মঙ্গলবার, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
Admin | ৫১৪ views | অক্টোবর ১৮, ২০১৯ | অমুসলিমদের প্রশ্নোত্তরমুসলিমদের প্রশ্নোত্তর | ১২:৪১ অপরাহ্ণ
সাধারণ মুসলমানদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, আমারা কাদের জন্য তাহলে অনেকেই বলেন, আমরা আল্লাহর জন্য। এই উত্তরটিও সঠিক তার অবস্থান থেকে। সামষ্টিকভাবে আমরা হলাম সকল মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সকল মানুষের জন্য বের করেছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
كنتم خير امة اخرجت للناس تأمرون بالمعروف وتنهون عن المنكر..
তোমরা সর্বত্তম জাতি, তোমাদেরকে বের করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ কর।
এই আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা النَّاسُ‘মানুষ’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। এর অর্থ হলো, অমুসলিমরাও মানুষ। মুসলিম জাতিকে শুধু মুসলমানদের জন্য পাঠাননি বরং সকল অমুসলিমদের জন্যও পাঠিয়েছেন।
বিশ্বের মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। (১) خير امة ‘উত্তম জাতি’ বলে সম্বোধন করেছেন। (২) الناس‘মানুষ’। অর্থাৎ মুসলমানদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আর ৬শত কোটি অমুসলিম “মানুষ” এর জন্য । ২শত কোটি মুসলমান خيرامة ‘উত্তম জাতি’ ৬শত কোটি অমুসলিম মানুষকে المعروف সৎকাজের আদেশ করবে এবং المنكر অসৎ কাজের বাঁধা প্রদান করবে।
এই আয়াতে একটি সুক্ষ্ম বিষয় বুঝা যায়। তা হল উম্মতের দায়িত্বকে ঈমানের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। জিম্মাদারি দুই প্রকার।
(১) ব্যক্তিগত জিম্মাদারি। (২) সমষ্টিগত জিম্মাদারি।
ব্যক্তিগত দায়িত্বে আল্লাহ তা‘আলা নিজের হক প্রাধান্য দিয়েছেন। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন। وما خلقت الجن واللأنس الا ليعبدون
কিন্তু যেখানে সমষ্টিগত দায়িত্বের কথা আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে বান্দার হককে প্রধান্য দিয়েছেন।
উপরোক্ত আয়াতে আমরা দেখতে পাচ্ছি। উম্মত যেন জাতীয় দায়িত্বের কথা চিন্তা করতে গিয়ে এ ধোঁকায় না পড়ে যে, এটাতো আমার কাজ নয়। আমার দায়িত্ব নয়। এর দ্বারা জাতিয় দায়িত্বের অনুভব হয়।
উল্লেখিত আয়াতের তাফসীরে মুফাস্সিরগন লিখেছেন- خير امة উত্তম জাতি হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত।
(১) امربالمعروف সৎ কাজের আদেশ। (২)نهي عن المنكر অসৎকাজের নিষেধ। (৩) ايمان بالله আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা।
একটু ভাবুন, আমরা কি এই তিনটি শর্তের ওপর আমল করছি? যদি উত্তর নেতিবাচক হয়, তাহলে আমরা কি উত্তম জাতি? যদি উত্তর ‘না’ হয়, তাহলে এই জাতিকে উত্তম জাতি বানানোর ফিকির করতে হবে কি-না? এই জন্য আমাদেরকে امربالمعروف এবং نهي عن المنكر অর্থাৎ ধর্মের দাওয়াত ও তাবলিগ করতে হবে।
যদি আমরা এই জিম্মাদারি আদায় না করি, তাহলে আমাদের ওপর আসতে পারে আল্লাহর কঠিন শাস্তি।
মোটকথা, মুসলমানদের কাজ হলো, সকল মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে দাওয়াত দেবে। তাদের সামনে কুরআন ও নবীজীর পরিচয় তুলে ধরবে। আর ইসলামের পরিচয় করিয়ে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবে।
আল্লাহর দরবারে দু‘আ করি, তিনি যেন উম্মতকে তার জিম্মাদারির হক আদায় করার তৌফিক দান করেন। আমিন! অমুসলিমদেরকে দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব শুধু শরয়ী না, মানবিক দায়িত্বও বটে।