মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

নওমুসলিমদের সাক্ষাৎকার [পর্ব-১৮] :: নওমুসলিমা ডাক্তার উর্মির সাক্ষাৎকার


আরমুগানের মাধ্যমে আমি আমার বোনদের কাছে একটি দরখাস্ত পেশ করতে চাই। তা হলো একজন মুসলমানের দায়িত্ব ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল মানুষের নিকট ইসলামের পয়গাম পৌঁছানোও তার দায়িত্ব। আর এক্ষেত্রে পুরুষের সাথে সাথে নারীরাও সমানভাবে আদিষ্ট। বরং ইসলামী ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, সর্বপ্রথম ইসলামের দাওয়াত গ্রহণকারী ভাগ্যবানদের নূরানী কাফেলায় পুরুষদের চেয়ে নারীরা এগিয়ে। গারে হেরায় ওহী অবতরণের সূচনালগ্নে ঘনিষ্ঠ বন্ধুজন এবং নিকটতম মানুষের উপস্থিতিতেও হযরত নবী عليه السلام -এর দাওয়াতের সর্বপ্রথম শ্রোতা ছিলেন তারই জীবনসঙ্গিনী হযরত খাদীজা রাযি. এ ঘটনা একথারই প্রমাণ বহন করে যে, নারীদেরও আপন দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এমনকি পুরুষদের চেয়েও বেশী। দাওয়াতের ময়দানে অমুসলিম সম্প্রদায় বিশেষত পশ্চিমা সমাজের অবস্থা দর্শনে তারা এ ধ্র“বসত্য গভীরভাবে অনুধাবনেও সক্ষম হবেন যে, বস্তুবাদিতা ও নগ্নতার বিষে আক্রান্ত যে পশ্চিমা সংস্কৃতির আলোক ঝলকানীতে আজ আমরা প্রভাবিত হচ্ছি এবং তাকে উন্নতির সোপান মনে করছি পশ্চিমা সমাজ তাদের নোংরা সংস্কৃতির দরুণ আজ কতটা অধঃপতিত। অস্থিরতা ও অশান্তির মরণ যন্ত্রণায় ফাঁসির মঞ্চে দন্ডায়মান এ মানুষগুলো আজ ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য কতটা তৃষ্ণার্ত। এবং তারা এটাও অনুধাবন করতে পারবেন যে, ইসলামের মহান দৌলত দান করে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর কত বড় অনুগ্রহ করেছেন।


আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি
ডাক্তার সাহেবা: ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আপনি বড় সুসময়ে এসে পড়েছেন। আব্বাজানের কাছে আপনার আলোচনা শুনছিলাম। আব্বু বলছিলেন আরমুগানের জন্য আপনার একটি ইন্টারভিউ নিতে। আপনি হয়তো অবগত আছেন, আমাদের ফুলাত থেকে আরমুগান নামে একটি উর্দূ সাময়িকী বের হয়। যেখানে ইসলাম গ্রহণকারী ভাগ্যবান নওমুসলিমদের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়ে থাকে।
ডাক্তার সাহেবা: হ্যাঁ, কিছু সংখ্যা আমিও দেখেছি। তবে প্রিয় বেটি! আশ্চর্য হচ্ছি যে তুমি আমাকে নওমুসলিম সম্বোধন করছ, অথচ আমি ১০ বছর পূর্বে কালিমা পাঠ করে বাহ্যিকভাবে মুসলমান হয়েছি, আর প্রকৃত অর্থে এবং মানসিকভাবে তো জন্ম থেকেই আমি মুসলমান।

নওমুসলিমদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসুন

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: জি, হ্যাঁ, আপনি যথার্থই বলেছেন। কেননা প্রত্যেক শিশুই ইসলামী স্বভাবের উপর জন্মলাভ করে..।
ডাক্তার সাহেবা: সাধারণভাবে প্রত্যেক শিশুই ইসলামী স্বভাবের উপর জন্মলাভ করে…। এটা তো আমাদের নবী সা.-এর পবিত্র এরশাদ। আর তাঁর এরশাদে কি কারো সন্দেহ থাকতে পারে? আমাদের পরিবার বিশেষত পিতাজী তো শুরু থেকেই ইসলামী মনোভাবাপন্ন ছিলেন এবং মুসলমান হওয়ার পূর্ব হতেই ইসলামী জীবনব্যবস্থায় অনুপ্রাণিত ছিলেন।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: প্রথমেই আপনার পরিচয় জানতে চাইব।
ডাক্তার সাহেবা: আমার নাম উর্মী। পিতা ডাক্তার অনীল মোদী। সোশালিষ্ট পার্টির চেয়ারম্যান। পরলোকগত পিলু মোদীর আপন ভাতিজা তিনি। পিতাজী উঁচুমানের একজন ফিজিশিয়ান ছিলেন। আমেরিকা থেকে গউ করেছিলেন। বন্ধু-বান্ধব এবং পরিচিতজনদের অনুরোধে তিনি মিরাঠ এসে আবাস গড়েন এবং ব্যাংকষ্ট্রীটে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ক্লিনিক শুরু করেন। আমার ছোট দুটি ভাই আছে। একজনের নাম তারেক আরেকজন শারেক।
দ্বাদশশ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা আমি বিজাপুরেই করেছি। এরপর মিরাঠে এসে মিরাঠ কলেজে ইঝঈধঢ়রঃধষ তে ভর্তি হই। ইঝঈধঢ়. শেষ করে চগঞ করেছি। এরপর মাও. আজাদ মেডিকেল কলেজে গইইঝ -এর ৩ বছরের কোর্স সমাপ্ত করে লন্ডন নিবাসী সহোদরার অনুরোধে লন্ডনে চলে আসি। সেখানেই গইইঝ এবং পরবর্তিতে গঝ করার সুযোগ হয়। দিল্লীর এক অভিজাত সাইয়্যেদ বংশের ডাক্তার সাইয়্যেদ আমেরের সাথে যিনি একজন উঁচু মানের নিউরোলোজিস্ট আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর লক্ষ্মৌ-এর সঞ্চয়গান্ধী চএও তে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের দু’জনেরই চাকরি হয়ে যায়। স্বামী স্ত্রী উভয়েই আমরা ‘প্রফেসর’ পদে উন্নীত হই। আমার যে সহোদরা লন্ডন নিবাসী তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। তার বারংবারের অনুরোধ ছিল আমরা যেন লন্ডনে সেটেল হই। ফলে তার পীড়াপীড়িতে ৩ বছর পূর্বে ২০০১ সালে আমরা স্বামী-স্ত্রী চাকুরী ছেড়ে দিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমাই। ছোট ভাই শারেকের সাথে আমার ননদের বিয়ে উপলক্ষে বর্তমানে হিন্দুস্তানে অবস্থান করছি।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আপনার ইসলাম গ্রহণের ব্যপারে বলুন!
ডাক্তার সাহেবা: মূলত আমার পিতা পূর্ব থেকেই ইসলামী জীবনব্যবস্থায় অত্যন্ত প্রভাবিত ছিলেন। বিরিয়ানী, কোরমা ও কাবারের প্রেমিক ছিলেন তিনি। তিনি শুধু উর্দূই জানতেন না ফার্সির ব্যাপারেও তার যথেষ্ট দখল ছিল। বংশ পরম্পরায় তিনি হিন্দু ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এতদ্বসত্বেও তিনি আমার নাম উর্মি আর ভাইদের নাম শারেক ও তারেক রেখে ছিলেন। নিজের নাম লিখতেন ডাক্তার অনীল ওয়ারিস মোদী। প্রথমত আমাদের নিবাস ছিল বিজাপুরে। বিজাপুরসহ দক্ষিণ হিন্দুস্তানের এলাকাগুলোর পরিবেশ ছিল অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন। এ কারণেই যখন আমরা মিরাঠে এলাম তখন এখানকার নোংরা পরিবেশে বিস্মিত না হয়ে পারলাম না। বিশেষত মিরাঠ কলেজে অধ্যয়নরত গ্রাম্য জাট এবং চৌধুরী বংশের ছেলেগুলো ছিল অত্যন্ত গোঁয়ার এবং নির্লজ্জ প্রকৃতির।

