শনিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কাকরাইল মারকাজে মাওলানা সাদ কান্ধলভির সম্পুর্ন বয়ান বাংলা তরজমা

 

জুম্মার পুর্বের বয়ানের অডিও লিংক 

Default Ad Content Here

 গতকাল শুক্রবার কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজ পড়ান তাবলিগ জামায়াতের দিল্লি নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরুব্বী মাওলানা সা’দ কান্ধলভী। নামাজের পূর্বে মাওলানা সা’দ মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান পেশ করেন। বয়ানটি হুবহু তুলে ধরা হল ।

ইসমাইল শুভঃ

কাকরাইল থেকে ফিরে

মানুষ যে লাইনে মেহনত করে সেই লাইনের সফলতাই হাসিল হয়।যদি মেহনত দ্বীনের জন্য হয়, তবে সে দ্বীনের হাকিকত বুঝতে পারে,দ্বীনের উপর আখিরাতের নেয়ামতের বিশ্বাস চলে আসে।যদি মেহনত দ্বীনের বদলে দুনিয়ার জন্য হয়,তবে তার মধ্যে দুনিয়াই বসে যায়।মেহনতকরনেওয়ালা ২ ধরনের হয়।একপ্রকারের মেহনতকরনেওয়ালা আছেন তারা দুনিয়াকে মাকসাদ বানিয়েছেন।দুনিয়াকে দ্বীনের তাবেদার ভাবেন।এধরনের লোকের কাছে দ্বীনের হাকিকত বুঝে আসে না।চাকরির উপর মেহনত করলে চাকরি ই সে পাবে।মেহনতের বিনিয়াদ হচ্ছে আপনি আপনার মেহনতের গন্তব্যকে পরিবর্তন করবেন।মেহনতের গন্তব্যকে পরিবর্তন বলতে,আমাদের মেহনতকে যেভাবে নবীজি করেছেন,সাহাবারা করেছেন সেভাবে মেহনত করা।আম্বিয়ায়ে (আঃ) সবসময় মানুষকেই মেহনতের ময়দান বানিয়েছেন।আম্বিয়ায়ে (আঃ)কে আল্লাহ পাক মানুষের মধ্যে হেদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন।আম্বিয়ায়ে (আঃ) ধনসম্পদ,বাদশাহী ইত্যাদির জন্য মেহনত করা তো দূরের কথা তারা এটাকে জরুরীও মনে করেন নি।এজন্য তাদের মেহনতের জন্য মানুষের কিমত কায়েম হয়েছিলো।এই জামানায় মানুষের দাম এত কমে যাওয়ার কারন,মানুষ মেহনতের ময়দানে নেই।মামুলি জিনিসের উপর মানুষ মেহনত করে।এজন্য মামুলি জিনিসটাই মানুষের কাছে দামি হয়ে যায়।এজন্য আমাদেরকে এখন আম্বিয়ায়ে (আঃ) এর মতো ইজতেমায়ীভাবে মেহনতে মনযোগী হতে হবে।আম্বিয়ায়ে (আঃ)এর মেহনত ছিলো আল্লাহর বান্দাদের আল্লাহ পাকের সাথে জুড়ে দেয়া।যাদের মধ্যে এর বাইরে অন্য কোনো চিন্তা চেতনা কাজ করে আল্লাহ পাক তাদের থেকে আম্বিয়ায়ে (আঃ) ওয়ালা কাজ নেন না।নবীওয়ালা কাজ করার জন্য সবার প্রথমে জরুরী হলো,সবার প্রথমে নিজের দিলকে দুনিয়ার সবকিছু থেকে খালি করতে হবে।দিলের মধ্যে যদি দুনিয়ার মাকসাদ থাকে তাহলে আল্লাহ পাক এসমস্থ লোক থেকে কাজ নিবেনা।এজন্য আমাদের সবার প্রথমে জরুরী হলো নবীজি ও সাহাবাদের মত একটাই মাকসাদ হোক যে আল্লাহ পাকের বান্দাগন আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্ক হয়ে যাক।এই কাজের জন্য আম্বিয়ায়ে (আঃ)কে পাঠানো হয়েছে।আম্বিয়ায়ে (আঃ) বলেছেন,হে মুবাল্লীগগন,হে দাঈগন আমাকে পয়গাম পৌছানোর জন্য এবং দাওয়াহে ইল্লাল্লহ এর দাওয়াত দেয়ার জন্যই পাঠানো হয়েছে।এজন্য আমাদের উচিত ইজতেমায়ী ভাবে দাওয়াতের রোক কে পরিবর্তন করা।মেহনতের রোককে বদলাতে হবে।এজন্য হযরত বলতেন,আমাদের প্রথম মাকসাদ এটাই যে দাওয়াতের মাধ্যমে  আমাদের ইয়াকিনকে পরিবর্তন করতে হবে।এজন্যই দাওয়াতের মাকসাদ এলেমে লা ইলাহা ইল্লাল্লহ এর হাকিকতকে হাসিল করা। আল্লাহ পাকের ইতায়াদ ও দ্বীনের উপর ইস্তেকামাতের আসল যে কারন তাই হচ্ছে ঈমান।এলেম আমলের রাহবারি করে।ঈমান মানুষকে আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে।তো ভাই ঈমানের শক্তিতে আমলের প্রতি বান্দা উদ্বুদ্ধ হবে।আমলকে উদ্বুদ্ধ করতে এজন্য এলেমেরও প্রয়োজন হবে।হাদিসে উভয়কেই আনা হয়েছে-যে ইলম ও ঈমান চায় আল্লাহ পাক তাকে তাই দান করেন।চাওয়া তো মেহনতের দ্বারাই হবে।এই কাজের সবচাইতে মূল যে উদ্দেশ্য,আম্বিয়ায়ে (আঃ) এর দাওয়াতের যে উদ্দেশ্য তা হলো নিজের ইয়াকিনকে পরিবর্তন করা।আল্লাহ পাক এরশাদ করেন,আমি যে কয়জন রাসূলকে পাঠিয়েছি,সবাইকে কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর দাওয়াতের জন্যই পাঠিয়েছি।প্রত্যেক নবীকে কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লহ দিয়েই পাঠানো হয়েছে।আমাদের মেহনতের মাকসাদ,এই কালেমার ইখলাসকে হাসিল করা।কালেমার ইখলাস এটাই,কালেমা পাঠ করনেওয়ালাকে এই কালেমা লা ইলাহা ইল্লালাহ হারাম থেকে বিরত রাখে, আমাদের সবাইকে এই কথা বুঝতে হবে।আমাদের সবাইকে ইজতেমায়ীভাবে সবাইকে পৌঁছাতে হবে ঈমান শেখার জন্য সাহাবাদের তরিকা কি ছিলো?

