শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মুফতী আরিফ খান সা‘দ
শিক্ষক: আল-জামি‘আতুল ইসলামিয়া দারুল ইন‘আম।
মিকাঈল নগর, কেরানীগঞ্জ।
————————-
— এই ধারাবাহিক আয়োজনে আমাদের তরুন প্রজন্মের প্রতিশ্রুতিশীল, উদীয়মান, সম্ভাবনাময় প্রতিনিধিদেরকে ধরার চেষ্টা করবো।
— এই ধারাবাহিকে যে কেউ চাইলে অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে, উপযুক্ত কারো কাছে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করে, উত্তর নিয়ে পোস্ট করলেই হবে।
— শুধু একটা বিষয় খেয়াল করলেই চলবে: যার সাক্ষাৎকার নেয়া হবে, তার বই পড়ার অভ্যেস থাকতে হবে। এটাই হোক আমাদের বাছাইয়ের মূলভিত্তি।
— অথবা পাঠমনস্ক নন, কিন্তু কর্মজীবনে কর্মঠ ও সৃজনশীল এমন হলেও চলবে।
.
তাহলে শুরু করা যাক। প্রথমবার একটু আগোছালো হয়ে গেলো। আরও অনেক প্রশ্ন বাকী থেকে গেল। আস্তে আস্তে সংযোজিত হবে ইনশাআল্লাহ।
.
এছাড়া অন্য কারও মনে কোনও প্রশ্নের উদয় হলে, কমেন্টে জানালে খুশি হবো। সামনের সাক্ষাৎকারগুলোতে প্রশ্নগুলো বাড়িয়ে নেব। ইনশাআল্লাহ।
.
— তাহলে আমরা শুরু করি:
———————————–
১. লেখালেখির সূচনা কবে থেকে?
: শৈশব ও কৈশোরের মাঝামাঝি কোনো এক সময় থেকে। খুব অল্প বয়স থেকে বই পড়া শুরু করেছি। অবচেতনভাবেই সেসময় আঁকাআঁকি ও লেখালেখির অভ্যাস তৈরী হয়েছে। তবে সচেতনভাবে শুরু হয়েছে কিতাবখানায় প্রথম বর্ষে পড়াকালীন। সেটা ২০০৫ সালের কথা।
–
২. নিয়মিত লেখালেখি করেন?
: নিয়মিত লেখার চেষ্টা করি। অলসতা পেয়ে বসলে কলমের গতি থেমেও যায়।
–
৩. লেখালেখির ক্ষেত্রে কার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ পেয়েছেন?
: প্রিয় শিক্ষক আব্দুস সাত্তার আইনী, খন্দকার মনসুর আহমেদ শরীয়তপুরী, ইরশাদুল হক, শিশু একাডেমীর ফারুক নওয়াজ, মাকতাবাতুল ইসলামের তাকী হাসান প্রমুখ ও প্রিয় সহপাঠীবৃন্দ। সর্বোপরি আমার স্বপ্নপুরুষ মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ (আদীব হুজুর)। তার লেখা পড়েই শৈশবে বেশি আলোড়িত হয়েছি।
–
৪. লেখালেখির ক্ষেত্রে আপনার প্রেরণা ও আদর্শ কে?
: মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ (আদীব হুজুর) তার পুষ্পসমগ্র দুই খণ্ড যে কোনো নবীন ও নবিসের জন্য অনন্য আশ্রয়, অনুপম আদর্শ।
–
৫. কোন সময় লিখতে ভালোবাসেন?
: ভোর রাত্রে ও ফজরের পরে।
–
৬. প্রথম লেখা প্রকাশ কবে, কোথায়?
: শিশু একাডেমী থেকে প্রকাশিত মাসিক শিশু, ২০০৫ সালের মার্চ মাসের সংখ্যায়।
–
৭. এখন কী লিখছেন?
: আরবিজাত বাংলা শব্দের উৎস অভিধান, মাকামাতে হারীরীর ব্যাখ্যা ও একটি উর্দু বইয়ের অনুবাদ।
–
৮. প্রিয় মুহূর্ত?
: শেষ রাত ও ভোরবেলা।
–
৯. প্রিয় স্থান?
: নির্জন প্রাকৃতিক স্থান ও বুজুর্গদের মজলিস।
–
১০. প্রিয় পর্যটন স্থান?
: সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ। (খৃস্টান ধর্মযাজক সেন্ট মার্টিনের দ্বীপ, কেনো? বুঝি নি। বলতে চাই নারিকেল জিঞ্জিরা। দারুচিনিও নয়।)
–
১১. স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
: স্বপ্ন তো অসংখ্য অগণন, তবে অন্যতম স্বপ্ন পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করা। পরিকল্পনাও বেশুমার, মোটা দাগে বলতে গেলে একটি মৌলিক বাংলা ব্যাকরণ রচনা, একটি স্বতন্ত্র বাংলা অভিধান প্রণয়ন ও ফিকহুস সুনানের উপর একটি পূর্ণাঙ্গ মাজমূ’আহ তৈরি করা। ওয়াফফাকানাল্লাহু ওয়া ইয়্যাকুম।
–
১২. প্রিয় রং?
: সবুজ
–
১৩. প্রিয় পাখি?
: কবুতর
–
১৪. প্রিয় ফুল?
: হাসনাহেনা
–
১৫. প্রিয় খাবার?
: মাংস দিয়ে চালের রুটি, সামুদ্রিক চিংড়ি ও নুডলস।
–
১৬. প্রিয় কবি?
: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও ফররুখ আহমেদ।
–
১৭. প্রিয় কবিতা?
: “আমরা এক কাফেলা”
–
১৮. প্রিয় মাদরাসা?
: বাইতুসসালাম ও হাটহাজারী
–
১৯. প্রিয় মানুষ?
: আম্মু-আব্বু
–
২০. প্রিয় ব্যক্তিত্ব?
: মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
–
২১. প্রিয় লেখক?
: মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ ও হুমায়ুন আহমেদ।
–
২২. প্রিয় ফেসবুক লেখক?
: মাওলানা আতিকুল্লাহ সাহেব ও রাইহান খাইরুল্লাহ।
–
২৩. সর্বাধিক পঠিত বই?
: বাইতুল্লাহর মুসাফির, আলোর পরশ। আরো অনেক আছে।
–
২৪. এখন কী পড়ছেন?
: “বাংলাভাষা: কয়েকটি প্রসঙ্গ”, মাহবুবুল হক। “আমার অবিশ্বাস”, হুমায়ূন আজাদ। মাজমূ’আয়ে রাসায়েলে ফয়জিয়া, জিলদে সুওম।
–
২৫. প্রিয় কয়েকটি বইয়ের নাম বলুন
: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ। হুমায়ুন আহমেদের গল্পসমগ্র, ভ্রমণসমগ্র ও আত্মজীবনী। আদীব হুজুরের পুষ্পসমগ্র ও বাইতুল্লাহর মুসাফির। উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভ্রমণসমগ্র। মুস্তাফা লুতফী আলমানফালূতীর আল’আবারাত। ইবনে মুকাফফার কালিলা ওয়া দিমনা। খুতুবাতে আলী মিয়াঁ। হেনরি রাইডার হেগার্ডের শী। গীতাঞ্জলী। সঞ্চিতা।
–
২৬. কোন বইটি পড়ে সম্মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন?
: শামসুর রহমানের “স্মৃতির শহর”, বিনয় মুখোপাধ্যায়ের “দৃষ্টিপাত”, বুলবুল সরওয়ারের “ঝিলাম নদীর দেশ”, আবু তাহের মিসবাহর “বাইতুল্লাহর মুসাফির” ও এম এ হাশেমের “আলোর পরশ” প্রভৃতি।
–
২৭. কোন বইয়ের ছেলে চরিত্রকে দেখে মনে হয়েছে- ইস, আমি যদি এমন হতাম!
: ঈমানদীপ্ত দাস্তানে সালাহউদ্দীন আইয়ূবী রহ., রবিনসন ক্রুসো
–
২৮. কোন বইয়ের কোন মেয়ে চরিত্রকে দেখে মনে হয়েছে- ইস, আমার যদি এমন কেউ হতো!!
: দুর্ভাগ্য, এমন বই পড়ার তাওফিক এখনো হয় নি!
–
২৯. জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত কোনটি?
