রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
রোহিঙ্গা শিবিরে এনজিও তৎপরতায় নজরদারি করা জরূরী – মামুনুল হক
রোহিঙ্গা সমস্যার আশু কোনো সমাধানের আলো দেখা যাচ্ছে না ৷ আরাকান থেকে নির্বাসিত মুসলিমদের আবার স্বদেশে ফিরে যাওয়াটা সুদূর পরাহতই মনে হচ্ছে ৷ নির্বাসিত রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেয়ার ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও কুটনৈতিকভাবে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বাংলাদেশ ৷ মায়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকেও কার্যকর কোনো চাপ প্রয়োগ হয়নি ৷ বেশ হাক-ডাক দেয়া জাতিসংঘ স্থায়ী পরিষদের বৈঠক যেমন শেষতক তামাশায় পরিণত হয়েছে, ইউরোপিয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মায়ানমার জেনারেলদের প্রতি সাহায্য বন্ধের হুমকিও তেমনি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবশিত হবে বলেই ধারণা ৷ আসলে যে বিশ্বমোড়লদের ছত্রছায়াতেই মুসলিম নিধনের এই যজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে এটাই হল চূড়ান্ত সত্য ৷ বিশ্বশক্তিগুলোর দোর্দণ্ড প্রতাপের সামনে যেখানে মায়ানমারের চুপসে যাওয়ার কথা, সেখানে এখনও অব্যাহত চলছে মুসলিম উৎখাত ৷ এই সংকট উত্তরোণের পথ উম্মতে মুসলিমাকেই ভাবতে হবে ৷
রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় সাহায্যের নামে বিশ্বশক্তিগুলোর আশির্বাদপুষ্ট এনজিওরা আসছে দলে দলে ৷ এ যেন গরু মেরে জুতা দান প্রবাদের বাস্তবায়ন ৷ শিক্ষার নামে তারা রোহিঙ্গা শিশুদের ঈমান হরণের এজেণ্ডা নিয়ে মাঠে নামছে ৷ খ্রীষ্টান মিশনারী এনজিওদের অতীত কর্মকাণ্ডের আলোকে বলা যায়, তারা সেবার মুখোশ পরলেও তাদের লক্ষ্য থাকে মুসলিম নারী ও শিশুদেরকে ইসলামী জীবনাদর্শ থেকে বিপথগামী করা ৷ রোহিঙ্গা শরণার্থীক্যাম্পগুলোতে এনজিওদের এ জাতীয় অপতৎপরতার আলামত ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে ৷ আলেম ও ধর্মপ্রাণ মানুষদের সহায়তায় শরণার্থী এলাকায় গড়ে ওঠা মসজিদ-মক্তব-মাদরাসা সমূহ বন্ধ করার পায়তারা চালাচ্ছে ৷ স্কুলের নামে ধর্মহীন শিক্ষা বিস্তারের পরিকল্পনা তাদের ৷ রোহিঙ্গা মুসলিম সন্তানদের শিক্ষাকারিকুলামে ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা থাকা জরূরী ৷ তা ছাড়া বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলকে ঘিরে খ্রীষ্ট রাজ্য প্রতিষ্ঠার যে সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের আশংকা করা হয়, চলমান রোহিঙ্গা সংকট ও তাতে এনজিওদের ভূমিকার বিষয়টি এ দৃষ্টিকোণ থেকে নজরে রাখা একান্ত জরূরী ৷ এমন কোনো ষড়যন্ত্র দানা বাধলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে ৷ সরকার ও প্রশাসনকে তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে ৷
রোহিঙ্গা অনেক শিশুরই পিতা মাতা শহীদ হয়েছেন মায়ানমারের নির্মম নিধনযজ্ঞে ৷ এই শহীদদের সন্তানরা মুসলিম জাতির নিকট এবং বিশেষত বাংলাদেশের মুসলমানদের নিকট আমানত ৷ তাদের দ্বীন-ঈমানের হেফাজতের ব্যবস্থা করা জরূরী ৷ আল্লাহ না করুন, এ ক্ষেত্রে কোনো ধরণের গাফলতি হলে এবং তার পরিণামে একটা মুসলিম শিশুও বেঈমানী হামলায় ঈমানহারা হয়ে গেলে দুনিয়া আখেরাতে সে জন্য জবাবদিহি করতে হবে ৷