আমাদের এই মেহনতকে সাহাবাওয়ালা তরিকার সাথে মেলাতে হবে।এটাই আসল বুনিয়াদি উদ্দেশ্য।আমাদের মেহনতকে সাহাবাদের মেহনতের সাথে মেলানো।আমাদেরকে সিরাত থেকে জানতে হবে ,সাহাবাদের ঈমান কীভাবে মজবুতি পয়দা করেছিলো,কি ছিলো তাদের মেহনত ?

আমরা কেনো গাশত করি? সমস্ত মুসলমানকে মসজিদের আমলের সাথে জুড়ানো। আর মসজিদ বানানোই হয়েছে একিনকে বদলানোর জন্য। মানুষকে দুনিয়ার গাফলত থেকে মসজিদ মুখী করা।আমাদের মধ্যে যে বর্তমান হালত ফেতনা শুরু হয়েছে,এসব ফেতনার মধ্যে আমরা এজন্যই ডুবে গেছি কারন ্মসজিদের সাথে আমরা সম্পর্ক কমিয়ে দিয়েছি।সমস্ত উম্মতের মাসলা এখান থেকেই শুরু।এখন এর চিকিৎসা হচ্ছে ,আবার সমস্ত মুসলমানকে মসজিদে একত্রিত করা,মসজিদের আমলের সাথে জুড়ানো।সিরাতের আলোকে কাজ করতে হলে এভাবেই করতে হবে।সাহাবারাও এভাবেই মেহনত করতেন।জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবারাও মসজিদওয়ারি আমলের সাথে জুড়তেন। উমর ইবনে খাত্তান এভাবেই ঈমানের হালকা বসাতেন যেনো ঈমান তাজা হয়।সাহাবারা একে অপরকে বলতেন আসো আমরা অল্প সময় বসি,ঈমানকে তাজা করি। মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকেও একই রেওয়ায়েত পাওয়া যায়।

রাসূল (সাঃ) এর জামানা থেকেই সাহাবাদের জিন্দেগী মসজিদমুখীই ছিলো। এজন্য সাহাবারা যেভাবে মসজিদের সাথে জুড়ছেন,ইমাম বুখারী (রাঃ) যেভাবে এলেম কায়েম করেছেন যার দ্বারা ঈমান তাজা হয়।একজন গোত্র প্র্ধান একবার মক্কায় এসেছিলেন ।মক্কার মুশরিকগন ্তাকে এই বলে সাবপধান করলেন।আমাদের মাঝে মুহাম্মদ নামে একজন আছেন,তার কথায় মানুষ জাদুগ্রস্থ হয়ে যায়,তুমি তার কথা শুনবেনা।যদি শুনো ফেতনায় পড়ে যাবা।তোমার কওম ফেতনায় পড়ে যাবে।ঐ গোত্র প্রধান সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি মুহাম্মদের কথা শুনবেন না।এজন্য তুলা দিয়ে কান বন্ধ করছেন।কিন্তু যখনই তিনি মসজিদে গেলেন,নবীজি নামাজ পড়তেছিলেন,কুরআন তেলাওয়াত করতেছিলেন।আল্লাহ পাকের কি শান।উনার মনে এই কথা চলে আসলো,না আমার এই লোকের কথা শোনা দরকার।তো তিনি কানের তুলা খুলে ফেললেন এবং শ্রবণ করে মুসলমান হয়ে গেলেন।আল্লাহ পাক উনার মাধ্যমে ৮০টি পরিবার মুসলমান হয়েছে।তো ভাই আল্লাহ পাক মসজিদে এরকম তাছির রাখছেন।মদিনা মুনাওয়ারাতেও এরকম মহল ছিলো।যদি কোনো চোরও ৩দিন মসজিদে থাকতো তারও হেদায়াত হয়ে যেতো।সে মুসলমান হয়ে এতো,ঈমানদার হয়ে যেতো,গুনাহ থেকে তওবা করে ফেলতো।সাহাবায়ে কেরামগন যে নকশায় মসজিদে মেহনত করছেন আমাদেরকেও একই নকশায় সেভাবেই মেহনত করতে হবে।আমাদের গাশতের মূল উদ্দেশ্যই হলো আবার সবাইকে মসজিদের আমলের সাথে জুড়ানো। যখন কেউ মসজিদের আমলের সাথে জুড়বে তজন সে ফেরেশতাদের পাখার নিচে থাকবে।সেই পাখা একেরপর এক লাগতে লাগতে আসমান পররন্ত বিস্তার লাভ করবে।ফেরেশতাদের পাখার নিচে থাকার দরুন আল্লাহ পাক মানুষের অন্তরে হেদায়াতের আলো জালিয়ে দেন।এজন্য আমরা নিজেরাও মসজিদের আমলের সাথে জুড়বো এবং সমস্ত উম্মত যেনো মসজিদের আমলের সাথে জুড়ে সেই ফিকির করবো ইন শা আল্লাহ।