: খুব কম নেই। অনেকরকম স্মরণীয় মুহূর্ত আছে। সবগুলোই বলতে ইচ্ছে হয়।এখানে একটি বলি। দাওরায়ে হাদীস শেষে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে বিদায়ের মুহূর্ত। ওখানকার ছাত্র শিক্ষক ভবন গাছ ফুল বাতাস পরিবেশ সবকিছুর সাথেই কেমন সত্ত্বা শরীর ও নাড়ির বন্ধন গড়ে উঠেছে। রাতে এশার পর হাটহাজারী মাদরাসার বাগানের গেটের সামনে অপেক্ষমাণ ঢাকাগামী গাড়িতে উঠিয়ে দিলো জনা ত্রিশেকের বেশি স্থানীয় ও অন্যান্য এলাকার ছেলেরা। সবাই কোলাকোলি ও মুসাফাহা করে বিদায় দিলো। গাড়ি ছেড়ে দিলে দেখি অনেকেই দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে। দৌড়ে কয়েকজন জানালা দিয়ে কিছু চিঠি ধরিয়ে দিলো। কম্পোজ করা ও হাতে লেখা দুই রকমই আছে। বিষয়বস্তু “বিদায়”। বেশি পড়া সম্ভব হলো না। রাতের আঁধার ভেঙে বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলা গাড়ির জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি কিছু তারা জ্বলছে, চোখের পাঁপড়িতে জমে ওঠা ফোঁটা ফোঁটা শিশিরজলেও ঝিলমিল করে তারাগুলো জ্বলছে। বুকের ভিতর কেমন হু হু বাতাস।
–
৩০. জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা কী?
: ২০০৮ সালে আব্বু হজ থেকে ফেরার সময় আমি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কীভাবে যেনো পকেট থেকে মানিব্যাগ পড়ে গিয়েছিলো। মানিব্যাগে আমার পুরো মাসের হাতখরচ ছাড়াও পরিচিত এক মাদরাসার শিক্ষকের কার্ড ও এক বন্ধুর দোকানের কার্ড ছিলো। এক ব্যক্তি সেটি পেয়ে প্রায় দুই মাস মানিব্যাগের মালিককে অনেকভাবে কষ্ট করে খুঁজে বের করে তাকে ফেরত দিয়েছিলো। জাযাহুল্লাহু আহসানাল জাযা। এমন ঘটনা আরো বেশ কয়েকবার হয়েছে আমার।
–
৩১. জীবনের সবচেয়ে মজার ঘটনা কোনটা?
: অনেকগুলো আছে। এখানে একটি বলি। শিক্ষকজীবন শুরু হওয়ার পরের ঘটনা। আমাদের মাদরাসার মারকায (বেফাক পরীক্ষার) হলো মুহাম্মদপুর সাতমসজিদের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া। প্রত্যেক মাদরাসার বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত মারকাযে পাঠানো হয়। আমাদের মাদরাসার ছেলেদের ফলাফল আনার জন্য আমাকে জিম্মাদারি দেওয়া হলো। দায়িত্বশীল শিক্ষকের কামরায় তিনিসহ আরো কিছু শিক্ষক ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো কারণে রুম থেকে ছাত্রদের বের করে দেওয়া হচ্ছে তখন। আমাকেও একরকম বের করে দেওয়া হলো, ছাত্র মনে করে। দ্বিতীয়বার প্রবেশ করে শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পর সম্ভবত ধন্ধে পড়ে গেলেন। পুনরায় সবাই জিজ্ঞাস করলেন ছাত্র না শিক্ষক। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মেনে নিলেন হয়তোবা। ঘটনাটি তখন খুব হাসিয়েছিলো। এরকম ঘটনা আরো বেশ কয়েকবার ঘটেছে।
–
৩২. জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা?।
: বই ধার দিয়ে ফেরত না পাওয়া এবং অন্যায় অপবাদ চাপিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়া।
–
৩৩. দৈনিক কুরআন তেলাওয়াত করা হয়?
: হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ! চেষ্টা করি বুঝে বুঝে অনুভব করে তেলাওয়াত করতে। দুর্ভাগ্যক্রমে মাঝেমধ্যে বাদ পড়ে যায়।
–
৩৪. জীবনের লক্ষ্য কী?
: জীবন বলতে যদি দুনিয়ার সময় বোঝায় তাহলে লক্ষ্য হবে নবী সা.এর উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা এবং তার সমগ্র মিশনকে বর্তমান সময়ের মতো করে সামনে এগিয়ে নেওয়া।
–
৩৫. শখ কী?
