শনিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রসঙ্গ ভ্যালেন্টাইনস ডেঃ
আত্মমর্যাদাহীন পরগাছা জাতির প্রতি আফসোসের মাতম!
আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ আজ ভূলন্ঠিত। স্বাতন্ত্রতা, স্বকীয়তা আজ আমাদের থেকে নির্বাসিত। বহু দূরে অবস্থান করছে আমাদের স্বকীয়তাবোধ। নিজস্বতা বিকিয়ে হয়ে গেছি পরগাছা।
আমাদের পাঠ্যসূচিতে একটি কিতাব ছিল “দুরুসুল বালাগাত” নামে। কিতাবটিতে একটি উপমা ছিল এই রকম- “গাধা লবনে পড়ে লবন হয়ে যায়”। তার নিজস্বতা বলতে আর কিছু বাকি থাকে না।
আমাদের যুবকদের দেখলে এ উপমা খুব বেশি মনে পড়ে। স্বকীয়তা আর আত্মমর্যাদা ভুলণ্ঠিত করে আমরা এখন গাধায় রূপান্তরিত হয়েছি। পাশ্চাত্যের নোংরা সংস্কৃতির ভাগারে নিমজ্জিত হয়ে হয়ে গেছি তাদেরই মত। না পোশাকে আমি মুসলিম। না আখলাকে মুসলিম। না চেহারায় মুসলিম। না পারিবারিক জীবনে মুসলিম। না রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলিম। আমাদের জীবনের কোথাও ইসলাম ও মুসলমানিত্বের ছাপ পর্যন্ত নেই। একি হালাত আমাদের? আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ, আমাদের স্বকীয়তাবোধ, স্বতান্ত্রতাবোধ এতটা মিইয়ে গেল কিভাবে?
ভ্যালেন্টাইনস ডে পালনকারীদের বলছি!!
আপনি কি জানেন এটি কিসের উৎসব? কিভাবে শুরু হল এ নোংরামী?
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের ধারণা, রোমান সেন্ট ভ্যালেন্টাইন খ্রিস্টধর্ম ত্যাগ না করায় তাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা থেকেই এর উৎপত্তি। ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার আত্মত্যাগের ওই দিনটি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে পালিত হয়। কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলে থাকেন, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারাগারে বন্দী থাকার সময় কারারক্ষীর মেয়েকে তার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেন, যাতে লেখা ছিল ‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। ভালোবাসার এমন স্মৃতিকে জড়িয়েই পরবর্তী সময়ে ভ্যালেন্টাইন ডে’র প্রচলন হয়। অপর একটি ধারণা, রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন গির্জার ধর্মযাজক ছিলেন। ক্লডিয়াস তার সঙ্গে বিরোধের জন্য প্রথমে তাকে কারাবন্দী করেন। পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন। ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি নির্ধারিত করেন এবং পরবর্তীকালে তার নামানুসারে পালিত হতে থাকে এই অনুষ্ঠান।
ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন শুরু হয় রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল রোমান দেবদেবীদের রানী জুনোর সম্মানে পবিত্র দিন। রোমানরা তাকে নারী ও বিবাহের দেবী বলে বিশ্বাস করত। দিনটি অনুসরণ করে পর দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি পালিত হতো লুপারকেলিয়া উৎসবের বিশেষ ভোজ। সে সময় তরুণ এবং তরুণীদের জীবনযাপন ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ পৃথক। কিন্তু তরুণদের জন্য ‘দৃষ্টি আকর্ষণ’ নামে একটি ভিন্নধর্মী প্রথা ছিল ‘লটারি’। লুপারকেলিয়া উৎসবের সন্ধ্যায় কাগজের টুকরায় তরুণীদের নাম লিখে একটি পাত্রে জমা করা হতো। সেখান থেকে এক একজন তরুণ একটি করে কাগজের টুকরা তুলত এবং কাগজের টুকরায় যে তরুণীর নাম লেখা থাকত ওই উৎসবের সময় পর্যন্ত সে তাকে তার সঙ্গী হিসেবে পেত। পরে কখনো কখনো ওই দুজনের জুটি পুরো বছর ধরে টিকে থাকত।
{সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিন ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৫ ইং সংখ্যা}
একেতো খৃষ্টান পাদ্রীর মাধ্যমে উদ্ভব। দ্বিতীয়ত লটারীর মাধ্যমে লিভ টুগেদারের মত নিকৃষ্ট কর্মের প্রমাণবাহী একটি দিনকে সাদরে গ্রহণ করে নিজেদের আত্মমর্যাদাবোধকে কোন স্তরে নামিয়ে নিল এ দেশের অতি আধুনিক সমাজ? লজ্জা, নৈতিকতাবোধ, স্বকীয়তা বিসর্জন করে এ কোন নোংরামীতে মত্ব আমরা? একবার ভাবার কি সময় হবে?