রবিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

কী ঘটেছিলো চট্টগ্রামের মহিউদিন চৌধুরীর কুলখানিতে

বলা হচ্ছে, সেন্টারের প্রবেশ পথটি ঢালু হওয়ায় সেখানে পড়ে গিয়ে হুড়োহুড়িতে তারা প্রাণ হারান

চট্টগ্রামে সদ্য প্রয়াত সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে অংশ নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রায় অধিকাংশই হিন্দু।

নিহতের বাড়িসহ মোট ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারে কুলখানির আয়োজন করা হলেও যেখানে এই ঘটনাটি ঘটেছে সেই রীমা কমিউনিটি সেন্টারে শুধু অমুসলিমদের জন্যে মেজবানের আয়োজন করা হয়েছিলো।

Default Ad Content Here

বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে এই সেন্টার থেকে খাবার পরিবেশন শুরু হয়।

দুর্ঘটনার আগে তিন দফা খাবার পরিবেশন করা হয়ে যায় এবং বেলা দেড়টার দিকে সেন্টারের মূল ফটকের কাছে কয়েকশো লোক জড়ো হয়েছিলো সেন্টারটিতে প্রবেশ করার জন্যে।

চট্টগ্রাম থেকে সাংবাদিক মিঠুন চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, এক পর্যায়ে সমবেতরা ধাক্কা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশকে সরিয়ে ভেতরে ঢুকতে চেষ্টা করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, “সেন্টারের প্রবেশ পথটি ছিলো ঢালু। এই ঢালু পথ দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে।”

রীমা কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকতে মানুষের ভিড়

“প্রবেশ পথটি ঢালু হওয়ার কারণে ভিড়ের সামনের দিকে থাকা লোকজন নিচে পড়ে যায়। তখন পেছনের দিকে যারা ছিলো তারা তাদের উপর দিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যান,” বলেন সাংবাদিক মিঠুন চৌধুরী।

তখনই পদদলিত হয়ে লোকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান। বলা হচ্ছে, কমিউনিটি সেন্টারটির যতো ধারণ ক্ষমতা তার চেয়েও বহুগুণ মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলো।

এতে মোট ১০ জন নিহত হয়েছে যাদের ৯জনই হিন্দু।

আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। তাদের মধ্যেও যে ৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের ৭জনই হিন্দু সম্প্রদায়ের। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন জেলে সম্প্রদায়ের লোক, ব্যবসায়ী, দোকানের কর্মচারীও।

দুর্ঘটনার পরপরই রীমা কমিউনিটি সেন্টারটিতে মেজবানের কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে শহরের অন্যান্য কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে কুলখানির কর্মসূচি অব্যাহত থাকে।

হতাহতদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলেসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা এবং প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তখন হাসপাতালে ছুটে যান।

হতাহতদের দেখতে হাসপাাতলে ভিড় করেছেন আত্মীয় স্বজনরা

মিঠুন চৌধুরী জানিয়েছেন, নিহতদের প্রত্যেকটি পরিবারের জন্যে মি. চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, নিরাপত্তার ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু মূলত মানুষের হুড়োহুড়িতেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

মি. চৌধুরী গত ১৫ই ডিসেম্বর চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।

সুত্রঃ বিবিসি বাংলা

Archives

December 2025
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031