ঈমানের আমলের সম্পর্ক তো দাওয়াতের সাথে।সাহাবারা মসজিদমুখী হইতেন,ফলে তাদের জিন্দেগী আমলওয়ালা ছিলো।নামাজ আমলের মধ্যে সেরা আমল।নামাজের মধ্যে খুশুখুজু পয়দা করা উচিত।নামাজের পূর্ণতা নিয়ে আসা।

আসবাবের পূর্বেই আমলকে রাখা হয়েছে।ঈমানের এখলাস হলো হারাম থেকে বিরত রাখবে।হারাম থেকে যে কালিমা বাচিয়ে রাখবে সেটাই হচ্ছে ইখলাসওয়ালা কালিমা যা তাকে জান্নাতে দাখিল করবে।এমনই ভাবে নামাজের এখলাস হলো ,নামাজ নিষিদ্ধ ফায়েশা কাজ থেকে আমাদেরকে বিরত রাখবে।যে নামাজ আমাকে নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত রাখেনা সে নামাজের মধ্যে আমাকে আমার কমতি তালাশ করতে হবে কেনো আমি এসব হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে পারতেছিনা।আমাদের মনের যে কল্পনা,আমাদের মনের যে খারাবি এগুলো এজন্যই যে আমরা আমাদের নামাজের মধ্যে খুশু খুজু একাগ্রতা পয়দা করতে পারিনি। আল্লাহ পাকের সংগে যার সম্পর্ক গড়ে উঠবে ,আল্লাহ পাক তার মনকে পরিচ্ছন্ন করে দিবেন। মনেও তার কোনো খারাপ কল্পনা আসবেনা,ফলে গুনাহ থেকে বাচা বান্দার জন্য সহজ হবে।এজন্য আল্লাহ পাক নামাজকে পরিপূর্ন করার জন্য তরগীব দিতেছেন।আমরা আমাদের ইবাদতকে যেনো কামল করি।সাহাবারা আসবাবের উপর আমলকে প্রাধান্য দিতেন।

রাসূল (সাঃ) এর কাছে একজন সাহাবী বললেন আমি বাহরাইন ব্যাবসায়ের কাজে যেতে চাই , নবী (সাঃ) বললেন ঠিক আছে যাওয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ পরে নাও , একথা না যে আমরা সমস্যা তৈয়ার হলে তখন নামাজের

দিকে মনযোগী হই , জি  ঠিকাছে এখন সমস্যা হইছে এখন নামাজ দ্বারা হাল করা হোক । কিন্তু না যে আমলকে ইবাদতের আগে প্রাধান্য দিবে আল্লাহ তায়ালা তাদের আসবাবের মধ্যে

বরকত করবেন। সাহাবাদের আল্লাহ তায়ালা এই বরকত দান করছিলেন । অন্যান্যদের ফসল একবার হইতো , উনাদের ফসল দুইবার হইতো । এবং দেখা গেছে তাদের সকল আসবাব কম , বাগান কম ফসল বেশি ।

ব্যবসা কম লাভ বেশি , উনাদের সর্ববিষয়ে আল্লাহ জাল্লা জালালুহু এরকম জরুরত পূরা করে দিতেন যেটা স্বাভাবিক ভাবে সম্ভব না । এরকমভাবে আমলের প্রাধান্য দেয়ার কারনে , আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর  যেমন বরকত  নাজিল করছেন,এরকম সকলের জন্য , সবসময়ের জন্যই বরকত নাজিল করবেন । হযরত বারবার এই কথার তরগীব দিতেছেন, আমরা নামাজের ভেতর কামাল পয়দা করি এবং সেই কামাল নামাজের দিকে মনযোগী হই ।

নামাজের ত্রুটি যখন মুক্ত হয়ে যাবে আল্লাহ আমাদের জিন্দেগী সমস্ত সমস্যাকে মিটাইয়া দিবেন । সব ত্রুটি দূর হয়ে যাবে ।

ঈমানের এখলাস হলো হারাম জিনিস হইতে বাচাইয়া রাখা , নামাজের এখলাস হইলো ফায়েশা কাজ থেকে বিরত রাখা এরকমভাবে আমাদের ইলমের ও এখলাস তালাশ করতে হবে , আল্লাহ তায়ালা কুরআনে পাকে বলছেন,

আলেমরাই সত্যিকারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে , ইলমের এখলাস হইলো খোদাভীতি। আল্লাহ তায়ালার ইলম যেরকমভাবে বান্দার ভেতর আল্লাহর ভিতি তৈয়ার করে এটা তার এখলাস ।

তো এমনিভাবে ইলম উম্মতকে জাহেলাত থেকে বের করার জন্য উলমাদের নকল হরকত সাহাবাদের জমানা থেকেই চালু আছে ।

সাহাবাদের মধ্যে  সবচেয়ে বড় জামাত যেটা যুদ্ধে শহীদ হইছে তারা সকলেই কোররা সাহাবী ছিলেন । সাহাবাদের ভেতর হাফেজ ছিলেন , ক্বারি ছিলেন , আলেম ছিলেন , সত্তর জন একসাথে শহীদ হইছেন ।

