মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
১। কেউ নগদ টাকা বিতরণ করবেন না। নগদ টাকা বিতরণ করলে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হবে। আপনি খাবার কিনে দিলে যে পরিমাণ মানুষকে সাহায্য করতে পারবেন নগদ টাকা দিয়ে তার সিকিভাগও করতে পারবেন না। ধরুণ আপনি এক লাখ টাকা নগদ বিতরণ করবেন, তাহলে আপনি পাচশত করে টাকা দিলেও মাত্র দুইশত জনকে দিতে পারবেন। কিন্তু এক লাখ টাকার খাবার বিতরণ করলে ৫০০০ মানুষকে এক বেলা খাওয়ানো সম্ভব। সুতারাং দয়া করে কেউ নগদ টাকা বিতরণ করবেন না।
২। নগদ টাকা দিলে সেই টাকা দিয়ে হোটেল থেকে কিনে খেতে হবে। আর হোটেল থেকে একশত টাকায় যা কিনতে পারা যায় তা নিজেরা রান্না করলে ২৫ টাকা খরচ পরবে। সুতারাং সহজে ও স্বল্প সময়ে কাজ সারার নিয়তে কেউ নগদ দিয়ে দিয়ে অসহায় মাযলুমদের হক নষ্ট করবেন না।
৩। নগদ টাকা দিলে বাজার করে রান্না করে খাবে সেই অবস্থা ৭০ শতাংশ মুহাযির ভাই বোনদের নেই। কারণ রান্না করতে গেলে হাড়ি পাতিলসহ আরও যে সব জিনিসপত্র দরকার সেগুলোর কোনটাই তাদের কাছে নেই। তাই তারা নিজেরা রান্না করে খেতে পারবে না, আর হোটল থেকে খাবার কিনে খেলে টাকার অনেক অপচয় হবে।
৪। নগদ টাকা বিতরণ করতে গেলে আপনার স্থানীয় টাউট বাটপারদের কবলে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। আপনি নিজে যদিও টাউট বাটপারের কবলে না পরেন, আপনি টাকা দিয়ে চলে আসার পরে তাদের থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সমূহ সম্ভবনা আছে। কিন্তু স্থানীয় সন্ত্রাসীরা আপনার ডাল ভাতের উপর হামলা করবে না এটা অনেকটাই নিশ্চিত।
৫। যারা ভাবছেন ওখানে গিয়ে রান্না করবেন কিভাবে? তাদের জন্য এক কথায় উত্তর অনেকে কক্সবাজার ট্যুরে যেয়ে রান্না করে কিভাবে? আপনি চাইলে ডেকোরেশন সেন্টার থেকে হাড়ি পাতিল ভাড়া নিয়ে যেকোন জায়গায় পিকনিক করার মত করে রান্না করতে পারবেন। তবে বিশ, ত্রিশ কেজি চাল এক সঙ্গে রান্না করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই অনেক বেশী পরিমাণ চাল একসঙ্গে রান্না করার অভিজ্ঞতা আছে এমন কাউকে সাথে নিতে হবে। তাবলীগের সাথী ভাইয়েরা এ ব্যাপারে অনেক সহায়ক হতে পারে। রান্না সবজি খিচুড়িও হতে পারে, বা মাংস দিয়েও হতে পারে।
৬। খাবার বিতরণও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ পাচশত প্যাকেট কোথাও নিয়ে গেলে পাচ হাজার মানুষ ছূটে আসবে। এই ব্যাপারে তাই খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেখানে খাবার বিতরণ করবেন সেখানে আগে থেকে একবার রেকি করে আসুন। দেখুন পরিস্থিতি কেমন। খুব দ্রুত খাবার দিয়ে চলে আসুন। স্থানীয় কারও সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করুণ। অথবা রাস্তার ধারেও অনেক নতুন আগত রোহিঙ্গা বসে আছে তাদেরকেও দিতে পারেন। অন্তত পক্ষে খাবার বিতরণ করলে স্থানীয় মাস্তান বা টাউট বাটপার কোন হেনস্থা করবে না। এবং প্রশাসনও খাবার দিতে কোন আপত্তি করবে না। তবে খেয়াল রাখবেন কোন ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার ছাড়া খাবার দিন, প্রদর্শনেচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করুণ।
৭। ক্যাম্প আছে চারটি। কুতুপালং, লেদা, বালুখালি, নয়াপাড়া। নতুন আরেকটি ক্যাম্প হয়েছে থায়ংখালিতে। সবগুলো ক্যাম্পেই অনেক লোক। তাই যে কোন একটি বাছাই করুণ। সীমান্তের জিরো পয়েন্টেও কিছু মানুষ আছে। তাদেরকেও সাহায্য করতে পারেন।
৮। নিঃসন্দেহে এখন সবচেয়ে বেশী দরকার রান্না করা খাবার। এর পরেই দরকার পলিথিন বা তির্পল। তবে জাতিসংঘ থেকে তির্পল এবং রশি দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও অনেকে পাচ্ছে না। তাই যাদের সুযোগ আগে তারা তির্পল বা পলিথিন কিনে নিয়ে যেতে পারেন। ক্যাম্পে যারা আছে আলহামদুলিল্লাহ্ তাদের পানির সমস্যা নেই, তবে জিরো পয়েন্টে কেউ গেলে অবশ্যই পানির বোতল নিয়ে যাবেন।