অসভ্যতায় তারা এতটাই উচ্ছন্নে গিয়েছিল যে আমাকে কলেজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হলো। মনে মনে অন্য কলেজ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। কিন্তু আল্লাহর ফয়সালা ছিল ভিন্ন। তিনি আমাকে এই নোংরা পরিবেশেই হেদায়াত দিতে চাচ্ছিলেন। ঘটনা এই যে, এই অসভ্য ছেলেগুলোর মাঝে কিছু সভ্য ও সম্ভ্রান্ত ছেলেও ছিল। যাদের অন্যতম ছিলেন আপনার পিতা (মাও. কালীম সাহেব) যার ভদ্রতা এবং প্রগাঢ় ব্যক্তিত্বে আমাদের সকল সাথী এমনকি শিক্ষকরা পর্যন্ত প্রভাবিত ছিলেন। সবাই তাকে শ্রদ্ধাভরে কালীম ভাই বলে ডাকত। এমন দৃশ্য তো অনেকবারই দেখেছি, ছেলেরা সিনেমার গল্প করছে, ইতিমধ্যে কালীম ভাই এসে উপস্থিত হয়েছেন তো সাথে সাথে তারা নিশ্চুপ হয়ে গেছে। ক্লাসে তিনি মেধাবী ছাত্র হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর কণ্ঠস্বরও ছিল চমৎকার। কাব্য-সাহিত্যের প্রতিও তাঁর ঝোঁক ছিল। এমনকি চিত্রাঙ্কনের ক্ষেত্রেও তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। আমাদের কলেজে একবার প্রদেশব্যাপী একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। কালীম ভাই এতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
যাই হোক কলেজের এই নোংরা পরিবেশ দর্শনে তিনি নিজেও অত্যন্ত মর্মাহত ছিলেন। বাসায় আমি পিতাজীর কাছে কালীম ভাইয়ের শারাফাতের তারীফ করতাম। পিতাজী তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলতেন। কালীম ভাই প্রতিদিন নিজ গ্রাম ফুলাত থেকে ট্রেনযোগে খাতুলি হয়ে মিরাঠ কলেজে আসা যাওয়া করতেন। কখনো কখনো বেগম পুল থেকে পায়ে হেঁটে আমাদের বাসার সামনে দিয়েই কলেজে যেতেন। একদিন সকালবেলা তিনি আমদের বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তাকে পিতাজীর সাথে সাক্ষাৎ করালাম। পিতাজী যেমন কালীম ভাইয়ের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হলেন, কালীম ভাইও পিতাজীকে দেখে প্রভাবিত হলেন।

আমাদের ক্লাসের দুষ্টু ছেলেগুলোর অধিকাংশই মিরাঠ কলেজের হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত। ইতোমধ্যে রাখিবন্ধন উৎসব এসে গেল। একদিন সকাল সাড়ে আটটায় কালীম ভাই আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে আব্বাকে বললেন, বোন উর্মি ক্লাসের নোংরা পরিবেশে আমরা হাঁপিয়ে উঠছি। চল কিছু রাখি সংগ্রহ করে হোস্টেলে যাই। আমি ২৫টি রাখি সংগ্রহ করে তার সঙ্গে হোস্টেলে যাই। একজন জাট এবং চৌধুরী ছাত্রকে ভাইয়া ভাইয়া বলে রাখি বেঁধে দেই। তারা অত্যন্ত শরমিন্দা হয় এবং আমাদের ক্লাসের পরিবেশ বদলে যায়। প্রজ্ঞাপূর্ণ এই কৌশল দর্শনে আমি অত্যন্ত প্রভাবিত হলাম। আব্বু আম্মুকেও ঘটনাটি জানালাম। ফলে কালীম ভাইয়ের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধাবোধ আরো বৃদ্ধি পেল।

আমি উর্দূ ভাষা শিখতে আগ্রহী ছিলাম। পিতাজীও চাচ্ছিলেন আমি যেন উর্দু শিখে নিই। উর্দু ভাষার প্রতি আব্বাজানের ধারণা ছিল বেশ উঁচু। কখনো তো অত্যন্ত জোর দিয়ে বলতেন যে, উর্দু হলো উত্তম আদর্শ অনুপম শিষ্টাচারের সম্ভার। আমি কালীম ভাইকে অনুরোধ করলাম আমাকে উর্দু পড়াতে। কিন্তু তিনি ব্যস্ততার দরুন অপারগতা প্রকাশ করলেন। তবে তিনি আমার উর্দু পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। উর্দু ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী মাও. মাসরুর সাহেব ছিলেন আমার শিক্ষক। তিনি উর্দুতে গঅ করেছিলেন। লাইব্রেরীরুমে প্রতিদিন আধা ঘণ্টা আমি তার কাছে উর্দু পড়তে লাগলাম। স্বল্প সময়েই আমি উর্দুভাষা আত্মস্থ করে ফেললাম। এরপর কালীম ভাই আমাকে ‘ইসলাম কিয়া হ্যায়’ এবং ‘মরনে কে বাদ কিয়া হোগা’ কিতাব দুটি পড়তে দিলেন। কিতাব দুটি আমার অন্তরজগতকে দারুণভাবে নাড়া দিল। মরণে কে বাদ কিয়া হোগা- তো আমার চোখের ঘুমই কেড়ে নিল। মৃত্যুপরবর্তী শাস্তির ব্যপারে আমি দারুন শংকিত হয়ে পড়লাম।