ইলম নিয়ে উম্মতের মধ্যে চলাফেরা করা এটা উম্মতকে জাহেলাত থেকে বের করার সবক , এটা সাহাবাদের সময় থেকেই শুরু হইছে ।

মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) যাকে উলামাদের ইমাম বলা হয় উনারো দাফন হইছে দেশের বাইরে । অন্য দেশে । উলামাদের উদাহরন দিছেন রাসূল(সাঃ) বৃষ্টির সাথে , বৃষ্টি চলাফেরাই করে ।

আর উম্মত হলো জমীনের মতন । বৃষ্টি যেই জমিনে বর্ষিত হয় সেই জমীন তাজা হয় , জমিন আবাদ হয় , জমিনে শাকসব্জি হয় , জমিনের সমস্ত ফায়দা জাহির হয় ।

এমনিভাবে ধনীরা তাদের মাল নিয়ে ঘোরাফেরা করে , যাকাত কোথায় দিতে হবে সহীহ জায়গা তাদের উপর খুলবে এরকম উলামারা যখন  ইলম নিয়ে উম্মতের মধ্যে ফিরবে তো ইলম কিভাবে দিতে হবে

কোথায় কিভাবে বন্টন করতে হবে সেটাও তাদের সামনে খুলবে । এজন্য উম্মতকে আজকে  জাহেলাত থেকে বের করার জন্য উলামাদের হরকত জরুরি ।

জাহেলাতে আজকে মানুষ অনেক বিদ্যাকে বিদ্যা মনে করছে অথচ আল্লাহর কালাম ই হচ্ছে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছে এলেম । আসমানী এলেম ই এলেম , বাকীগুলো রুজি অর্জনের বিভিন্ন রাস্তা ।

কিন্তু মানুষ তা বুঝতেছেনা , এই জাহেলাত থেকে উম্মতকে বের করতে হইলে উলামারা আসমানী এলেম নিয়ে , আমলের ফয়েদ নিয়ে  , ঈমানের ফয়েদ নিয়ে , আখেরাতের আজমত নিয়ে তাদের সামনে ঘোরাফেরা করতে হবে।

এভাবেই এলেমের বিস্তার হবে । এবং উম্মত জাহেলাত থেকে বের হবে  ।

উমার (রাঃ) বলেন যদি তিন জিনিস না হইতো দুনিয়ায় থাকা আমি পছন্দ করতাম না।

১। আল্লাহর রাস্তার নকল হরকত

২। লম্বা লম্বা সেজদাহ

৩। আর উলামাদের মজলিসে বসা

যেখানে থেকে সুন্দর জিনিস বাছাই করে নিয়ে নিজের জন্য উপকারী এলেম জমা করা যায় এই জিনিসই আমাকে দুনিয়াতে থাকার জন্য নিরুতসাহিত করে নাই ।

এলেম হইলো আমলের রাহবার । এজন্য আমলের জন্য এলেম ও শিখতে হবে  এবং যার কাছে যা এলেম আছে , বেশি কম হইতে পারে কিন্তু যার কাছে যা আসমানী এলেম আছে নকল হরকত করে বন্টন করার জন্য

উম্মতের মধ্যে ছড়িয়ে পরতে হবে । তৈরি আছি তো ভাই ইনশা আল্লাহ?

ইলম ও জিকিরের হাকিকত হলো আল্লাহ তায়ালার হুকুমকে আল্লাহ তায়ালার ধ্যানের সাথে পুরা করা । গাফেলতের সাথে যেই জিনিস হয় সেই জিনিসে ঐ আছরাত জাহের হয়না যা ধ্যানের সাথে হয় ।

এজন্য সকাল বিকালের তাসবিয়াহ ,সকাল বিকালের  জিকির এমনভাবে ধ্যানের সাথে করা যাতে আল্লাহর হুকুমের মধ্যে তার তাছির প্রকাশ পায় , আল্লাহ তায়ালার হুকুম , আল্লাহ তায়ালার আজমতের সাথে হয়।

এই হলো এলম ও জিকিরের হাকিকত ।রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বড় আখলাক নিয়ে আসছিলেন এবং সেই আখলাকের চর্চা ও পরিচয় বিভিন্ন ঘটনার দ্বারা রাসূল (সাঃ) আমাদের শিখাইয়া গেছেন ।

আমাদের ভেতরে দ্বীন এবং দ্বীনের মেহনতকারীদের ভেতরে কোন প্রতিশোধের জযবা হবেনা । রাসূল(সাঃ) এর ভেতরে প্রতিশোধের জযবা ছিলনা ।

নবুওয়াতি আলামতের মধ্যে এটা বড় জরুরি আলামত যত অত্যাচার করা হয় তত তার মধ্যে প্রতিপক্ষের জন্য দরদ মুহাব্বত মায়া আরো বৃদ্ধি পাইতে থাকে ।

জায়েদ ইবনে সানা এক ইহুদি আলেম উনি রাসূল(সাঃ) কে এই বিষয়টা পরীক্ষা করার জন্য রাসূল (সাঃ) কে করজ দিলেন ।এবং করজ দেয়ার সময় শেষ হবার আগেই , তিনদিন আগে আইসা রাসূল (সাঃ) এর কলার ধরলেন

উনাকে ধাক্কা দিলেন , বললেন তোমরা করজ ঠিকমত আদায় করনা , অনেক তালবাহানা করো , গুষ্ঠি তুলে গালি দিলেন ।

