শনিবার, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
শামছুদ্দোহা আশরাফীঃ মাওলানা আলী জুহার।বয়স আশির কোঠায়।(তার ভাষ্যমতে)পড়াশোনা করেছেন দারুল উলুম করাচিতে।অাকাবীর উলামায়ে কেরামদের অনেকের সোহবতে ধন্য হয়েছেন।আরাকানে দীর্ঘ সময় ইলমে দ্বীনের খিদমতে নিয়োজিত ছিলেন। অনেক ছাত্র রয়েছে তাঁর। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।মগ জঙ্গীদের কারণে আজ তাঁর ঠিকানা খোলা আকাশের নিচে। জামতলী ক্যাম্পে ৪/৫শ ফুট উপড়ে পাহাড় চুড়ায়।ছোট একটি তাবু গেড়ে সেখানেই বসবাস করছেন।
তাঁর খবর শুনেই সাক্ষাতে আগ্রহী হয়ে উঠি। পাহাড় বেয়ে স্থানীয় মাঝির সহায়তায় তাঁর কাছে পৌঁছি। দুর থেকেই খেয়াল করলাম তিনি হাতে তাসবীহ নিয়ে মহান রবের নাম জপে চলেছেন। অামাদের দেখেই মায়াভরা হাসি দিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন।সালাম মুসাফাহার পর শুরু করলেন নিজের জীবনের গল্প। শুনালেন ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনা।বারবার তাঁর কন্ঠ রোধ হয়ে আসছিল। কান্নার কারণে কথাই বলতে পারছিলেন না। বাবার বয়সি মুরুব্বির চোখের পানি দেখে আমিও নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।নিজেও কেঁদে কিছুটা হালকা হয়ে নিলাম।
আহ! প্রায় মাসখানিক এপাহাড়েই অাছেন। নিচে নামেননি কখনো।অনাহারে অর্ধাহারে এখানেই দিন কাটছে।অযু ইস্তেনজার কোন সুব্যবস্থা নেই।এমনকি খাবার পানিরও বড়ই অভাব। ৫/৭শ পরিবারের জন্য মাত্র একটি টিউবওয়েল !তাও আবার অনেক দুর। আল্লাহ হেফাজত কর।
কি করব, কি করা উচিত? কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না।
অবশেষে কিছু দ্বীনি ভাইয়েরা যে আমানত আমাদের হাতে দিয়েছেন। তা থেকে কিছু টাকা এ আলেমে দ্বীনকে দিয়ে এলাম।জানিনা এটা দিয়ে কয়দিন চলবে?আর কয়দিনই বা তিনি এভাবে থাকতে পারবেন?
হে আল্লাহ, তুমি তোমার মাজলুম বান্দারে সহায় হও। জালেমের জুলুম থেকে তাদের রক্ষা কর। জালেমের বিরু্েদধ মুক্তিযুদ্ধ করার তাওফীক দাও। আমীন।
মুহা.শামছুদ্দোহা
খতিব-সাইন্সল্যাব কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ,ধানমন্ডি ঢাকা।