ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমি সব ধর্মকে ভালোবাসি ও বিশ্বাস করি। যতক্ষণ জীবন থাকবে সব ধর্মের জন্য লড়াই করে যাব।’ আজ (বুধবার) কোলকাতায় যুব তৃণমূলের আয়োজনে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ২৫ তম বার্ষিকীতে ‘সংহতি দিবস’ পালনের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মমতা বলেন, ‘সব ধর্মের মানুষের জন্য লড়াই করাই আমার জীবনের সংগ্রাম, শুরু ও শেষ। এটাই আমার ভাষা এবং প্রত্যাশা।’
মমতা বলেন, ‘ভারতে বৈচিত্রের মধ্যে রয়েছে ঐক্য। ‘নানা ভাষা, নানা মতের মধ্যেই মহান ঐক্য নিয়ে আমরা বাঁচব। এটাই আমাদের শপথ, এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’
মমতা আজ ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় বিজেপি’ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও চলমান অসহিষ্ণুতার তীব্র সমালোচনা করেন।
বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার তার নিজ চেয়ারের মর্যাদা দিতে ব্যর্থ, তারা নাকি বাংলাকে পথ দেখাবে! তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ওরা জানে না, বাংলা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ সমর্থন করে না।’
মমতা বলেন, “বিশ্বনবী (সা) বলেছেন? তাঁকে যখন আহত করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, আমাকে আঘাত করেছ বলে আমি কাউকে আঘাত করবো না। আমি অভিশাপ দিতে পৃথিবীতে আসিনি। আমি মানুষকে মুক্তি দিতে এসেছি। আমি মানুষকে রক্ষা করতে এসেছি। আমি মানুষকে রক্ষা করতে এসেছি। এটা আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।”
মমতা এরপর বলেন, “এটা মাথায় রাখবেন। তারা (মুসলমানরা) সবাই খারাপ হয়ে গেল? আর তোমরা বড় বড় শক্তি হয়ে গেলে? একটা করে সব গেরুয়া পতাকা হাতে নিচ্ছে, আর জিন্দাবাদ- জিন্দাবাদ, ধান্দাবাদ-ধান্দাবাদ, মুর্দাবাদ-মুর্দাবাদ করে বেড়াচ্ছে!”
মমতা বলেন, “কে কী খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? পাঞ্জাবিরা কী খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? মুসলিম ভাই-বোনেরা কি খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? হিন্দু ভাই-বোনেরা কি খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? যার যা ইচ্ছা তা খাবেন।”
দেশে ধর্ম, জাতি, বর্ণ নিয়ে উসকানি দেয়া হচ্ছে বলেও মমতা আজ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘২৫ বছর আগে যে ভাগাভাগি শুরু হয়েছিল, সেই ভাগাভগি আজও চলছে। ‘অসহিষ্ণুতা’ আজ একটি রাজনৈতিক দল ও সরকারের কর্মসূচি!’
‘একটা সরকারের কর্মসূচি কখনো একটা ধর্ম নিয়ে হতে পারে না। সরকারের কর্মসূচি সব মানুষকে নিয়ে হওয়া উচিত বলে মনে করেন মমতা ব্যানার্জী।