রবিবার, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ইহুদী বন্ধু, জায়ানিস্ট, ব্রিটিশ দালাল রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে মাদ্রাসা ছাত্র-ছাত্রীদের কেন দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হবে ?
(১)
১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট রবীন্দ্রনাথ মারা গেলে ৮ই আগস্ট ইহুদীদের ‘জিউইশ টেলিগ্রাফিক এজেন্সি’ নামক একটি পত্রিকায় তাকে নিউজ করে, যার শিরোনাম, “Tagore, Friend of Jews and Zionism Dies in Calcutta” যার অর্থ: ইহুদী ও জায়ানিস্টদের বন্ধু ঠাকুর কলকাতায় মারা গেছে।
রিপোর্টটির ভেতরে আছে :
“Tagore, who had world-wide fame as a poet and philosopher, frequently expressed his opposition to the Nazi atrocities against the Jews. He also expressed “deep sympathy for the aims and aspirations of Zionism.”
অর্থ : কবি ও দাশর্নিক হিসেবে পরিচিত ঠাকুর নাজি বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং জায়ানিস্টদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমর্থন ছিলো। (আর্কাইভ লিঙ্ক : https://bit.ly/2GYwTbE, ঐ দিনের পত্রিকার পিডিএফ লিঙ্ক : https://bit.ly/2pU2Auj)
(২)
আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯০৫ সালে ছাপা হয় রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত বঙ্গদর্শন পত্রিকায়, বাংলা ১৩১২ সনের আশ্বিন সংখ্যায়। ঐ পত্রিকার পিডিএফটি ডাউনলোড করতে পারেন (https://bit.ly/2GkJrNl)। রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত ঐ সংখ্যায় ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি ছাড়াও আরো অনেক প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপা হয়। তার মধ্যে একটি প্রবন্ধের নাম ‘রাজা ও প্রজা’। প্রবন্ধটির এক পর্যায়ে (পৃষ্ঠা:২৭৩) বলা আছে-
“১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের ইতিহাসে এক মহাপ্রলয় উপস্থিত হইতো। সে দেশব্যাপী দাবানল নির্বাণ করা ইংরেজদের পক্ষে কোন মতেই সম্ভব হইতো না। ভারতের প্রজামণ্ডলীর আনুকূল্যেই সেই দুর্দিনে এদেশে ইংরেজ পনার প্রভুশক্তিকে অটুট রাখিতে পারিয়াছিলো।…প্রজার আনুকূল্যের মূল্য তখন সম্ভবতই ইংরেজরা বেশ ভাল করিয়া বুঝিত। সিপাহি বিদ্রোহের সময় শ্বেতাঙ্গ নরনারী ও শিশুদিগের প্রতি যে নির্দয় আচরণ করা হয়েছিলো, তাহা ইংরেজরা বহুদিন ভুলিতে পারিবে না। কি জানি ভুলিয়া যায়, এই জন্য সে যত্নপূর্বক স্থানে স্থানে তাহার স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত রাখিয়া দিয়াছে। কিন্তু সেই সকল নৃশংস ব্যাপারের তীব্র যন্ত্রনা কিঞ্চিমাত্রও প্রশমিত হইতে না হইতেই ইংরেজরা ভারতের প্রজাসাধারণের প্রতি যে সদ্ভাব ও উদারতা প্রকাশ করিয়াছিলো, মানুষের কথা দূরে থাকুক দেবতার পক্ষেও তাহা দুঃসাধ্য বলিয়াই মনে হয়।” (পেইজের আলাদা ভিউ : https://bit.ly/2GCSQPx )
পাঠক, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমার তার পক্ষে এবং ইংরেজ সম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে। কিন্তু সে সময় কলকাতাভিত্তিক হিন্দু জমিদার শ্রেণীরা ছিলো ইংরেজদের পক্ষে তথা রাজাকার। তাদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ নস্যাৎ হয় এবং এ আর্টিকেলে সেটাকে বিরাট মহত্বের সাথে বর্ননা করেই ক্ষান্ত হয় নাই, বরং ইংরেজদের দয়ামায়া দেবতার থেকেও একধাপ উপরে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কোন শ্রেণীর দালাল হলে এটা করা সম্ভব, আপনারাই চিন্তা করুন।
অথচ সেই রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে আজকে সকলের এমনকি মাদ্রাসা ছাত্রদেরও দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে হচ্ছে। আশ্চর্য !! কেউ সেই গানের বিরুদ্ধে বললে তাকে দেশদ্রোহী বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। তবে এগুলো সব হচ্ছে গায়ের জোরে। এটা ঠিক ! আপনি গায়ের জোরে অনেক কিছু চাপিয়ে দিতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস কিন্তু পরিবর্তন করতে পারবেন না। সত্য একদিন না একদিন প্রকাশিত হবেই। ইতিহাস স্বাক্ষী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসঘাতক ছিলো, রাজারকার ছিলো, ব্রিটিশ দালাল ছিলো, ইহুদী ও জায়ানিস্টদের পক্ষে ছিলো, ফ্রি-মেসন বা নিউওয়ার্ল্ড অর্ডার তৈরীতে কাজ করেছিলো। সেই রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে আপনি যদি দেশপ্রেমের সৃষ্টি করতে চান, তবে সেটা হবে শূণ্যের উপর ভিত্তি করে দালান নির্মাণ করা। মনে রাখবেন, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। একদিন সত্য ইতিহাস সবাই জানবেই জানবে। তখন রবীন্দ্রনাথসহ তাকে নিয়ে মিথ্যা ইতিহাস তৈরীকারীরা নিক্ষিপ্ত হবে আস্তাকুড়েতে।