বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
আরাকান থেকে বাংলাদেশে হিজরতের জন্য এই মূহুর্তে মাত্র ৪টি পয়েন্ট চালু আছে। ক্রমাণ্বয়ে পারাপার পরিসংখ্যাণ অনুসারে পয়েন্টগুলো হলোঃ
১. পালংখালী উনসিবরাং বর্ডার
২. দক্ষিণপাড়া, শাহপুরী দ্বীপ
৩. আজুখাইয়া বাজার বাইশফাঁড়ি বর্ডার
৪. শাপলাপাড়া সৈকত, কক্সবাজার
২য় ও ৪র্থ পয়েন্টদু’টি সবচে’ বেশি মানবিক বিপর্যয়গ্রস্ত। মাত্র আড়াই কি.মি. নদীপথ পারি দিতে জনপ্রতি গুণতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। শাহপুরী দ্বীপে একাধিক ভুক্তভুগি অভিযোগ করে বলেছেন, তারা সমপরিমাণ মূল্যের স্বর্ণের চেইন ও কানের দুলের বিনিময়ে এপারে এসেছেন। কেউ গরু-ছাগল বিনিময় করেছেন। তবে যাদের কানা-কড়িও নেই এমন লক্ষাধিক শরনার্থী ওপারে নিশ্চিত-মৃত্যুর অপেক্ষায় আছেন। টানা ১৫-১৬ দিন পাহাড়-পর্বত উৎরিয়ে পৌছেছেন নাক্ষংদিয়া সীমান্তে। দানা-পানি বিহীন ক্লান্ত শ্রান্ত অবস্থায় অর্ধমাস কাটিয়ে এবার জীবনের হালই ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকেই বাঁচার আশা ছেড়ে ভঙ্গুর শরীর এলিয়ে দিয়েছেন। ভাবছেন, হয়তো এভাবেই না খেয়ে মরে যাবেন নয়তো বার্মিজ আর্মি এসে মেরে দিয়ে যাবে।
আমরা দক্ষিণপাড়া সফর করে এলাকাবাসীর সাথে এ ব্যপারে কথা বলে এসেছিলাম। সেই সূত্রধরে গতকাল ‘মানবসেবায় নেশাগ্রস্ত’ এক দ্বীনী ভাই সেখানে গিয়েছেন। মাঝিদের সাথে দাম-দর করে জনপ্রতি মাত্র ২ হাজার টাকায় দফারফা করেছেন। ১৫জন যাত্রীসহ নৌকা প্রতি মাত্র ৩০হাজার টাকা। আজ থেকেই আমাদের ভাড়াকৃত নৌকা পারাপার শুরু করবে ইনশা আল্লাহ। সীমাবদ্ধ সামর্থ নিয়েই আমাদের এতটুকু এগিয়ে আসা।
আপনারা যারা ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, মেহেরবানী করে আপনার ক্ষুদ্র সামর্থ দিয়ে অন্তত একজন মুসলিম ভাইয়ের জীবন রক্ষা করুন। যারা এপারে চলে এসেছেন তারা খাদ্য-বস্ত্র-চিকিৎসা-বাসস্থান ছাড়াও বেঁচে থাকতে পারবেন। কিন্তু যারা ওপারেই পড়ে আছেন তারা অনিবার্য মৃত্যুর মুখোমুখি। হয়তো না খেয়ে নয়তো গুলি খেয়ে।
তাই এগিয়ে আসুন। নিশ্চিত মরণকূপ থেকে আরাকানী ভাইদের টেনে তুলুন। তাদেরকে জীবন দান করুন। প্লীজ, উদ্ধার করুন। কেয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনে হয়তো এই একটি কাজই আপনার পরকালীন জীবনকে শঙ্কামুক্ত রাখবে। অন্তত শেষরক্ষা হবেই ইনশা আল্লাহ। كما تدين تدان.
সুতরাং কাফেলা নিয়ে সোজা চলে আসুন দক্ষিণপাড়ায়। পরবর্তী ধাঁপগুলোতে আমরা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। সম্ভব না হলে মাত্র একজনের দায়িত্ব নিন। সময় বেশি নেই। মাত্র সপ্তাহখানের মধ্যে তাদের জীবন-মরণের ফায়সালা হয়ে যাবে। নিশ্চিত মৃত্যু থেকে একজন মানুষকে রক্ষায় কেউ যদি আল্লাহ তা’আলার প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে গোটা বিশ্বের সকল মানুষকে জীবন দেওয়ার সমতূল্য সওয়াব লাভ হয়। (সূরাঃ ৫, আয়াতঃ ৩২)
আপনিও হোন সেই সৌভাগ্যবান জীবনদাতা।
আল্লাহ তাউফীক দান করুন। আমীন।