শুক্রবার, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আরাকান(রোহিঙ্গা)সমস্যা সমাধান হচ্ছে না এবারেও – শায়েখ আলী আজম

Khutbah Tv 

আলী আজমঃ জালিম নরপিশাচ বার্মিজ হিংস্র হায়েনা কর্তৃক যুগযুগ ধরে নির্যাতিত আরাকানি রোহিঙ্গা মুসলিমদের পাশে কেউ নেই। কদিন পর-পর থেমে-থেমে যুগযুগ ধরে চলে আসা পাশবিক কায়দায় মুসলিম নিধন অব্যাহত থাকলেও ইতোপূর্বে বাস্তবিকপক্ষে কেউই এগিয়ে আসেনি। কেউই সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেনি। কিন্তু এবার বার্মিজ বাহিনী এবং মগদস্যুরা ইতিহাসের জঘন্যতম কায়দায় বেপরোয়াভাবে মুসলিম নির্মূল শুরু করলে পৃথিবীব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ফলে আমরা আশার আলো দেখতে থাকি এবং ভাবতে থাকি হয়তো এবার কোনো একটা সুরাহা হবে।
.
কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে বুঝা যাচ্ছে আরাকান সমস্যার স্থায়ী সমাধান আন্তরিকভাবে কোনো বিশ্বনেতা চান না! হোক সেটা পরমাণু ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রধান অধবা অন্যান্য কুফফার রাষ্ট্রের প্রধান। যে যাই বলুক মুসলিম নিধন আর মুসলিমদের সম্পদ লুটের ক্ষেত্রে সমস্ত কুফফার শক্তি সবসময় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এক ও অভিন্ন। যদিও মাঝেমধ্যে তারা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নির্যাতিত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পক্ষে দু-চার বাক্য নৈতিকতা, মানবতার বাণী প্রসব করেই ফেলে(!) নিশ্চিত ধরে নিন তা স্রেফ লোকদেখানো, ধোঁকাবাজি বৈ কিছু নয়। বিবৃতি নিন্দাতেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ।
.
রাসূল সঃ এর পবিত্র হাদীসের বাণী কখনো মিথ্যা হতে পারে না। মুসলিম নিধনের ক্ষেত্রে কুফফার শক্তি সর্বদা এক এটাই চিরসত্য। এটাই বাস্তব। প্রিয় রাসুলে আকরাম সঃ তাঁর পেয়ারা উম্মতকে এই সবক দিয়ে গেছেন যে, তোমরা কখনো ত্বাগুত, কুফফারকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা কখনো তোমাদের ভালো চাইবে না। অথচ অত্যন্ত দুঃখজনক সত্য যে, এই বাস্তব সত্য মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হয়। আজ আমরা ভাই-ভাই পরস্পর দুষমন সেজে কুফফার শক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছি। এবং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি! তাহলে আমরা মার খাবো না তো কে খাবে?
.
আরাকান সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে বিশ্বনেতাদের কেউই এগিয়ে না আসার কারণ হিসেবে আমরা বেশকিছু কারণ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। এতে বিশ্ব মোড়লদের একেকজনের একেকরকম হীন স্বার্থ জড়িত। আর তারা সে কারণে অভিভাবকহীন রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নিজেদের হীন স্বার্থ উদ্ধারের সমস্ত নীলনকশা বাস্তবায়ন করেই চলেছে। আরাকানে ভারত, চীন, রাশিয়া, কুরিয়া এবং তাদের মিত্র রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত। সেক্ষেত্রে তারা কখনো চাইবে না আরাকান সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক। তারা যেকোনোভাবে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে মরিয়া।
.
আর আমেরিকা এবং তার মিত্র রাষ্ট্রগুলো প্রত্যক্ষভাবে জালিম নরপিশাচ বার্মিজ বাহিনীকে সাপোর্ট না দিলেও মুসলিম নিধনের ক্ষেত্রে তাদের সুর এবং অবস্থান দুটোই অত্যন্ত নমনীয় ও রহস্যজনক। কারণ তারা তলে-তলে এক। আর আরাকান মুসলিম মুক্ত হবার পর যখন চীন, ভারত, কুরিয়া খনিজ সম্পদ ভাগাভাগি এবং সামরিক ঘাটি স্থাপন করতে যাবে তখন কিন্তু আমেরিকা চুপটি মেরে বসে থাকবে না। তারাও সেখানে সাধ্যমতো ভাগ বসাবে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় বিশ্বনেতাদের কেউই বাস্তবিকপক্ষে চায় না আরাকান তথা রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী একটা সমাধান হোক। রোহিঙ্গারা অধিকার ফিরে পাক।
.
আর ধ্বজভঙ্গ নামধারী মুসলিম শাসকরা সে কবে যে নির্যাতিত মুসলিমের পক্ষে কথা বলার সাহস হারিয়েছে (!) তা বলার প্রশ্ন রাখে না। যেদিন থেকে মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানরা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত ও দীর্ঘায়ু করার নিমিত্তে পশ্চিমা ত্বাগুত অপশক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে মূলত ঠিক সেদিন থেকেই তারা পশ্চিমা অপশক্তির খেলার গুটিতে পরিণত হয়েছে এবং তাদের নির্লজ্জ তাবেদারিতে লিপ্ত রয়েছে। পায়ে পরাধীনতার শিকল পরেছে। ফলে মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানরা সেই পশ্চিমাদের মুখের উপর কথা বলতে পারে না। নিজেদের দুর্দিনে কেউ কারো পাশে দাঁড়াতে পারে না।
.
আরাকানিদের ভবিষ্যৎ আল্লাহর হাতে সোপর্দ করলাম

Default Ad Content Here

Archives

December 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031