন করবে।
.
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ত্রানের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি, এটা সত্য; কিন্তু তারচেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ন কাজ হলো, এই মুহুর্তে মেডিকেল ক্যাম্প!
প্রতিটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অসংখ্য মেডিকেল ক্যাম্পের কতটা যে জরুরত তা যারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ঘুরেছে তারা বেশ ভালোই বলতে পারবে। প্রতিটা ক্যাম্পে অসুস্থ শরণার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত হারে বিশেষ করে নারী এবং শিশুদের অবস্থা অনেক বেশি করুণ। সেনাবাহিনী এবং কিছু সংগঠন পর্যাপ্ত সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু সেটা প্রয়োজনের মাত্র ২% ও পুরা করতে পারছে না এটাই সত্য।
আমি ব্যাক্তিগত অনুসন্ধানে একটা জরিপ দিচ্ছি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কে!
.
• প্রতি ১০০ পরিবারের সবার সাথে ১০ বছরের নিচে বাচ্চা রয়েছে।
• প্রতি ১০০ বিবাহিতা মহিলার মধ্যে কমপক্ষে ৮০ এর অধিক মহিলা প্রেগনেন্ট।
• প্রতি ১০০ প্রেগনেন্ট মহিলার মধ্যে ৯০ এর অধিক জনের সাথে আরো কমপক্ষে চারটা বাচ্চা আছে ৬ বছরের মধ্যে।
• প্রতি ১০০ প্রেগনেন্ট মহিলার মধ্যে ৭০ জন পেটে বাচ্চা নিয়ে প্রায় ৭০/৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত হেটেছে।
• প্রতি ১০০ বাচ্চার মধ্যে ৯৮ জন অপুষ্টিতে ভুগছে। সাথে ডায়েরিয়া, কলেরা, জ্বরসহ অনেক ধরনের অসুস্থতা রয়েছে তাদের। রোদে শুকিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে বাচ্চাদের অবস্থা অনেক করুণ।
• অবিবাহিত প্রতি ১০০ মেয়ের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ জন ধর্ষীতা। যাদের অনেকেরই ব্লাড ইনজুরি পর্যন্ত আছে সংবেদনশীল অঙ্গে। এ ছাড়াও তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন।
• প্রতি একশ শরণার্থীদের মধ্যে ৮০ জন কোন না কোন ভাবে অসুস্থ।
• প্রতি ১০০ জন অসুস্থ ব্যাক্তির মধ্যে ২ জনের কাছেও চিকিৎসা সেবা পৌছায়নি অথচ ত্রাণ পৌছেছে কমপক্ষে ৯৭ জনের কাছে। এবং নিয়মিত কোন না কোনভাবে ত্রাণ পাচ্ছে প্রায় ৭০ জনে
তাই, এই মুহুর্তে প্রচুর মেডিকেল ক্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা সম্ভবত আর বুঝানোর দরকার নেই।
..
মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং টিচাররা যদি একটু আন্তরিক হয় তবে সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। এখানে কেবল পুরুষ ডাক্তার দিয়ে কিছু হবে না বরং প্রচুর মহিলা ডাক্তারেরও প্রয়োজন। ডাক্তার না হলেও প্রসূতিতে অভিজ্ঞ যে কোন মেয়ে বা মহিলারাই অংশগ্রহন করা উচিত। সেক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজগুলোই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।
.
★ কাজের ক্ষেত্রে প্রস্তাবণা।
… যেহেতু রোহিঙ্গাদের অবস্থান কক্সবাজারে তাই মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট টিচাররা মিলে টিম টিম করে কক্সবাজারে ট্যূরে আসতে পারে। যেখানে পাঁচ ছয়দিনের সময় নির্ধারন করে দু একদিন ট্যূরের জন্য রেখে বাকি সময়গুলো যে কোন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা দেয়া যেতে পারে। (চিকিৎসা সেবা দেয়ার সময়টাতে তাদের থাকা খাওয়া এবং সার্বিক দিকের বিষয়টা প্রথমেই উল্যেখ করেছি) বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে সমন্বয় করে ভাগ করে করে টিম এলে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে কাজটা। তাহলে লেখাপড়ারও ক্ষতি হবে না তেমন আবার কাজও হবে অনেক সুন্দর ভাবে।
.
★ মেডিকেল ক্যাম্পে কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা।
… বিভিন্ন সংগঠনই বর্তমানে সেনাবাহিনীর অনুমতিক্রমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটা সংগঠনই যে কোন টিমকে আন্তরিকতার সাথে সাহায্য সহযোগীতা এবং নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায়ই রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ”র ত্রাণ টিম। এই টিম যে কোন মেডিকেল গ্রুপকে পুর্ন সহায়তা এবং নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সে ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলনের ত্রাণ সমন্বয় কমিটির প্রধান দেলোয়ার সাকী সাহেবের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যেতে পারে।
যোগাযোগের নাম্বার:-
মুফতী Delower Saki সাহেব।
মোবাইল নং:
+8801787741898
+8801819855109
এছাড়াও ইনফরমেশন বেসিক তথ্যের জন্য নিচের ফোন নাম্বারটাতে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
+8801719733288
..
পরিশিষ্ট:-
ডাক্তাররা হলো সমাজে মানুষকে রক্ষার জন্য প্রভুর উসিলা.. ডাক্তাররা সমাজের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপুর্ন গোষ্টি। তাই তারা এই সংকটে এগিয়ে আসাটা মানবিকতার দায় থেকেই জরুরি।