: লেখালেখি করা, বই পড়া।
–
৩৬. এই যে লেখালেখি, এ নিয়ে জীবনের সমাপ্তি বেলায় কী দেখতে চান?
: বাংলাভাষা ও সাহিত্যে আলেম সমাজের উপস্থিতি আশানুরূপভাবে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। তবে যেটা দেখতে চাই তা হলো, ইসলামী লেখা ও লেখক এবং অনৈসলামিক লেখা ও লেখক এই দুই সমাজের বিভক্তি ও দূরত্ব দূর হয়েছে। যা সত্য ও সুন্দর তাই ভাষা ও সাহিত্যে বিস্তার লাভ করেছে। সাহিত্যজগৎ থেকে অশ্লীলতা ও অসারতা নির্বাসিত হয়েছে। আরবি উর্দু ফার্সির মতো বাংলাও “ইলমী যবান” হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আলেমদের সাহিত্য সর্বশ্রেণীর পাঠক সমাদরের সাথে গ্রহণ করেছে। সর্বোপরি বাংলাসাহিত্যে “খেলাফত” কায়েম হয়েছে।
–
৩৭. কোন ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন এবং কেন করেন?
: ইতিহাস ও কবিতা। ইতিহাস ইবরাত হাসীলের জন্য আর কবিতা যেহনী তাফরীহাতের জন্য।
–
৩৮. আমাদের নবী ছাড়া কোন নবীকে বেশি ভাল লাগে? কেন?
: ইউসুফ আ., আল্লাহ স্বয়ং তার গল্প কোরআনে অনুপম গল্প হিসেবে এনেছেন।
–
৩৯. কোন সাহাবীকে বেশি ভাল লাগে? কেন?
: আবু বকর রা., নবুওয়তের আগে ও পরে নবী সা.এর বন্ধু ছিলেন, সঙ্গী ছিলেন, আত্মীয় ছিলেন, নবীজীর পরম আস্থার একজন মানুষ ছিলেন।
–
৪০. কোন তাবেয়ীকে বেশি ভাল লাগে? কেন?
: ইমাম আবু হানীফা রহ.। তিনি উম্মাহর ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ বুজুর্গ মুহাদ্দিস ও ফকীহ। হাদীস ও ফিকহের অপূর্ব সম্মীলন ঘটিয়েছেন।
–
৪১. কোন ইমামকে বেশি ভালো লাগে ? কেন?
: ইমাম মুহাম্মদ রহ.। সে যুগের আলেম হয়েও তিনি লেখালেখি করেছেন। এবং প্রচুর লিখেছেন।
–
৪২. কোন বুযুর্গকে বেশি ভালো লাগে? কেন?
: আশরাফ আলী থানভী রহ.। তিনি কঠোর নিয়ম ও নেযাম মেনে চলতেন। নিজেও প্রচুর লিখেছেন। তার তত্ত্বাবধানেও অনেক অমূল্য কিতাব লিখিয়েছেন। ভারতবর্ষের মাটিতে সহীহ তাসাউফ চর্চার শিকড় তিনি সুদৃঢ় ও সুসংহত করেছেন। তার প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধার বিশেষ কারণ হলো, নাবী সা.এর যুগ থেকে চলে আসা তাসাউফের বর্তমান একাডেমিক রূপ ও কাঠামো তিনি নির্মাণ ও উপস্থাপন করেছেন খোদাদাদ বিশেষ ইলম ও হেকমতের সম্মীলনে।
–
৪৩. আমাদের আকাবিরদের মধ্যে কাকে বেশি ভালো লাগে? কেন?
: একজন শাহ ওয়ালি উল্লাহ রহ.। খুবই আশ্চর্য হতে হয়, এত আগের মানুষ হয়েও কীভাবে তিনি এত আধুনিক। সতত নতুন। ওল্ড হয়েও কীভাবে এমন গোল্ড। অপরজন আলী নাদাবী রহ.। বিশ্বব্যাপী প্রভাববিস্তারকারী বিরলপ্রজ একজন আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লবী পুরুষ। মানুষটার যতই গভীরে যাই ততই বিস্ময় ও বিমুগ্ধতা বৃদ্ধি পায়।
–
৪৪. বাংলাদেশের কোন আকাবিরকে ভালো লাগে?