কালীম ভাইকে আমি আমার অবস্থা জানালাম। তিনি আমাকে মৃত্যুপরবর্তী জীবনে শান্তি লাভের জন্য ঈমান এনে মুসলমান হতে বললেন। আমি পিতাজীর সাথে পরামর্শ করলাম। পিতাজী আমাকে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে বললেন এবং এ-ও বললেন যে, তুমি এখন বড় হয়েছো। নিজের ব্যপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার তোমার রয়েছে। ১৯৭৪ সালের ১লা জানুয়ারী আমি কলেজের লাইব্রেরী কক্ষে কালীম ভাইয়ের নিকট ইসলাম গ্রহণ করি। আলহামদুলিল্লাহ! পিতাজী আমার এ সিদ্ধান্তে মোটেও আপত্তি করেন নি।

১৯৭৯ সালে আমি আমার সহোদরার অনুরোধে লন্ডনে চলে যাই এবং সেখানে গঝ করে ১৯৮৪ সালে মিরাঠে ফিরে আসি। পিতাজী কালীম ভাইকে আমার বিবাহের পাত্র নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি আমার জন্য উপযুক্ত সম্বন্ধই নির্বাচন করেছেন। দিল্লীর এক অভিজাত সাইয়্যেদ বংশে আমার বিয়ে হয়েছে। আমার স্বামী ডাক্তার আমের ডি এম। একজন উঁচুমানের নিউরোলোজিস্ট। তিনি একজন দ্বীনদার সাচ্চা ইনসান। যেখানেই যান মানুষের শ্রদ্ধা এবং ভক্তি তাকে আপন করে নেয়। সবখানেই লোকরা তাঁর প্রগাঢ় ব্যক্তিতে বিমুগ্ধ হয়। নিজ পেশায় তিনি একজন সফল মানুষ।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: ইসলাম গ্রহণের পর আপনার অনুভূতি কেমন?
ডাক্তার সাহেবা: মূলত যেমনটি আমি শুরুতে বলেছি যে, আমি এবং আমার পরিবার বিশেষত পিতাজী তো স্বভাবগতভাবে মুসলমানই ছিলেন। আর এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর বিশেষত আমার অনুভূতি প্রত্যুষে হারিয়ে যাওয়া সেই বালকের মত সন্ধ্যাবেলায় যে ফিরে আসে আপন ঘরে। আর তার ক্ষত হৃদয়ে বয়ে যায় শান্তির সুবাতাস।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: লন্ডনের পাশ্চাত্য সমাজ ব্যবস্থায় একজন মুসলমান হিসাবে আপনি কেমন অনুভব করছেন?
ডাক্তার সাহেবা: আলহামদুলিল্লাহ! লন্ডনে আসার পর আমরা শরীয়তের বিধি-বিধান মেনে চলার ক্ষেত্রে আরো অধিক সতর্ক হয়েছি। আমার স্বামী এখানে এসেই দাড়ি রেখেছেন। স্বয়ং আমার অনুভূতি হলো যে, পর্দাহীনতা বিশেষত স্বল্পবসনা কিংবা অনাবৃত থাকার ব্যপারটি আমি অত্যন্ত ঘৃণা করি। আমরা উভয়েই আলহামদুলিল্লাহ নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ি। এছাড়া ডাক্তারী পেশায় রোগীর সুস্থতা আল্লাহর ক্ষমতাধীন হওয়ার বিষয়টি আমরা এখন দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি। আমাদের এখানে অনেক মুসলমান রোগীও আসে। ঙঞ রুমে রোগীকে বিছানায় শুইয়ে প্রথমে আমি তাকে কালেমা পড়াই এরপর সান্ত¡নাবাণী শুনাই এবং এটাও বুঝাই যে, অসুস্থতার দরুণ মৃত্যু এসে যাওয়াটা অসম্ভব কিছু নয়। সুতরাং আন্তরিকভাবে আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ করুন। অমুসলিম রোগীদের জন্য আমাদের এখানে একটি রুহানী চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। আমাদের উভয়ের টেবিলেই প্রচুর পরিমাণে ইসলামী ষরঃবৎধঃঁৎব (প্রবন্ধ-নিবন্ধ) থাকে। রোগীরা নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে থাকেন। পাশ্চাত্য সমাজব্যবস্থাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। লজ্জাহীনতা এবং বস্তুবাদের বিষে আক্রান্ত পশ্চিমাবিশ্ব আজ চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত এবং সীমাহীন অস্থিরতায় নিমজ্জিত। সেখানে অধিকাংশ মানুষ এখন জীবনের স্বাদ ও শান্তি হারিয়ে আত্মহননের মঞ্চে দন্ডায়মান। আমি মনে করি তাদের এই হাতাশা ও অস্থিরতার চিকিৎসা কেবল ইসলামের পবিত্র শিক্ষার মাঝেই নিহিত রয়েছে।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: অমুসলিম রোগীদের ইসলামী ষরঃবৎধঃঁৎব প্রদানে কোনো দাওয়াতী ফলাফল পরিলক্ষিত হচ্ছে?
