বৃহস্পতিবার, ৩০শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ঠাকুরের বালতি ছোঁয়ায় পিটিয়ে মারা হলো ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে

৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দলিত মহিলাকে পিটিয়ে মারলো তথাকথিত উচ্চবর্ণের ‘ঠাকুর’। নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে। ওই মহিলার ‘অপরাধ’, তিনি ভুল করে পানিভরা বালতি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন।

সাবিত্রীদেবী নামে ওই মহিলাকে গত ১৫ই অক্টোবর মারধর করা হয়। দিন সাতেক পর মৃত্যু হয় তার। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত অঞ্জু ঠাকুর ও তার ছেলের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৫ই অক্টোবর বুলন্দশহরের খেতলপুর গ্রামে অঞ্জু ঠাকুরের বাড়ির কাছে কাজ করছিলেন কাগজ কুড়ানি সাবিত্রীদেবী। সেসময়ে পাশ দিয়ে রিকশা যাওয়ায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে অঞ্জু ঠাকুরের পানির বালতির ওপর পড়ে যান সাবিত্রী। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন অঞ্জু ঠাকুর। কিছুক্ষণের মধ্যেই অঞ্জুর ছেলে রোহিতও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকেন সাবিত্রীকে।

সে সময় সাবিত্রীর সাথেই ছিলো তার ৯ বছরের মেয়ে। সেই দৌড়ে গিয়ে পাশের দলিত বস্তিতে খবর দেয় বলে জানিয়েছেন সাবিত্রীর প্রতিবেশী কুসুমা দেবী। কোনোমতে সাবিত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বামী। কিন্তু বাইরে থেকে কোনো চোট আঘাত না থাকায় জেলা হাসপাতাল তাকে ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ। এরপর সাবিত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসা হলে, তার পেটে ও মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয়।

সাবিত্রীর স্বামী জানিয়েছেন, কেন সাবিত্রীকে মারধর করা হলো তা জানতে চাওয়া হলে অঞ্জু তাকেও মারধর করে তাড়িয়ে দেন। এরপরই তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান।

কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। পুলিশ প্রথমেই তার শারীরিক পরীক্ষা করালে কোনো চোট আঘাত পাওয়া যায়নি। ফলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। কিন্তু ২০ অক্টোবর গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে তারা আসল ঘটনা জানতে পেরে অঞ্জু ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার এসএইচও তপেশ্বর সাগর।

এরপর ২১শে অক্টোবর সাবিত্রীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, সাবিত্রীর মাথায় আঘাত লেগেছিল কিন্তু পেটে আঘাত পাওয়ায় ওইদিনই তার গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়।

এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত অঞ্জু ঠাকুর ও তার ছেলে রোহিত।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

Archives

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031