হযরত উমর (রাঃ) কাছে ছিলেন , বললেন ইয়া রাসূলুল্লাহ যদি আপনার নারাজির ভয় না থাকত আমি তার গর্দান উড়াইয়া দিতাম । তলোয়ার বের করলেন।

রাসূল (সাঃ) বললেন উমার এটা তুমি কেন করলা ? এটা তো তোমার করা ঠীক হয়নাই ।

উমারকে দমন করলেন । বললেন তুমি তাকে এটা বলতে পারতা ভাই তোমার করজ তুমি সুন্দরভাবে চাও ।’

আমাকে বলতে পারতা করজ থাকলে তো দিয়ে দেয়াই ভালো , এভাবে দুইজনের মধ্যে তুমি সুন্দর সালিশি করতে পারতা ।

যাও এটা যখন করছো এখন তার করজ তুমি আদায় করে দাও। পরে হয়তো উনাকে আলাদা ডেকে নিয়ে বলছেন করজের পর উনাকে বিশ ছক বেশি দিবা কেননা তুমি তাকে ধমক দিছো ভয় দেখাইছো ।

তো সায়েদ ইবনে সানাকে নিয়ে গিয়ে যখন করজ আদায় করলেন বিশ ছক বেশি দিতে চাইলেন , উনি বললেন আমার করজ তো আদায় হয়ে গেছে এই বিশ ছক কেনো ?

বলে এটা যে আমি তোমাকে ভয় দেখাইছি , ধমক দিছি তার জন্য ।আচ্ছা উমর চেনো আমাকে ? আমি তো জায়েদ ইবনে সানা । জায়েদ ইবনে সানা তো একজন বড় ইহুদী আলেম । নামে হয়তো চিনতেন ।

হ্যা আমি সেই ব্যক্তি । তাহলে তুমি একজন বড় আলেম হয়ে এমন কাজ করলা কেন?

নবুয়তি আলামত যাচাইয়ের জন্য আমি এটা করছি।

নবুয়তি আলামতের মধ্যে এটা আছে তার উপর যত অত্যাচার বৃদ্ধি করা হবে তার ধৈর্য আরো বৃদ্ধি পাবে , জাহেলত কখনো তার এলেমের উপর গালেব হইতে পারবেনা ,

তুমি স্বাক্ষী থাকো উমর এই বলে তিনি কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলেন ।

ভাই আমাদেরও নবুয়তি কাজ । আমাদের মধ্যে আজ যত এখতেলাফ , যত বিরোধ কেন হচ্ছে? আল্লাহ তায়ালার সাথে তায়াল্লুকের কমতির কারনে  আপোষে দ্বন্দ , আপোষের বিরুদ্ধ হইতাছে ।

এজন্য আমাদের আল্লাহ তায়ালার সাথে তায়াল্লুক ও বাড়াইতে হইবে  , প্রতিশোধের জযবা থেকে আমাদের মুক্ত হইতে হইবে ।

এবং ইকরামের মশক তো তখনই হয় যখন প্রতিপক্ষ থেকে বেএকরামী হয় । ইকরামীর সাথেই ইকরামীর মশক । যে আমাকে ইকরাম করলো আমিও তাকে ইকরাম করলাম এখানে তো পরিপূর্ন মশক হয়না।

কিন্তু আমাকে যে বেইকরামী করল , লাঞ্ছিত করল , অপমানিত করলো , গালি দিলো , ধৈর্য্য ধরে তাকে ইকরাম করতে পারা । ইকরামের দ্বারা দূরত্ব কমে , আর বেইকরামের সাথে  বেইকরাম বাড়ালে আরো দূরত্ব বাড়ে ।

অথচ দূরত্ব বাড়ানো নবুয়তি মেহনতের উছুল নয় ।

হযরত আবু বকর (রাঃ) কে একবার কেউ তিরষ্কার , গালমন্দ করতেছিলো রাসূল(সাঃ) কাছেই ছিলেন , মিটিমিটি হাসতে ছিলেন কিছু বলতে ছিলেন না ।

আবু বকর (রাঃ) খামোশ ই ছিলেন , একসময় একটা উত্তর দিলেন , নবী (সাঃ) রওনা হয়ে গেলেন । হযরত আবু বকর(রাঃ) বুঝতে পারলেন আল্লাহর রাসূল(সাঃ) রওনা হয়ে গেছেন এর মধ্যে কোন একটা ব্যাপার আছে।

উনিও ঝগড়া শেষ করলেন চলে আসলেন । ইয়া রাসূলুল্লাহ সে আমাকে গালমন্দ করতেছিলো , আপনিও কাছে ছিলেন , আপনিও কিছু বলতেছিলেন না , আমিও চুপ ছিলাম ।

যেই আমিও একটা বললাম আপনি সইরা আসলেন , দেখো যতক্ষন  তুমি জবাব দিতেছিলেনা ততক্ষন ফেরেশতা তোমার পক্ষ থেকে উত্তর দিতেছিল ।

আর যখন তুমি জবাব দিলা ফেরেশতা চলে গেল , ফেরেশতা চলে গেল মানে আল্লাহর মদদ ও চলে গেল । এজন্য আল্লাহর রাসূল ও চলে আসছে ।

কারন আল্লাহর শক্তির চেয়ে নিজের শক্তির উপর যারা আস্থা ভরসা বেশি সেই তো প্রতিশোধ নেয় , সেই না প্রতিকার করে , সেই না ঝগড়া করে ।