ডাক্তার সাহেবা: আলহামদুলিল্লাহ আমাদের এই দাওয়াতী কর্মের ফলস্বরূপ গত ৩ বছরে ২৭৩ জন অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করেছে। আমার শ্বশুর হযরত মাও. সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর হাতে বাইয়াত ছিলেন। তিনি দিল্লী থেকে আমেরিকা চলে এসেছিলেন। আমার স্বামীও হযরতের এক খলীফা মাও. ওলী আদম সাহেবের সাথে বাইয়াতের সম্পর্ক রাখতেন। আমরা আমাদের লন্ডনে অবস্থানের উদ্দেশ্য ইসলামের দাওয়াত মনে করি। সবচেয়ে বেশী আনন্দিত হই একথা ভেবে যে, আমার লন্ডন নিবাসী সহোদরা যিনি আমাকে কাছে পাওয়ার ব্যাপারে আমরা পিতা মাতার চাইতেও বেশী উদগ্রীব ছিলেনÑ তিনি আমাদের লন্ডনে আগমনের মাস দুয়েক পর ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং বড় ঈর্ষণীয় ঈমানী হালতে কালেমা পাঠরত অবস্থায় জায়নামাযের উপর তার ইন্তেকাল হয়েছে।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: ইসলাম গ্রহণের পরেও কি আপনি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছেন?
ডাক্তার সাহেবা: আলহামদুলিল্লাহ! কালীম ভাই আমাকে এ বিষয়ে বেশ জোর দিয়েছেন যেন আমি একটি তালিকা তৈরী করে প্রতিদিন ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা অব্যাহত রাখি। আমারও ইচ্ছা যে গড়ে প্রতিদিন ৫০ পৃষ্ঠা পড়ব। তবে একথা ঠিক যে ৫০ পৃষ্ঠার নেসাব এখনও পর্যন্ত পুরা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। কিন্তু আমি যদি বলি যে, বিগত ৩ বছরে প্রতিদিন গড়ে ২৫ পৃষ্ঠার কম পড়িনি তবে ইনশাআল্লাহÑ এ কথা সন্দেহাতীতভাবেই সত্য হবে। এ যাবত আমি শতাধিক সিরাতের কিতাব পাঠ করেছি। হযরত মাও. আশরাফ আলী থানভী এবং হযরত মাও. সাইয়্যেদ আবুর হাসান নদভী রহ.-এর প্রায় সকল কিতাবই আমি পড়ে ফেলেছি। মওদুদী সাহেবের লেখনীও আমার পাঠ্য তালিকা থেকে বাদ পড়েনি। এছাড়া লন্ডনে প্রায়শই নতুন নতুন ইসলামী কিতাব বাজারে আসে এগুলোও আমাদের খোরাক জোগায়। এমনকি খৃস্টানদের ছাপানো কিতাবগুলোও আমাদের দৃষ্টি এড়ায় না।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: মাশাআল্লাহ! তাহলে তো আপনি ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক পৃষ্ঠা পড়ে ফেলেছেন।
ডাক্তার সাহেবা: আলহামদুলিল্লাহ! আমার দৈনন্দিনের পাঠের গড় পরিমাণ ২৫ পৃষ্ঠার কম হবে না। এ হিসাবে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠা হয়ে যায়। প্রথমদিকে মুতালাআর ব্যপারে আমি ততটা আগ্রহী ছিলাম না। কালীম ভাই আমাকে জোর দিলেন যে মন না চাইলেও আপনাকে নেসাব পুরা করতেই হবে। কালীম ভাইয়ের এ নির্দেশকে একজন কল্যাণকামীর আদেশ মনে করেই প্রথমে কয়েক মাস আমি মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই মুতালাআ করতাম এখন আমার অবস্থা হলো খানা না খেলেও এতটা ক্ষুধার্ত হই না মুতলাআ না করলে যতটা তৃষ্ণার্ত হই। কখনো তো এমনও হয় যে, নতুন কিতাব না পেলে পুরাতন কিতাবই দ্বিতীয়বার পড়ি। এভাবেই আমার কাছে তৈরি হয়েছে কিতাবের একটি বিশাল সম্ভার আর তার কিছু অংশ স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়েছে।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আপনার সন্তানাদি কজন? তারা কোথায় পড়াশোনা করছে?
