শনিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
আলেমদের চাঁদা কালেকশনের দ্বারা দীনের বড় অসম্মানী হচ্ছে। সাধারণ জনগণ মনে করে, আলেমরা বুঝি নিজেদের জন্যই এত দৌড়ঝাঁপ পারছে। এ জন্য আমার অভিমত হল, আলেমগণ কিছুতেই চাঁদা কালেকশনে যাবেন না; বরং দীনের কোন কাজ করতে হলে সমাজের গণ্যমান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একত্রিত করে বলে দিবেন, দীনের হেফাজতের জন্য অমুক কাজটি করা দরকার। আপনারাও চিন্তা করে দেখুন এর প্রয়োজন রয়েছে কিনা। যদি আপনাদের দৃষ্টিতেও প্রয়োজনীয় মনে হয় তাহলে সকলেমিলে এ কাজটি আঞ্জাম দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
★
আলেমগণ মূল কাজ করবেন। সম্পদশালীগণ অর্থের যোগান দিবেন। আর যদি সমাজের গণ্যমান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিরা বলে এ কাজের প্রয়োজন নেই; বরং এটি অনর্থক তাহলে আলেমদের পক্ষে চাঁদা কালেকশনের প্রয়োজন নেই। সে কাজ বন্ধ করে ঘরে বসে থাকবেন। ব্যবসা, চাষাবাদ কিংবা অন্য কোন পেশায় লিপ্ত হোন এবং অবসর সময় যতটুকু সম্ভব দীনের কাজ করুন। এ অবস্থায় কেয়ামতের দিন আলেমদেরকে জবাবদিহি করতে হবে না। যদি করতে হয় তাহলে পরিষ্কার বলে দিবেন, আমরা তো মুসলমানদের সামনে দীনি খেদমতের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিলাম। তারা এটাকে অনর্থক বলেছে এবং অর্থের ইন্তেজাম করেনি। আর আমাদের চাঁদা কালেকশনের কারণে দীনের অসম্মানী হচ্ছিল বিধায় আমরা তা থেকে বিরত থেকেছি। জীবিকা উপার্জনের পাশাপাশি যতটুকু সম্ভব আমরা দীনের কাজে জড়িয়ে ছিলাম। তখন এর জবাবদিহিতার ভার তাদের কাঁধে গিয়ে পড়বে যারা দীনের খেদমতকে অনর্থক আখ্যা দিত। আলেমগণ এভাবে কছু কাজ করলে দেখতে পাবেন যে, জনগণ সংশোধিত হয়ে গেছে। তখন তারা নিজেরাই চাঁদা তুলে তুলে নিয়ে আসবে।
★
আমার মতে আলেমদের দ্বারা চাঁদা কালেকশন করাবেন না। তাদেরকে চাঁদা আদায়ের কাজে নিযুক্ত করবেন না। এতে তাদের গুরুত্ব ও মর্যাদা কমে যায়। আমার মত হল, চাঁদা কালেকশনের কাজটি সমাজের ধনাঢ্যশ্রেণী করবেন। তাদের কালেকশনের প্রভাবও বেশি হবে। কেননা, তারা নিজেরাও দিবেন। আলেমদের ব্যাপারে তো এ ধারণা হবে যে, তারা কেবল অন্যদেরকেই দিতে বলে, নিজেরা কিছুই দেন না। ধনীদের বেলায় এ মন্দ ধারণাটি হবে না। কেননা, যে ব্যক্তি নিজের পকেট থেকে পঞ্চাশ টাকা দান করে সে অন্যের পকেট থেকে পঁচিশ টাকা বের করতে পারে। আর এটা ধনীদের দ্বারা সম্ভব। এ জন্য আলেমদের এ কাজ না করা উচিত। তাছাড়া এ কাজ আলেমদের মূল যিম্মাদারী পালনের পথে প্রতিবন্ধকও বটে। (সংগৃহীত:-আল ইলমু ওয়াল উলামা, অনুবাদ- আব্দুল গাফ্ফার শাহপুরী, পৃষ্ঠা- ৩১০-৩১১)