যেহেতু ফেরেশতার মদদের সাথে আল্লাহর মদদ তাহলে ফেরেশতাদের শক্তির চেয়ে নিজের শক্তির উপর একিন করা যাবে? কেননা ফেরেশতাদের শক্তি তো আল্লাহর থেকেই  , আল্লাহ তায়ালার সাহায্য সংগে থাকতেছে ।

এজন্যই প্রতিকার , প্রতিশোধ রাসূল(সাঃ) শিক্ষা দেন নাই । আমাদেরকেও নিযামুদ্দিনের হেদায়েত অনুযায়ী কাজ গুলো করে যেতে হবে । নিযামুদ্দিনের জামাত আসতেছে আমরা নুসরত করি , নিযামুদ্দিনে সফরও করি ।

এবং সেই অনুযায়ী আমরা মেহনত করবো  । এবং আমরা কোন বিষয়ে প্রতিশোধ নেবার জযবা করবোনা । আমরা সহীহ নকশায় নবুয়তী মেহনত করবো । আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে আমাদের মেহনত পরিপূর্নতায় পৌছবে।

আম্বিয়ায়ে (আঃ) এর কাজ নবুয়তী কাজ।নবীদের জন্যও আল্লাহ তাআলার মদদ শর্ত।আল্লাহ পাকের মদদের মাধ্যমেই আল্লাহ পাকের নবুয়তী কাজ চল্বে।নবুয়তের মেহনতের জন্যও আল্লাহ পাকের মদদ শর্ত।মদদ সাহায্য ছাড়া নবুয়তী কাজও হয়না।আল্লাহ পাকের সাহায্যের জন্য জামাআত শর্ত।জামাআতের সাথে আল্লাহ পাকের রহমত থাকে।

জামাআত কাকে বলে?

যখন তার একজন ইমাম হয়। দুইজন মানুষ যখন নামাজ পড়ে একজন ইমাম হয় আরেকজন মুক্তাদী হয়।যে একে দেখবে সেই বলবে এটি একটি জামাআত।আর যদি একা একা লোকজন নামাজ পড়ে,যাদের নামাজে ইমাম নেই তখন তাকে কেউ জামাআত বলবেনা।এজন্য সমস্ত বিষয়ে আল্লাহ পাকের সাহায্য জামাআতের সাথেই আছে।এজন্য আল্লাহ পাক নামাজের সাথে মাশোয়ারাকে উল্লেখ করেছেন।ঈমান,নামাজ এবং মাশোয়ারাকে আল্লাহ পাক একসংগে উল্লেখ করে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। একথা বুঝা যাচ্ছে যে,নামাজের মতই হবে মাশোয়ারার আহমিয়াত।নামাজের মধ্যে এমন একজন ইমাম বাকিরা মুক্তাদি থাকে সেরকমভাবে মাশোয়ারাতেও একজন ফয়সাল নিযুক্ত হবেন।বাকিরতা সবাই মুক্তাদির ন্যায় হবে।সারা দুনিয়ার এই মেহনতকে আল্লাহ পাক নিযামুদ্দীন মার্কাজের সাথে জুড়েছেন।নিযামুদ্দীন মার্কাজই হলো আমাদের মাশোয়ারার মূল কেন্দ্রবিন্দু।যেমন করে বিশ্বের সমস্ত দেশগুলো নিজামুদ্দীনের সাথে সম্পৃক্ত এবং নিজামুদ্দীনের মাশোয়ারায় চলছে,আমরাও ইন শা আল্লাহ সেখান থেকে মাশোয়ারা নিয়ে চলবো।

আল্লাহ পাক মাশোয়ারার আহমিয়াত বয়ান করেছেন আর মাশোয়ারা দ্বারাই ইস্তেমাইয়াত থাকা।

হাজ্বি আব্দুল ওয়াহাব সাহেব বলতেন এবং ইজতেমাতেও বলেছেন,তোমরা নিজামুদ্দীনে যাও,কারন সেখানে এ মহল আর জিনিস আল্লাহ পাক কায়েম করে দিয়েছেন,সেখানে যাওয়ার জন্য তিনি নিজেই তরগীব দিচ্ছেন।সেই তরগীব নিশ্চয়ই বড় হেকমত রাখে।আমরাও সেই তরগীব মোতাবেক নিজামুদ্দীনে যাবো ইন শা আল্লাহ।আল্লাহ পাক আমাদেরকে নিজামুদ্দীনে যাওয়া সহজ করে দেন।যেরকম অন্যান্য দেশকে আল্লাহপাক নিয়ে আসতেছেন।প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও এক সপ্তাহের জন্য হলেও যেমন মাশোয়ারায় আসে তেমনি আমরাও মাশোয়ারার তারিখ দিলে আসবো ইন শা আল্লাহ।

বাকি ভিসা নিয়ে আতংকিত হবার কিছুই নাই।বিসা আল্লাহ পাকের হাতে।আমেরিয়াক ইংল্যান্ড সহ সমস্ত দুনিয়ার দেশ থেকেই নিজামুদ্দীনে সাথীরা আসেন। নিজামুদ্দীনের মাসোয়ারা নিয়ে ই নিজ দেশে সেভাবে কাজ করেন।আমরাও মাশোয়ারা নিয়ে চলবো।পুরা দেশের হাল মাশোয়ারার উপর।

