রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সাক্ষাতকারঃ ৩৫ বার হজ করেও আমার তৃপ্তি মেটেনি: আল্লামা তাফাজ্জুল হক

আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী
মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস, উমেদনগর টাইটেল মাদরাসা, হবিগঞ্জ

আমার জীবনে ৩৫ বার হজ করার সুযোগ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। ১৯৭৫ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দু’এক বছর ছাড়া কোনো বছর বাদ পড়েনি। ওমরাও করেছি অনেকবার। বেশির ভাগ ওমরা হয়েছে বিভিন্ন দেশে আসা-যাওয়ার পথে। ৩৫ বার হজ করেও তৃপ্তি মিটে নাই আমার। প্রতি বছরই হজে যেতে মনে চায়। সুযোগ পেলেই ছুটে যাই মদিনায়। কারণ এর চেয়ে শান্তির জায়গা আর নেই। সেখানে গেলে ঈমান মজবুত হয়। আল্লাহর সঙ্গে প্রেম-ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।

Default Ad Content Here

বড় বড় বুজুর্গদের সঙ্গে হজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। তাবলিগের আমির আব্দুল হাই (খুলনা) সাহেবের সাথে হজ করেছি। মাওলানা হরমুজুল্লাহ সাহেব, ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানির সাথে হজ করেছি। তাদের সাথে থেকে হজের বিধিবিধান পালনের সুযোগ আল্লাহ দিয়েছেন। তারা এখন নেই। কিন্তু তাদের সাথে আমার অনেক হজস্মৃতি জড়িয়ে আছে। একবার আওলাদে রাসুল সাইয়েদ আসআদ মাদানির সাথে হজে গেলাম। ১৯৭৫ সালে। তখন বিশ্বের বড় বড় মুহাদ্দিসিনে কেরাম ও অন্যান্য আলেম-ওলামাগণও ছিলেন। সৌদি সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারকের পাশে বুখারি শরিফের খতম হতো। একজন পড়তেন। বাকি মুহাদ্দিসগণ শুনতেন। আল্লাহ তায়ালা আমাকেও এই খতমে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। আমিও কয়েক বছর পড়েছি। তখন আসআদ মাদানিকে খুব কাছে থেকে লক্ষ্য করেছি। রাতে এশার পর যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়তেন তিনি আমার হাত তার মুঠোয় পুরে হারাম শরিফে নিয়ে যেতেন। সারারাত কুরআন তেলাওয়াত করতেন। আমিও কুরআন তেলাওয়াত করতাম। হজের সফরে আগে যখন কাবা শরিফ তাওয়াফ করতাম, প্রতি চক্করে হজরে আসওয়াদ পাথর চুমু দিতে পারতাম। এখনতো একথা কল্পনা করাও কষ্টসাধ্য। এসব এখন শুধুই স্মৃতি।

এক হজের সফরে আমাকে মক্কায় একটি মাদরাসার মুহতামিমের দ্বায়িত্ব নিতে বলেছিলেন এক হিন্দুস্থানি মাওলানা। মাদরাসার নাম ছিলো ‘আল মাদরাসাতুস সালিহাত’। এখন সে জায়গাটি সৌদি সরকারের দখলে। এখনতো কোনো মাদরাসাই নেই। আগে হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি রহ. এর মাদরাসা ছিলো ‘মাদরাসায়ে সৌলতিয়া’। শায়খুল হিন্দের মাদরাসা ছিলো ‘মাদরাসায়ে আশরাফিয়া’। তারপর মাদরাসার পাশে বুখারা মসজিদ ছিলো। এখন এসবের কিছুই নেই। সব জায়গা সরকার দখলে নিয়ে নিয়েছে। তো মাদরাসাতুস সালিহাতে থাকতে বললে আমি বললাম, আমি এদেশে চাকরির জন্য আসিনি, রুজি-রোজগার আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার দেশের মানুষ আমার কাছে বেশি হকদার দীন শেখার ব্যাপারে। তাই মুহতামিমের প্রস্তাব গ্রহণ করিনি।

Archives

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031