বুধবার, ২৯শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৩রা রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

রমযানকে শুধুই রোযা ও তারাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলবেন না-মুফতি তাকি উসমানী


রমযানকে শুধুই রোযা ও তারাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে ফেলবেন না। বরং প্রথম দিন থেকেই নিয়ত করুন, আমি রমযানে একটা গুনাহও করব না। তাহলে ইনশাল্লাহ রমযান আমাদের জীবনে খুবই সুন্দর পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

রমযানে আল্লাহ তায়ালার হুকুমে খাওয়া ছেড়ে দিলেন। অথচ খাবার আপনার জন্য হালাল ছিল। পান করা আপনার জন্য হালাল ছিল কিন্তু আল্লাহর হুকুম পালনার্থে আপনি এই হালাল জিনিস ছেড়ে দিলেন। যে জিনিস আগে থেকে হালাল ছিল আল্লাহকে খুশি করার জন্য সে জিনিস বিসর্জন দিলেন।

তো যে জিনিস শুরু থেকেই হারাম, রমযান হোক কিংবা রমযান ছাড়া, সব সময় হারাম, সেগুলো যদি আপনি রমযানে না ছাড়েন তাহলে তাহলে এটা কেমন রোযা হলো?

যেমন মিথ্যা কথা বলা এটা সব সময় হারাম। রোযা রেখে আপনি মিথ্যা বলা ছাড়লেন না। গীবত করা সব সময় হারাম। গীবত করা রমযান মাসে ছাড়লেন না। না মাহরাম বেগানা নারীর দিকে কুদৃষ্টিতে তাকানো হারাম কিন্তু আপনি এটা ছাড়লেন না। ঝগড়া করা, কাউকে কষ্ট দেওয়া সর্ববস্থায় হারাম। এটা আপনি রমযান মাসে ছাড়লেন না।

অবস্থাটা হলো যেগুলো হালাল ছিল সেগুলো তো ছাড়লেন কিন্তু যেগুলো সব সময় হারাম, সেগুলো ছাড়লেন না তাহলে এটা কেমন রোযা হলো! এ রোযার মাধ্যমে তাকওয়া কিভাবে হাসিল হবে?

তাকওয়া তো তখনই হাসিল হবে যখন আপনি হালাল তো ছাড়বেনই, হারাম জিনিস তো আরো আগে ছাড়বেন।

সুতরাং পাক্কা নিয়ত করুন যে, এই রমযানে চোখের অন্যায় ব্যবহার করব না। অন্যায় জায়গায় চোখ দেব না। কোন অন্যায় কথা, মিথ্যা, গীবত, ইত্যাদি মুখ থেকে বের করব না। কান কোন অন্যায় কাজে ব্যবহার করব না। এবং মুখে কোন হারাম লোকমা ঢুকাবো না।

এটা কেমন হলো- সারাদিন না খেয়ে রোযা রাখলেন আর সন্ধ্যায় হারাম জিনিস দিয়ে ইফতার করলেন। এমন আমদানি থেকে ইফতারের জন্য খরচ হলো যা হারাম। যা কাউকে ধোঁকা দিয়ে উপার্জন করা হয়েছে। যা কোন নাজায়েজ পদ্ধতি ইনকাম করা হয়েছে।

রোযা রাখলেন না খেয়ে আর ইফতার করলেন হারাম দিয়ে- এটাতো অনেক আফসোসের কথা। এর দ্বারা কিভাবে তাকওয়া অর্জন হবে!

তাই নিয়ত করুন, এই রমযানে কোন গুনাহ করব না। এর জন্য দরকার মজবুত ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগানো। রমযানে প্রচণ্ড পিপাসা লাগা সত্ত্বেও আপনি ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগ করে পানি পান করা থেকে বিরত থাকেন, সেই ইচ্ছাশক্তিটাকে রোজার ক্ষেত্রেই নয়, হারাম কাজ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করুন। তাহলে এই রমযান আপনার জন্য আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করার এক সুন্দর মাধ্যম হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।

অনুবাদ: এনাম হাসান জুনাইদ

Archives

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031