যখন ইজতেমাইয়াত হবে তখন আল্লাহ পাকের সাহায্য আসবে।ইজতেমাইয়াত মাশোয়ারা ছাড়া হয়না।মাশোয়ারাতে যখন আমি কোনো রায় দিবো সেই রায়ের উপর অটল না হওয়া। যার অন্তরে ফয়সালার পরেও রায় বাকি থাকে তার অন্তর ঈমান থেকে খালি হয়ে যাবে।জনৈক মুনাফিক সর্দার ,সে তার নিজের রায় বাকি রাখলেন।উহুদের ময়দানের যুদ্ধের মাশোয়ারা হচ্ছে।কেউ বলছে বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করতে (বাহাদুর মানুষ তো ঘরে থেকে যুদ্ধ করেনা বাইরেই যায়,সাহাবিদের মাঝেও কেউ কেউ তাই এই মত দিলেন)।রাসূল সাঃ সব রায় নেয়ার পর ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলেন এবং যুদ্ধের পোশাক পড়ে বের হয়ে গেলেন।তার এই বের হয়ে যাওয়াই যুদ্ধের জন্য বের হবার সিদ্ধান্তের জানান দিলো।মুনাফিক সর্দার এটা দেখে বললেন,আমার রায় যেহেতু মানা হয়নাই তাই আমি এই যুদ্ধে যাবোনা।ফয়সালা হয়ে গেছে,নবীজির ফয়সালা হয়েছে।এখন তো বের হতেই হবে।কিন্তু সে সিদ্ধান্ত মানলোনা এবং ঈমান থেকে খারিজ হয়ে গেলো।তার সংগে তার ৩০০ অনুসারী গেলো না।মাত্র ৭০০ নিয়ে গেলেন নবীজি যুদ্ধের ময়দানে।আল্লাহ পাকের রহমতে এই ৭০০লোকদের দ্বারাইও আল্লাহ পাক বিজয় দান করলেন।৭০০লোকদের মধ্যে ৫০ জনকে একটি গুহার নিকট পাহারায় নবীজি নিয়োজিত করেছিলেন।তাদের মধ্যে একজন জিম্মাদার বানালেন এবং হেদায়াত দিলেন কোনো অবস্থাতেই গুহা থেকে নেমে না আসতে।

যখন যুদ্ধে বিজয় চলে আসলো এবং সাহাবারা গণিমতের মাল জমা করছিলেন তখন তাদের মধ্যে এখতেলাফ দেখা দিলো।একপক্ষ বললো যুদ্ধ শেষ কেনো আমরা এখন নেমে আসবোনা,গণিমতের মাল জমা হচ্ছে আমরা কেন অংশীদার হবোনা!

কিন্তু আমির সাহেব বললেন,আমাকে হেদায়াত দেয়া আছে,যদি কোনো কারনে আমরা যুদ্ধে পরাজয় বরণ করি,আমাদের গায়ের গোশত পশু পাখিরা খেয়ে ফেলে তবুও তোমরা এ স্থান ত্যাগ করবানা।সুতরাং আমরা এখানেই অবস্থান করবো।এই সিদ্ধান্ত ১০ জন মেনে নিলেন বাকি ৪০ জন না মেনে গুহা থেকে সরে আসলেন।

ফলে আল্লাহ পাক মুসলমানদেরকে যে বিজয় দান করেছিলেন তার পরিবর্তে পরাজয়ের আশংকা তৈরি হলো।প্রতিপক্ষের একটি অংশ ঐ অংশ দিয়েই আসলো।তারা এসেই ১০ জন সাহাবাকে কতল করলেন।মুসলমানগন কেউই এই বিষয়ে সতর্ক ছিলোনা যে পিছন থেকেও হামলা হতে পারে।আচানক হামলায় শত্রুদের উভয় পক্ষ একত্রিত হলো এবং জয় পরাজয়ের দিকে মোড় নিলো।

এজন্য আমরা যখন মাসোয়ারায় জুড়বো তখন রায়ের উপর ইসরার করবোনা।আমির সাহেব যা বলবেন তার উপর জমে যাবো এবং আমার রায়কে ভুলে যাবো।যদি আমি মাশোয়ারার বিরোধ করি তবে আল্লাহর সাহায্যও মিটে যাবে।১০০০ জন থেকে ৩০০ চলে গেলো তাও আল্লাহ পাক বিজয় দিলেন কিন্তু ৭০০ জনের মধ্যে ৫০ জন থেকে মাত্র ৪০ জন চলে গেলো ফলে বিজয় পরাজয়ে মোড় নিলো।  আমিরের সাথে এখতেলাফ হয়ে গেলো,বিরোধ হয়ে গেলো। আল্লাহ পাকের সাহায্য উঠে গেলো।এজন্য আমাদেরকে আমিরের ফয়সালার উপর জমে যেতে হবে।

আমাদের মধ্যে যে বিরোধ হচ্ছে আমাদেরকে এটা হেকমতের সাথে বুঝাতে হবে যে সারাবিশ্ব যেভাবে নিজামুদ্দীনের মাশোয়ারা মেনে চলছে আমরাও নিজামুদ্দীনের এতায়াত করবো।কারো সংগে বিরোধে না যাওয়া।সকলকে হেকমতের সাথে এটা বুঝানো যে মাশোয়ারা মেনে চলার মধ্যেই আল্লাহ পাকের সাহায্য ও মেহনতের হেফাজত হবে।

 