: শামসুল হক ফরিদপুরী রহ.। আগামী এক শতাব্দীকাল পরে আমরা যে কথা বলতে পারি সেগুলো তিনি অর্ধ শতাব্দী আগে ভেবেছেন ও বলেছেন। আশ্চর্য আমাদের আত্মসম্মানবোধহীনতা।
–
৪৫. কোন বীর মুজাহিদকে বেশি ভালো লাগে? কেন?
: খালিদ বিন ওয়ালিদ রাহ.কে। তিনি কোনো যুদ্ধে পরাজিত হন নি। যুদ্ধের ইলম ছিলো তার আজন্ম।
–
৪৬. প্রিয় শিল্পী?
: জুনাইদ জামশেদ।
–
৪৭. কয়েকটি প্রিয় নাশীদের নাম বলুন।
: তালা’আল বাদরু আলাইনা। মেরে নাবী পেয়ারে নাবী। হে যুবক তুমি বাঙ্গালি হও কিংবা ইন্ডিয়ান।
–
৪৮. প্রিয় কাজ?
: বারান্দায় সযত্নরোপিত গাছে গাছে নিজ হাতে পানি দেওয়া ও পরিচর্যা করা।
–
৪৯. কোন বিষয়টি বিরক্ত মনে হয়?!
: পড়াশোনা ও জানাশোনা নেই, শুধুশুধু যুক্তিহীন অনর্থক তর্ক ও বিতর্কে লিপ্ত হওয়া। ঝগড়া, গালমন্দ, কটূক্তি, নাম বিকৃতি, অসার কথাবার্তা। বিশেষ করে ফেসবুকের ইনবক্সে অচেনা কেউ এসে “হাই” “হ্যালো” “সালাম ভাই” “আসসালামু আলাইকুম” “কেমন আছেন” “কী করেন বাই” এসব প্রশ্ন করা।
–
৫০. ফেসবুক ব্যবহার সম্পর্কে আলোকপাত করুন।
: ছাত্র অবস্থায়, বিশেষভাবে ইসতি’দাদী স্তর পর্যন্ত ফেসবুকে আসা বিলকুল হারাম (শার’আন নয়, হুকমান) ও নাজায়েজ। ফারাগাতের পর মুরুব্বির নেগরানীতে নির্দিষ্ট একটি সময়ে নিয়মিত ফেসবুকে আসবে। জেনারেল এডুকেটেড দ্বীনদার ভাই-বোন কোনো বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ আলেমের নির্দেশনয়ায় ফেসবুকে আসবে। সর্বোপরি আল্লাহর প্রিয় একজন বুজুর্গের খানকার সাথে আবশ্যিকভাবে তা’আল্লুক ও মুনাসাবাত রাখবে। আল্লাহ প্রথমত আমাকে ও অত:পর সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুন, আমীন।
–
৫১. যুবসমাজ ও পাঠকের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
: প্রতিটা মুহূর্ত কাজে লাগাবেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতের সাথে পড়বেন। একজন হক্কানী আলেম ও বুজুর্গ ব্যক্তিকে সারা জীবনের জন্য বিতানাহ (অন্তরঙ্গ বন্ধু) ও রাহবার বানাবেন। কোনোরকম হারাম খাবার মুখে প্রবেশ করতে দিবেন না। গান শুনবেন না। গুনাহ করবেন না। সিনেমা দেখবেন না। যিনা করবেন না। আর প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে বই পড়বেন। প্রচুর পড়বেন। সবরকম বই পড়বেন।
সবার নিকট আন্তরিকভাবে দোয়া চাই। জাযাকুমুল্লাহু খাইর।
—————————–
আমাদের এই সাক্ষাৎকারগ্রহণকারীদের দলে যারা যোগ দিতে আগ্রহী, তাদের একটাই করণীয়:
= প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে একজন সাক্ষাৎকার নিয়ে পোস্ট করা। ব্যস, হয়ে গেল।
.
রাব্বে কারীম আমাদের এই কর্মসূচীতে বরকত দান করুন। আমীন।
Arif Khan Sa’ad
—
একক্লিকে:
আমাদের সাক্ষাৎকার
শায়েখ Atik Ullah