বৃহস্পতিবার, ৩০শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সহবা‌সের পর গোসল করার ৫ রহস্য

প্রথম রহস্য : স্ত্রী সহবাসের পর সকলকে গোসল করতে হবে। এটি খুব জরুরী ও ইসলামি বিধান অনুযায়ী ফরজ কাজ। গোসলের সময় সারা শরীরে পানি ঢালবে। সামান্য স্থানও যেনো শুকনা না থাকে। কেননা, সহবাসের সময় যে বীর্যপাত হয়ে থাকে তা সমস্ত শরীর থেকেই হয়ে থাকে। বীর্য শরীরের মূল উপকরণ যা সমস্ত শরীর হতে নিসৃত হয়ে কোমরের পথা দিয়ে এসে যৌনাঙ্গে দিয়ে বের হয়। এ বীর্য বের হওয়ার দ্বারা শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। আর যেহেতু বীর্য শরীরের সকল অঙ্গ থেকে এসে থাকে সেহেতু গোসলের সময় সমস্ত শরীর পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে। সামান্য স্থান শুকনো থাকলেও পূর্ণাঙ্গ গোসল হবে না। আর পুর্ণাঙ্গ গোসল না হলে সে পবিত্রও হবে না। [বেহেশতি জেওর]

দ্বিতীয় রহস্য : সহবাসের দ্বারা শরীরে দুর্বলতা, ক্লান্তি, অলসতার ভাব দেখা দেয়। আর গোসলের দ্বারা এসব দূর হয়ে যায়। সে সাথে অন্তরে শক্তি, প্রফুলতা, আগ্রহ ও উদ্দিপনা সৃষ্টি হয়। হযরত আবু গিফারী রা. বলেন- সহবাসের পর গোসল করলে মনের হালত এমন হয় যেন মাথা হতে পাহাড়সম ভার দূর হয়ে গেল। [বেহেশতি জেওর]

তৃতীয় রহস্য : সহবাসের পর মানুষের অন্তরে একপ্রকার অস্থিরতা ও সংকীর্ণতা থাকে। আর এটা কেবল গোসলের দ্বারাই দূর হয়ে থাকে। বিনা গোসলে খাওয়া-দাওয়া করা ও অধিক সময় অবস্থান করার দ্বারা দারিদ্রতা দেখা দেয়। [রুহানি এলাজ]

চতুর্থ রহস্য : অভিজ্ঞ হাকিমগণ বলেন, সহবাসের পর গোসল করলে সহবাসের ক্ষয়কৃত শক্তি ও উদ্দিপনা পুনরায় ফিরে আসে এবং দুর্বলতা দূর হয়ে যায়। সহবাসের পর গোসল করাশরীর ও আত্মার জন্য খুবই উপকারী। পক্ষান্তরে সহবাসের পর গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় থাকার কারণে শরীর ও আত্মার অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। [রুহানি এলাজ]

পঞ্চম রহস্য : সহবাসের দ্বারা বীর্যপাত হলে শরীরের সমস্ত ছিদ্র খুলে যায়। এতে সে ছিদ্র দিয়ে ঘাম বের হওয়ার সাথে সাথে শরীরের দুর্গন্ধযুক্ত সারাংশও বের হতে থাকে। আর সে দুর্গন্ধযুক্ত সারাংশ রোগ ও ছিদ্রের মুখে এসে থেমে যায়। সুতরাং গোসলের মাধ্যমে সমস্ত শরীর পরিষ্কার করা না হলে রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। সেহেতু সহবাসের পর গোসল করা সকলের জন্যই আবশ্যক। আর তা না সহবাসে হোক আর স্বপ্নদোষে হোক কিংবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে বীর্যপাত হয়ে থাকুক। [বেহেশতি জেওর]

সহবাসের পর ফরজ গোসল না করে নামায,তাওয়াফ,কুরআন তেলাওয়াত ও স্পর্শ করা এবং মসজিদে গমণ করা ছাড়া অন্যান্য সবধরণের কাজ করা যাবে।

আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে মদিনার কোন এক পথে রাসূল ﷺ-এর দেখা হল। আবু হুরায়রা রাযি. তখন জানাবাতের (গোসল ফরজ) অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে নাপাক মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হুরায়রা রাযি. গোসল করে এলেন। পুনরায় সাক্ষাৎ হলে রাসূল ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রা ! কোথায় ছিলে? আবু হুরায়রা রাযি. বললেন, আমি জানাবাতের অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করি নি। নবীজী ﷺ বললেন, سبحان الله ، إن المسلم لا ينجس সুবাহানাল্লাহ্! মু’মিন নাপাক হয় না। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৯)

তবে অন্যান্য কাজ একেবারে নিষেধ না হলেও কোনো কাজ করার আগে গোপনাঙ্গ ধুয়ে নেয়া ও অজু করে করে নেয়ার কথা একাধিক হাদীসে এসেছে। যেমন-

عن عائشة قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا كان جنباً فأراد أن يأكل أو ينام توضأ وضوءه للصلاة

আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল ﷺ জানাবাতের (গোসল ফরজ) অবস্থায় পানাহার কিংবা ঘুমানোর ইচ্ছা করলে নামাজের অজুর মত অজু করে নিতেন। ( সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫)

উল্লেখ্য, ফরজ গোসল বিলম্বিত হওয়ার কারণে যদি নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে আপনাকে গোনাহগার হতে হবে। আপনার তীব্র লজ্জা এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য কোনো ওজর নয়; যার কারণে নামায আদায়ে এ বিলম্ব করা যেতে পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।

Archives

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031