মেহনতের এই রাস্তায় আগে বাড়ার কারন হচ্ছে কুরবানী। সমস্ত জগতই আমাদের জন্য মেহনতের ময়দান। আমরতা সিদ্ধান্ত নেই দ্বীনের মেহনত নিয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বো ইন শা আল্লাহ। রাসূল (সাঃ) এই উম্মতকে দাওয়াতের জিম্মাদারি দেয়ার কারনে সমস্ত দুনিয়াই আমাদের জিম্মায়ত এসে গেছে।সমস্ত মুসলমান একটি শরীরের মত।শরীরের কোনো অংগে যদি ব্যথা হয় পুরো শরীরই তার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ থেকে বুঝা গেলো যে আমেরিকায় যদি কোনো মুসলমান নামাজ না পড়ে এজন্য আমাদের সকলের ব্যথীত হওয়া চাই এবং সকলেই তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।সমস্ত দুনিয়ার মানুষের কাছে দাওয়াত দেয়ার জন্য আমরা নিয়াত করি ইন শা আল্লাহ।

 

বায়াত এটি একটি প্রথা।সাহাবাগন রাসূল (সাঃ) ের কাছে বায়াত হয়েছেন,আমরাও তেমনি আজকে এই সিদ্ধান্তের উপর বায়াত হবো এবং সেই সিদ্ধান্তকে পুরা করবো।বায়াতের মজমার মধ্যে রাসূল সাঃ বায়াত দিচ্ছিলেন।তার মধ্যে একজন বলে উঠলো,আমি বায়াত হবো কিন্তু জিহাদ করবো না,জাকাতও দিবোনা।রাসূল সাঃ তার হাত নামিয়ে দিলেন এবং বললেন তুমি জিহাদও করবেনা জাকাতও দিবেনা তবে কিভাবে তুমি জান্নাতে যাবে? তখন অঈ লোক বুঝতে পারলেন এবং সবকিছু করবেন বলে স্বীকার করলেন।এরপর রাসূল সাঃ তাকে বায়াত করলেন।

নবীজী বলেছেন আমার পরে তোমরা অন্যকে প্রাধান্য দাও তবু তোমরা দ্বীন ও দ্বীনের নুসরতকে ছাড়বেনা।আমরাও এই কথার উপর বায়াত নিবো যে আমরাও কোন ও অবস্থাতেই  দ্বীন ও দ্বীনের নুসরৎ থেকে পিছিয়ে যাবোনা। হযরতজ্বি ইলিয়াস সাব রহঃ বায়াতের মধ্যে একথাও বলতেন যে, আমাদের জিন্দেগী সুন্নতের উপর আসবে এই লক্ষ্যের উপরে বায়াত।এজন্য আমাদের জিন্দেগী সুন্নতের উপরে উঠবে এজন্যও আমরা আজম করি। বায়াতের মধ্যে মাকসাদ ছিলো আল্লাহ পাকের রাস্তায় হিজরত ও দ্বীনের জন্য নুসরত ।

দ্বীনের জন্য আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, নুসরত করবে এবং সর্বাবস্থায় দ্বীনের মেহনতের সংগে থাকবে। কোনো অবস্থাতেই দ্বীনের মেহনত থেকে পিছে হটবেনা।দ্বীনের মেহনতের জন্য আগে বাড়বে।এই সমস্ত মাকসাদ সাহাবা (রাঃ) বলতেন।আমাদের ভিতরেও যেনো এই আজমগুলো চলে আসে।আমরা আমাদের মাকসাদ জেনে নেই এবং সিদ্ধান্ত নেই।

এরপর হযরতজ্বি মাওলানা সাদ সাহেব হাফিঃ সকলকে বায়াত করান।

বায়াতের পরে হযরত জুম্মার নামাজের ঈমামতি করেন । জুম্মার নামাজের পরে কিছুক্ষণ আলোচনা করেন

 

বয়ানে মাওলানা সা’দ কান্ধলভী দাবি করেন তিনি তার পূর্বের বক্তব্য থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাজ হলো বয়ান করা। বয়ানে অনেক সময় আমাদের ভুল হয়ে যায়।আমি আমার বয়ানের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম যে ভুলের কথা বলেছেন তার থেকে রুজুর করছি।

তাবলিগের সাথীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরাম আমাদের মোহসেন। তারা যদি কখনো কোনো কারণে আমাদের ভুল ধরেন তাহলে মনে করতে হবে তারা আমাদের উপর ইহসান করছেন।

ওলামায়ে কেরাম যে কথা বলবেন তাতে আমাদের সংশোধন করবে।এজন্য  তাদের কথা মেনে চলতে হবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় তাবলিগের কারগুজারি বয়ানে মাওলানা সাদ’র বিতর্কিত কিছু বক্তব্যের কারণে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে তাকে প্রথমে সতর্ক কারা হয়। পরে বক্তব্য প্রত্যাহার এবং প্রকাশ্যে ভুলের স্বীকারোক্তির জন্য বলা হয়।

এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্যের জেরে সৃষ্ট দ্বন্ধে মাওলানা ইব্রাহিম দেওলভি নিজামুদ্দিন ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনায় সমাধানের জন্য মাওলানা সাদকে আহ্বান করা। কিন্তু তিনি যথাযথ পন্থায় তা না করায় ওলামায়ে কেরাম তাকে বয়কট করেন।

বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামও এই সংকট নিরসনের চেষ্টায় দিল্লির নিজামুদ্দিন ও দেওলভ সফর করে সমাধানের চেষ্টা করেন।

সর্বশেষ ওলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইজতেমায় মাওলানা সাদ’র অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এ নিয়ে দেশে তুমুল বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় মাওলানা সাদ’র ইজতেমায় অংশ না নিয়ে দিল্লি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জানা যায়, আগামীকাল শনিবার মাওলানা সা’দ দিল্লি ফিরে যাবেন। শনিবার বেলা ১১টায় তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।

 

জুম্মার পরের বয়ানের অডিও লিংক 

https://www.facebook.com/Khutbath/videos/1934062296810603/

Archives

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031