নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডন – বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাস্তিক
Admin |
৩২০ views |
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯ |
নাস্তিকদের প্রশ্নোত্তর
|
২:২২ পূর্বাহ্ণ
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাস্তিক: আল্লাহ ﷻবলে কেউ আছে —এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সৃষ্টিজগৎ কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা বানিয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ﷻবলে কেউ নেই।
- উত্তরঃ স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই এই ধরনের নাস্তিকদের দাবি, “স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেনি। সুতরাং স্রষ্টা নেই।” ফিলসফির ভাষায় একে বলে Ad Ignorantiam। যারা এই ধরনের প্রশ্ন করে, তাদেরকে আপনি প্রশ্ন করুন:
- • মানুষ কি এখন পর্যন্ত যা কিছু প্রমাণ করা সম্ভব, তার সব কিছু প্রমাণ করে দেখেছে?
- • মানুষ কি এখন পর্যন্ত সমস্ত ‘বিজ্ঞান সম্মত’ ঘটনা দেখেছে? ‘বিজ্ঞান সম্মত’-এর সংজ্ঞা কি বাকি জীবন পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে?
- • মানুষ কি এখন পর্যন্ত যা জানা সম্ভব, তার সব কিছু জেনেছে?
- • মানুষ কি এখন পর্যন্ত সৃষ্টিজগতের ১%-ও বৈজ্ঞানিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছে?
- এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি ‘না’ হয়, তাহলে কেবল মাত্র একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মানুষের পক্ষেই বলা সম্ভব যে, স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। কেউ যদি এই ধরনের দাবি করে, তবে তাকে আগে দেখাতে হবে যে, সৃষ্টিজগতে যাকিছু প্রমাণ করা সম্ভব, তার সব প্রমাণ হয়ে গেছে। সৃষ্টিজগতে যা কিছু জানা সম্ভব, তার সব সে জেনেছে। মানুষের আর জানার, বোঝার, প্রমাণ করার কিছুই বাকি নেই। যেহেতু আর কিছু বাকি নেই, তাই তখনও যদি স্রষ্টার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া না যায়, তখন নিশ্চিতভাবে দাবি করা যাবে: স্রষ্টা বলে কেউ নেই। “মানুষ কি নিজে থেকেই সৃষ্টি হয়েছে, নাকি তারা নিজেরাই নিজেদেরকে সৃষ্টি করেছে? মানুষ কি আকাশগুলো এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? না! ওদের একেবারেই কোনো জ্ঞান নেই।” [আত-তুর ৫২:৩৫-৩৬] বৈজ্ঞানিকভাবে যন্ত্র দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা বা প্রমাণ করাটার যে কত সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এবং সেটি যে মোটেও যথেষ্ট নয়, তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে Quantum Entanglement বা কোয়ান্টাম আঁতাত।[২৩২] বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে প্রমাণ করেছেন যে, উপপারমানবিক কণিকাগুলো, যেমন ইলেকট্রন, কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, যদিও কিনা তাদের মধ্যে বিশাল দূরত্ব থাকে। তাদের মধ্যে দূরত্ব ১ মিটার হোক, বা কোটি কোটি আলোকবর্ষ হোক না কেন, তারা কোনো ভাবে জানে অন্যরা কী করছে। এটি আইনস্টাইনের বিখ্যাত তত্ত্ব: কোনো যোগাযোগ আলোর গতিবেগকে অতিক্রম করতে পারে না — এর বিরুদ্ধে যায়। এই গবেষণা থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, এই কণিকাগুলোর কোনো এক বিশেষ জগৎ বা স্তরে আলাদা একটি অস্তিত্ব রয়েছে, যেখানে তারা সবাই ‘একসাথে’ থাকে এবং একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। আমাদের এই সৃষ্টিজগতে আমরা এই সব উপপারমানবিক কণাগুলোর একটি প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই মাত্র। এটাই তাদের একমাত্র অস্তিত্ব নয়। শুধু তাই না, এটা তাদের মুল অস্তিত্বও নয়। তাদের মুল অস্তিত্ব রয়েছে অন্য কোথাও। সেটা কোথায়, সেটা কী —আমরা তা জানি না। এই তত্ত্বকে Holographic Universe বলা হয়।[২৩১] এই তত্ত্ব অনুসারে আমাদের চারপাশে আমরা এই যে বিশাল সৃষ্টিজগৎ দেখতে পাচ্ছি, সেটা হচ্ছে একটি প্রতিচ্ছবি মাত্র। এই মহাবিশ্বের প্রতিটি কণিকা, শক্তি অন্য কোনো জগতে আরেকটি অস্তিত্ব রয়েছে। এর অর্থ হলো, ভৌত বিজ্ঞান যেভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে: কোনো কিছুর এই মহাবিশ্বে যে ভৌত অস্তিত্ব রয়েছে, সেটাকে ভৌত পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্তে পৌছা — সেটা সঠিক নয়। কোনো কিছুকে এই মহাবিশ্বে পর্যবেক্ষণ করতে না পারলেই যে আর সেটার অস্তিত্ব নেই, এটা এখন আর সঠিক নয়। কোয়ান্টাম বিজ্ঞানে এরকম অনেক কিছুই আছে, যার কোনো ‘বৈজ্ঞানিক’ ব্যাখ্যা নেই, প্রচলিত ভৌত বিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে। বিজ্ঞান একটি পদ্ধতি, আর এই পদ্ধতির কাজ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কোনো কিছু কিভাবে কাজ করে সেটির ব্যাখ্যা দেয়া। আধুনিকতার তথাকথিত বেড়াজালে পড়ে আমরা এখন দাবী করি: যেহেতু আমরা জানি এটা কীভাবে কাজ করে, সেহেতু এর কোনো স্রষ্টার প্রয়োজন নেই। অথচ আমরা ভুলে যাই: কীভাবে কাজকরে, আর কেন এভাবে কাজ করে —এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। কোনো কিছু এভাবে কাজ করে বলে এটিকে কেউ সৃষ্টি করেনি —এই ধারণায় বিজ্ঞান কখনোই আসে না। কারণ সেটি বিজ্ঞানের পদ্ধতির আওতায় পড়ে না। বিজ্ঞান আমাদেরকে বলে “কীভাবে”, কিন্তু সে কখনো “কেন” প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয় না, আর সেটি নিয়ে মাথা ঘামানো বিজ্ঞানের কাজ নয়। যেমন, আপনি রাস্তায় একটা বরফের টুকরো পড়ে থাকতে দেখে সেটা নিয়ে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ শুরু করলেন। বিজ্ঞান আপনাকে বলতে পারবে সেটা কী দিয়ে তৈরি, কীভাবে তৈরি, কখন তৈরি হয়েছে ইত্যাদি। কিন্তু বিজ্ঞান কখনোই আমাদেরকে বলতে পারবে না: কে সেটিকে কেন তৈরী করেছে? সেটি কোনো প্রাকৃতিক কারণে শিলা হয়ে মেঘ থেকে পড়েছে, নাকি কেউ তার ফ্রিজ থেকে এক টুকরো বরফ নিয়ে এসে রাস্তায় ফেলে রেখেছে?
Default Ad Content Here