শনিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা সংকট ও বাস্তবতা – জাগ্রত কবি মুহিব খান

Khutbah Tv 

মুহিব খানঃ মজলুম মুহাজির রোহিঙ্গাদের সেবায় (কিছু দুষ্ট জোচ্চোর বাদে) সারাদেশের মানবিক ভূমিকা প্রশংসনীয়। বিশেষ করে, আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থী মানুষের জাঁ-ফিদা খেদমত ও কুরবানী সোনালী হরফের ইতিহাস। তারা মুহাজিরদের হৃদয়ের গভীরে আস্থা ও ভালোবাসার আসনটি তো জয় করেই নিয়েছেন, পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সরকারেরও উচিত তাদের প্রতি সহৃদয় এবং কৃতজ্ঞ থাকা। মিডিয়ার স্বভাবজাত ছোটলোকী নোংরামি ও অসততা এক্ষেত্রেও বরাবরের মতোই হবে, তা তো জানাই ছিলো। ওদের জন্য এক দলা আফসোস।
চিকিৎসকের জরুরি স্বাস্থ্য-পরামর্শ ও নির্ধারিত সময়সীমার নিয়মের অধীনে থাকায় যেতে পারিনি এখনও। দূর থেকে নানা সহযোগিতায় সম্পৃক্ত আছি, যার প্রচার জরুরি নয়।
এ সংকট চলমান, সহজে সমাধানযোগ্য নয়। প্রসঙ্গিক তিনটি বিষয় মনে এলো-

মানবিক দায়
————————————
এমন নৃশংসতার শিকার যে কোনো প্রতিবেশীকেই সাময়িক আশ্রয়, নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য সবরকমের সহায়তা দেয়া আমাদের মানবিক দায়িত্ব (মুসলিম জাতিসত্ত্বার পরিচয়ে ঈমানী দায়িত্ব)।
পরবর্তী একমাত্র কাজটিই হলো- তাদেরকে সংরক্ষিত সীমানায় সাধ্যের সর্বোচ্চ আদর যত্নে আলাদাভাবে রাখা এবং যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক ব্যাবস্থাপনায় তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আদায় করে ফিরিয়ে দেয়া। এটি বাংলাদেশের মতো একটি দেশের জন্য ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জ।

Default Ad Content Here

মনোবিজ্ঞান
————————————
মানবিক কারণে আশ্রিত মানুষের মধ্যেও একসময় অধিকার ও শক্তি ফলানোর মানসিকতা তৈরি হয়। তখন মনে থাকে না, এখানে আমাদের চরম দুঃসময়ে দয়া করে আশ্রয় দেয়া হয়েছিলো, এ জায়গা আমাদের নয়। তখন শুধু মনে হয়, এতো বছর ধরে এখানে আছি, সুখ সুবিধা করে নিয়েছি, এখন আবার ফিরে যেতে বলে কে? দেখি কীভাবে তাড়ায়!
তখন যে বা যারা তাদের জোর করে থাকার ইন্ধন ও প্ররোচনা দেয় তাদেরকেই তারা আপন করে নেয়, এমনকী পুরনো দুশমনকেও।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান
————————————
তারা এখানে থেকে শক্তি, সাহস ও কৌশল সঞ্চয় করে একসময় নিজ ভূমি স্বাধীন করে ফিরে যাবে- এটা যেমন এক প্রকারের ধারণা;
বিপরীতে এ ধারণাও একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো নয় যে, দীর্ঘদিন থাকার পর ফিরে যাওয়ার চাপ দিলে আজকের মানবিক বাংলাদেশের প্রতিই তাদের রাগ জেদ তৈরি হবে। অন্যদিকে মায়ানমার যদি বলে, নাফের এ পারে কখনই আর তোমাদের স্থান হবে না বরং অস্ত্র নাও, সেনা সহায়তাও নাও, বিদ্রোহ কর, টেকনাফটাই মায়ানমারের করে নাও এবং নাফের ওপারে নিরাপদে বসবাস কর, ওটা তোমাদের জন্যই দিয়ে দেবো, পাবে নাগরিকত্ব ও সীমিত নাগরিক অধিকারও।
রাষ্ট্রহীন অনিশ্চিত জীবনের নিরাশ্রয় মানুষদের কাছে একসময় এ প্রস্তাবটি মন্দের ভালো হিসেবে পছন্দ হতেও পারে!
*
রাষ্ট্র বাড়ানো বা রাষ্ট্র হারানোর পেছনে এ ধরণের আপাতঃকাল্পনিক থিওরীও রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের গবেষণায় সত্য হয়ে উঠে আসে।
————————————
আমাদের আবেগ আকাঙ্খা ভালোবাসা এবং চিন্তা ও বাস্তবতার নিরীখেই পা ফেলতে হবে।

Archives

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031