ডাক্তার সাহেবা: আল্লাহর রহমতে আমার সন্তান তিনজন। বড়জনের নাম হাসান আমের। ছোটজনের নাম হুসাইন আমের আর মেয়েটির নাম ফাতেমা যাহরা। ছেলেরা মাদরাসায় পড়াশোনা করছে। বড় ছেলে হাসানের বয়স ১০ পেরিয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই সে হিফজ সম্পন্ন করেছে। এ বছর সে আলিম প্রথম বর্ষে পড়ছে। ছোট ছেলে হুসাইনের বয়স নয় বছর। তার ষোল পারা হিফজ হয়েছে। আর মেয়ে ফাতেমা একটি ইসলামী স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে। ওর বাবা ঘরেই ওকে কোরআন শরীফ পড়িয়েছেন। আমরা দুজন প্রোগ্রাম করেছি যে আমাদের সন্তানদের আমরা রোজগারের ফিকির থেকে সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত করে দিব। যাতে করে তারা তাদের জীবনকে সম্পূর্ণ রূপে দাওয়াতের জন্য ওয়াকফ করতে পারে।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আপনি আপনার পিতা-মাতার ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে ফিকির করেছেন?
ডাক্তার সাহেবা: আলহামদুলিল্লাহ! যে বছর আমি গঝঈ সমাপ্ত করে হিন্দুস্তানে ফিরে আসি সে বছরই কালীম ভাইকে পিতাজীর উপর মেহনত করতে অনুরোধ করি। কালীম ভাই পিতাজীকে বেশ কিছু কিতাব দিলেন। এরমধ্যে সাইয়্যেদ আলী মিয়া নদভীর রহ. নবীয়ে রহমত তাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করল। পিতাজী যদিও আগে থেকেই ইসলামী আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তথাপি জীবনের দীর্ঘসময় একটি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার দরুন এবং খান্দানের লোকদের কারণে বিশেষত আপন চাচা জনাব পিলু মোদী এবং তার বিশিষ্ট বন্ধু আর কে কিড়াভয়ের উপস্থিতিতে তিনি ইসলাম গ্রহণে ইতস্তত করছিলেন। ডাক্তার আমেরের সাথে আমার বিবাহ অনুষ্ঠান তিনি সম্পূর্ণ ইসলামী পন্থায় অর্থাৎ মুসলমানদের বিবাহ অনুষ্ঠানের প্রচলিত রীতিনীতি অনুসারেই ধুমধামের সাথে করেছিলেন। তবে বলা বাহুল্য যে এ জাতীয় অনুষ্ঠান আড়ম্বরপূর্ণ করার নিমিত্তে ঢালাওভাবে ‘খরচের’ অনুমতি ইসলাম দেয় না। তা সত্বেও এটাই এখন মুসলমানদের সামাজিকতা?
চএও তে চাকুরীকালীন পিতাজী একবার দু’দিনের জন্য গোমতী নগরে আমাদের বাসায় এলেন। আমরা হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে নিলাম এবং ইসলাম গ্রহণের জন্য পিতাজীকে পীড়াপীড়ি করতে লাগলাম। পিতাজী শুরুতে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলেন যে, প্রথা পালনে কী হয়! আমি তো মন ও মানসের দিক থেকে তোমাদের আগে মুসলমান হয়েছি। কিন্তু আমরা নাছোড়বান্দা। আমার স্বামী বললেন, নিঃসন্দেহে ইসলামের মূল আবেদন তো মন ও মানসের আত্মসমর্পণ এবং এটাকেই আমরা ইসলামের রুহ মনে করি। তথাপি রুহের জন্য যেহেতু শরীর জরুরী এবং শরীর ছাড়া রুহের সত্তাগত স্বতন্ত্র কোনো অস্তিত্ব নেই। এজন্য মন ও মানসের সাথে সাথে আপনি বাহ্যিকভাবেও কালেমা পড়ে নিন। পিতাজী তৈরী হয়ে গেলেন এবং কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলেন।

