সোমবার, ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

বাবরি মসজিদের মতোই ধ্বংস হতে পারে তাজমহল

news-image

বাবরি মসজিদের মতোই ধ্বংস করা হতে পারে তাজমহলকেও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান। বিজেপি এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী জানিয়েছিলেন, চুরি করা জমির উপর তাজমহল তৈরি হয়েছে। তারপরই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেন উত্তরপ্রদেশের নেতা।

Default Ad Content Here

তাজমহল নিয়ে গত কয়েক দিনে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোমের তাজমহলকে বিশ্বাসঘাতকদের তৈরি ও ভারতের ইতিহাসে কলঙ্ক হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তারপর থেকেই চরমে ওঠে বিতর্ক। প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার ঢেউ বয় গোটা দেশে। আজম খানই জানিয়েছিলেন, সঙ্গীত সোমের মন্তব্য মেনে নিতে হলে রাষ্ট্রপতি ভবনকেও ভেঙে ফেলতে হয়। কেননা সেটিও ইংরেজ শাসকদের তৈরি ও দাসত্বের প্রতীক।

একাধিক নেতা মুখ খোলার পরই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি জানান, তাজমহল ভারতের সন্তানদের ঘাম ও রক্তে তৈরি। কে তা নির্মাণ করেছিলেন সেটা বড় কথা নয়। কী উদ্দেশ্যে তা তৈরি হয়েছিল তাও বিচার্য নয়। এর পর বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালেন বিজেপি এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তিনি জানান, যে জমিতে তাজমহল তৈরি হয়েছে, তা আসলে সম্রাট শাহজাহান জয়পুরের রাজার কাছ থেকে হস্তগত করেছিলেন। সেই নথিও তার হাতে আছে বলে জানান তিনি। এরপরই আজম খানের আশঙ্কা, বাবরির পরিণতি হতে পারে এই সৌধের।

তার দাবি, রামমন্দিরের দাবিতে যদি বাবরি ভেঙে ফেলা হতে পারে, তাহলে তাজমহলের নিয়তিও একই হলে তিনি আশ্চর্য হবেন না। কিন্তু দেশে আইন-আদালত আছে। তারপরও ইউনেসকোর স্বীকৃতি পাওয়া এ সৌধকে কি মুছে ফেলা সম্ভব? আজমের যুক্তি, বাবরি কাণ্ডের সময়ও দেশে হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ছিল। তারপরও তা ভেঙেই ফেলা হয়েছিল। সুতরাং তাজমহলের ক্ষেত্রেও সেই একই জিনিস হতে পারে বলে আশঙ্কা তার।

যদিও ইতিমধ্যেই বিজেপি জানিয়েছে দলীয় বিধায়ক সঙ্গীত সোমের মন্তব্যের সঙ্গে দল সহমত নয়। তাঁর কাছে এহেন মন্তব্যের কৈফিয়তও তলব করা হয়েছে। বার্তা দিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে কখনোই এগনো সম্ভব নয়। এরপরই তাজমহল, আগ্রা ফোর্ট-সহ বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান ভ্রমণের কথাও ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
উল্লেখ্য, বাবরি মসজিদ একটি রামমন্দিরের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল- এই যুক্তিতে উগ্রপন্থী হিন্দুরা সেটিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।

পড়ার চাপে দু’‌মাসে অর্ধশতাধিক আত্মহত্যা
পড়াশুনার চাপ। শিক্ষকদের অভদ্রতা। সাফল্যের জন্য পরিবারের চাপ তো আছেই। এত চাপের মধ্যে দিশেহারা ছাত্রছাত্রীরা। চিত্রটা ভয়ঙ্কর ভারতের তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে। পরিসংখ্যান বলছে, দুই রাজ্যে গত দু’‌মাসে পঞ্চাশেরও বেশি ছাত্রছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। কারণ, অতিরিক্ত চাপ তারা নিতে পারেননি।

৩ মাস আগেই মেডিক্যাল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস করে রাজ্যের এক নামী কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন সমুক্তা। উচ্চমাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পান। মেধাবী ছাত্রীটি গত সোমবার আত্মহত্যা করেছেন। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন শেষ। সুইসাইড নোট লিখে রেখে গেছেন, ‘‌পড়াশুনার অতিরিক্ত চাপ নিতে পারিনি।’‌ শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তারাও পড়াশুনার অতিরিক্ত চাপকেই এই আত্মহত্যার সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে মনে করছেন। পেশায় গাড়িচালক সমুক্তার বাবা বলছিলেন, ‘‌কলেজে ভর্তি হওয়ার পরেই মেয়ে অতিরিক্ত চাপের কথা বলত। বাকি অভিভাবকদের প্রতি আমার পরামর্শ, সন্তান যা পড়তে চায়, তাই পড়তে দিন। জোরাজুরি করবেন না।’‌

বিশাখাপত্তনমের একটি বেসরকারি কলেজের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। যেখানে দেখা গেছে গোটা ক্লাসের সামনে এক ছাত্রকে বকাঝকা করছেন এক শিক্ষক। যার জেরে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু বেসরকারি কলেজের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অচিন্ত্য রাও এইসব বেসরকারী কলেজের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করার পক্ষপাতী। তার কথায়, ‘‌ছাত্রছাত্রীদের ন্যূনতম নিরাপত্তা এরা দিতে পারে না। শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা দেয়া হয় তাদের। এই কলেজগুলি বন্ধ করে দেয়া দরকার।’‌

গতমাসেই ১৭ বছরের এক ছাত্র কলেজের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দেয়। পরে জানা যায়, ছাত্রটিকে অপমান করেছিলেন শিক্ষক। মনোবিদ বীরভদ্র কান্দলা বলছেন, ‘‌বাড়িতে মা–বাবার চাপ। কলেজে শিক্ষকদের চাপ। ছাত্রছাত্রীরা এত চাপ নিতে না পেরেই আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।’‌
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে এই দুই রাজ্যের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনার ট্র্যাক রেকর্ড বেশ ভালো। দেশের আইটিআইগুলিতে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের বহু ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করেন। ২০১৬–১৭ সালে দেশের নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে মোট আসনের ৬৭৪৪টি আসনই দখল করেছিল দুই রাজ্যের ছাত্ররা। সাফল্যের ‌ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চাপটাই নিতে পারছেন না অনেক ছাত্র। ‌‌

Archives

March 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031