বৃহস্পতিবার, ২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
পরকীয়ার আরেক মাধ্যম শিশুদের প্রাইভেট স্কুল-কিন্ডারগার্ডেন!
আলী আজম
———————
স্পর্শকাতর একটি বিষয় নিয়ে কলম ধরছি। কে কীভাবে নিবেন জানিনা। তবে কাউকে ছোট করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং বাস্তবতার নিরিখে লিখছি। সমাজে দেশে আজ পরকীয়া মহামারী আকার ধারণ করেছে। সংবাদ মাধ্যম পত্রপত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পাতায় প্রায়-ই নিউজ পাওয়া যায়,
-অমুক প্রবাসীর স্ত্রী অমুকের সাথে পালিয়ে গেছে।
-দুই সন্তানের ‘মা’ পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে নিজ স্বামী-সন্তান ত্যাগ পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে গেছে। ইত্যাদি…….
.
পরকীয়া এবং স্বামী-সন্তান ত্যাগ করে পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বছর পাঁচেক পূর্বে তেমন একটা দেখা না গেলেও সম্প্রতি খুব বেশি শোনা যাচ্ছে। বরং বাড়ছে। এমনকি এখন ধীরেধীরে পরকীয়াটা স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিচ্ছে। এবং এর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো। বিশেষ করে ‘স্টার জলসা’ ‘জী বাংলা’ সহ এজাতীয় বিনোদনধর্মী চ্যানেলের অনুষ্ঠানগুলো দেখেদেখে নারীসমাজ মারাত্মক নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে। সমাজে দেশে অনৈতিকতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
.
পরকীয়ার ঘটনা আগে সচরাচর প্রবাসীদের স্ত্রীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। এবং এর পিছনে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের অবদান উল্লেখযোগ্য। এদেশের নারীসমাজের নৈতিক অবক্ষয় রুখতে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করা সময়ের অপরিহার্য দাবী। আমাদের নিজস্ব সভ্যতা সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংস করতে ভারত থেকে আমদানিকৃত স্যাটেলাইট মিডিয়াগুলো উঠেপড়ে লেগেছে! এ যেন তাদের মিশন! এ অধঃপতন রোধে আমাদেরকে আরো সচেতন হওয়া বাধ্যতামূলক।
.
যদি এখনো নীতি নৈতিকতা সংস্কৃতি সভ্যতা বিধ্বংসী ভিনদেশী চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা না যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি স্বকীয়তা, যুবসম্প্রদায় ও নারীসমাজকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আমরা ক্রমশ ভয়াবহ সাংস্কৃতিক যুদ্ধের সম্মুখীন হতে যাচ্ছি। এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে। না হয় আমাদের উপর ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। আগামী প্রজন্ম নিজেদের নীতি আদর্শ ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নমুনা দেখতে জাদুগরে যাবে।
—
যে বিষয়টি নিয়ে মূলত আমি আলোচনা করতে চাচ্ছিলাম তা হলো, পরকীয়ার আরেক মাধ্যম শিশুদের প্রাইভেট স্কুল ও কিন্ডারগার্ডেনগুলো। আপনি একটু চোখ বোলালে দেখবেন কচিকাঁচা শিশুদেরকে তাদের মা-বাবারা নিজ হাতে ধরে প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে, আবার ছুটি হলে নিয়ে আসছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশুদের ক্লাস চলাকালীন সময়গুলোতে তাদের গার্ডিয়ানরা স্কুলের ওয়েটিংরুমে বসে অপেক্ষা করছে। অথবা এই ফাঁকে তারা মার্কেট শপিংমলে বেপরোয়া ঘোরাফেরা করছে। এবং এই সুযোগে ঘটছে পরকীয়ার মত জঘন্য ঘটনা। যা লোকসমাজের অন্তরায় থেকে যাচ্ছে।
.
যখন এই ছোট্টছোট্ট শিশুদেরকে তাদের মা’রা হাতে ধরে স্কুলে নিয়ে যায় তখন বুঝা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায় যে, আসলে স্কুলে কে যাচ্ছে? সন্তান? নাকি মা? আমার কথা বিশ্বাস না হলে প্রাইভেট স্কুলগুলোর সামনের দৃশ্যগুলো নিজ চোখে দেখুন। কচিকাঁচা ছাত্রদের ইয়া বড়ো ব্যাগ ‘মা’র হাতে কিংবা পিঠে। ছাত্রের হাতে কিংবা পিঠে নয়। দৃশ্যত মা’কেই স্টুডেন্ট মনে হয়, সন্তানকে নয়। কারণ মা’দের সেইসময়কার হাটার স্টাইল, শরীরের বাচনভঙ্গি, মেকআপ, কাপড়চোপড় সবকিছু ভিন্ন রূপ ধারণ করে। তবে এসব অভিযোগ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কিছুকিছু…
.
বিবাহবিচ্ছেদ, পরকীয়া, সংসারে অশান্তি রোধে আমাদেরকে আরো সচেতন হওয়া জরুরী। নিজ স্ত্রী, কন্যাসন্তানদের দিকে সুদৃষ্টি দেওয়া অত্যাবশ্যক। তাদের হাতে সংসারে সবকিছু ছেড়ে দেওয়া বোকামি বৈ কিছু নয়। জাযাকুমুল্লাহ…