আম্মাজান পিতাজীর সাথেই ছিলেন। পিতাজী মুসলমান হওয়ার পর আম্মাজানকে তৈরী করা আমাদের জন্য সহজ হয়ে গেল। তিনিও কালেমা পড়ে নিলেন। মিরাঠে আসার দুমাস পর তার মারাত্মক হার্ট এটাক হলো। তার হার্টের দুটি শিরাই ব্লক হয়ে গিয়েছিল। আমরা তাকে লক্ষ্মৌ নিয়ে গেলাম। কিন্তু হায়াত মওতের মালিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। লক্ষেèৗতেই তার ইন্তেকাল হয়ে গেল এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হলো। আলহামদুলিল্লাহ! জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো তার ঈমানের খুশবুতে সুবাসিত ছিল। ইসলাম গ্রহণের দরুণ তার সময় কাটত আল্লাহর তায়ালার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতায়।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আপনার ভাইদের কী অবস্থা?
ডাক্তার সাহেবা: ছোটভাই তারেক ঈঅ করেছে। বর্তমানে সে মুম্বাই এর একটি বড় কারখানার ম্যানেজার। মুম্বাই এর এক তাবলীগ ঘরানায় তার বিয়ে হয়েছে। আর শারেক গইঅ শেষ করেছে। বর্তমানে লক্ষ্মৌর একটি হোটেলের ম্যানেজার। এ মাসের ২৯ তারিখে আমার ননদ রাশেদার সাথে তার বিয়ে হবে ইনশাআল্লাহ!

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: আল্লাহ তায়ালা আপনাকে হেদায়েত দ্বারা সৌভাগ্যমন্ডিত করেছেন। আর এখন আপনি নিজেও দাওয়াতের কাজ করছেন। দাওয়াতী জীবনে আপনার এই অভিব্যক্তি জানতে চাই যে, অমুসলিমদের হেদায়েতের জন্য কোনো পদ্ধতিটি সবচেয়ে উপযোগী?
ডাক্তার সাহেবা: এটা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। অস্থিরতা ও মরণযন্ত্রণায় কাতর মানবতাকে জ্ঞান ও যুক্তির নিরিখে উত্তীর্ণ ধর্মবিশ্বাসেরই পরিচয় কেবল পূর্ণরূপে করতে সক্ষম। এতদসত্বেও আমি আমি আমার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা এবং আমার মাধ্যমে যারা ইসলামের ছায়াতলে এসেছেন, তাদের অবস্থার উপর গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করত এ কথাই বলব যে, আপনি আপনার মৌখিক দাওয়াত দ্বারা হয়তো লোকদের থেকে ইসলাম গ্রহণের মৌখিক স্বীকৃতি নিতে পারেন, কিন্তু কোনো মানুষকে এতটুকু প্রভাবিত করার জন্য যে, সে তার জীবনের গতিপথ পাল্টে নতুন একটি ধর্মবিশ্বাস গ্রহণে প্রস্তুত হয়ে যাবে। মৌখিক দাওয়াতের পাশাপাশি আপনার আমলী দাওয়াতও বেশ গুরুত্বের দাবী রাখে। আমি মনে করি, আমাদের পরিবারের ইসলাম গ্রহণের পিছনে বরং আমাদের দুজনকে দাওয়াতের কাজে সম্পৃক্ত করার পিছনে আপনার আব্বাজানের স্বভাবজাত ভদ্রতা এবং দাওয়াতী কর্মকান্ড সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আসমানী কিতাব অবতীর্ণ করার পাশাপাশি নবীদের প্রেরণ এ কথার প্রমাণ বহন করে যে মানুষের জন্য কিতাবের সাথে ব্যক্তিও প্রয়োজন। অর্থাৎ, কথার সাথে আমলও চাই। আর তখনই কেবল পরিবর্তনের আশা করা যেতে পারে।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: শুকরিয়া উর্মি ফুফু! আমি আপনার কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। আরমুগানের পাঠকদের জন্য আপনার কোনো পয়গাম আছে কি? বিশেষত এর পাঠিকাদের জন্য কোনো বিশেষ পয়গাম?
ডাক্তার সাহেবা: আরমুগানের মাধ্যমে আমি আমার বোনদের কাছে একটি দরখাস্ত পেশ করতে চাই। তা হলো একজন মুসলমানের দায়িত্ব ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল মানুষের নিকট ইসলামের পয়গাম পৌঁছানোও তার দায়িত্ব। আর এক্ষেত্রে পুরুষের সাথে সাথে নারীরাও সমানভাবে আদিষ্ট। বরং ইসলামী ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, সর্বপ্রথম ইসলামের দাওয়াত গ্রহণকারী ভাগ্যবানদের নূরানী কাফেলায় পুরুষদের চেয়ে নারী এগিয়ে। গারে হেরায় ওহী অবতরণের সূচনালগ্নে ঘনিষ্ঠ বন্ধুজন এবং নিকটতম মানুষের উপস্থিতিতেও হযরত নবী عليه السلام -এর দাওয়াতের সর্বপ্রথম শ্রোতা ছিলেন তারই জীবনসঙ্গিনী হযরত খাদীজা রাযি. এ ঘটনা একথারই প্রমাণ বহন করে যে, নারীদেরও আপন দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এমনকি পুরুষদের চেয়েও বেশী। দাওয়াতের ময়দানে অমুসলিম সম্প্রদায় বিশেষত পশ্চিমা সমাজের অবস্থা দর্শনে তারা এ ধ্র“বসত্য গভীরভাবে অনুধাবনেও সক্ষম হবেন যে, বস্তুবাদিতা ও নগ্নতার বিষে আক্রান্ত যে পশ্চিমা সংস্কৃতির আলোক ঝলকানীতে আজ আমরা প্রভাবিত হচ্ছি এবং তাকে উন্নতির সোপান মনে করছি। পশ্চিমা সমাজ তাদের নোংরা সংস্কৃতির দরুণ আজ কতটা অধঃপতিত। অস্থিরতা ও অশান্তির মরণ যন্ত্রণায় ফাঁসির মঞ্চে দন্ডায়মান এ মানুষগুলো আজ ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য কতটা তৃষ্ণার্ত। এবং তারা এটাও অনুধাবন করতে পারবেন যে, ইসলামের মহান দৌলত দান করে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর কত বড় অনুগ্রহ করেছেন।

আসমা যাতুল ফাউযায়ন: মন চাচ্ছে বিশদভাবে আপনার দাওয়াতী জীবনের কারগুজারী শুনি। কিন্তু আপনাকে শীঘ্রই যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী কোনো সাক্ষাতে আবার কথা হবে। অনেক অনেক শুকরিয়া!
ডাক্তার সাহেবা: অবশ্যই! বাস্তবেই দাওয়াতী জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা আমাদের অর্জিত হয়েছে এবং অনেক ঘটনাও আমাদের জীবনে ঘটেছে। ইনশাআল্লাহ আবার সাক্ষাৎ হবে।
فى اما ن الله استودع الله دينكم واما نتكم و خواتيم اعما لكم

সাক্ষাৎকার গ্রহণে
আসমা যাতুল ফাউযায়ন
মাসিক আরমুগান, ডিসেম্বর ২০০৪

Series Navigation

Archives

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031