শনিবার, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
Admin | ৬২১ views | অক্টোবর ১৯, ২০১৯ | হিন্দুইজম | ১:৫৫ অপরাহ্ণ
আমাদেরকে সেই মহান আল্লাহর সামনে মাথা ঝুঁকাতে হবে। যেভাবে মূর্তি পূজা ভুল, তেমনিভাবে তাজিয়া পূজা ও কবর পূজাও ভুল। দুনিয়ার সকল মানুষ ওই মহান স্রষ্টার মুখাপেক্ষী। যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, আর যারা কিছুই সৃষ্টি করেনি তা কি সমান হতে পারে? কখোনও নয়।
* এসব প্রমাণাদির পর আশা করা যায়, সে তাওহীদ বা একত্ববাদের প্রবক্তা হয়ে যাবে। এবার তাকে বলুন তিনিই আল্লাহ্্, যিনি সব কিছুকে অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্ব দান করেছেন। মৃত্যুর পর বিচারকও হবেন, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন, আর যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন। তিনি সবকিছুতেই সক্ষম।
* হিন্দুদের বিভিন্ন গ্রুপের লোকদের প্রশ্নের উত্তর হবে ভিন্ন ভিন্ন। যেমন কিছু লোক প্রশ্ন করবে- মানুষ এবং সকল সৃষ্টির মাঝে কিআল্লাহতা‘আলার মহত্ত্ব বিদ্যমান আছে? উত্তরে বলতে হবে, সৃষ্টি যদি আল্লাহ্্র অস্তিত্বের অংশ হতো, তাহলে জান্নাত ও জাহান্নাম, স্বর্গ-নরকের অস্তিত্ব থাকতো না। কেননা, আল্লাহর অস্তিত্বের একটি অংশ দোযখে জ্বলবে, এটা চূড়ান্ত পর্যায়ের হাস্যকর ধারণা। মৃত্যুর পর প্রতিদান ও শাস্তির ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণাদি রয়েছে। মৃত্যুর পর রূহ বা আত্মা আল্লাহর কাছে ফিরে যায়। যা হিন্দুধর্মের গ্রন্থেও বিদ্যমান। চিন্তা কখনো অসীম হতে পারে না। যদি আমাদের সসীম চিন্তা আল্লাহকে সীমাবদ্ধ করতে পারতো তাহলেআল্লাহ্তা‘আলা অসীম হতেন না। আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনে এভাবে বর্ণনা করেছেন ليس كمثله شي পৃথিবীর কোন জিনিস তার সাদৃশ্য নেই।
* যখন একথা বুঝতে পারবে যে, ধর্মীয় গ্রন্থে আল্লাহ্্সম্পর্কে কোন স্ববিরোধ নেই। নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি বুঝতে বেশি সমস্যা হবে না-
* যেমন কুরআনে কারীমে বলা হয়েছেÑ যেদিকেই ফিরবে সে দিকেই আল্লাহর চেহারা…. ।
আশা রাখা যায় এবার সে প্রকৃত তাওহীদের প্রবক্তা হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ। এবার তার দৃষ্টি আকর্ষণ করুন আখেরাতের দিকে।
* মাদউর (যাকে দাওয়াত দেয়া হচ্ছে) সাথে আখেরাতের বিষয়ে আলোচনা শুরু করুন। বলুন যে এই দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পৃথিবীর সকল জিনিস শেষ হয়ে যাবে। মহাপ্রলয় বা কেয়ামত সংঘটিত হবে। ইনসাফের দাবিও হলো তা প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
যেমন কোন ব্যক্তি তিন জনকে হত্যা করে ফেলল। এর সর্বোচ্চ শাস্তি হলো তার জানটিকে শেষ করে দেয়া। কিন্তু জানতো হলো একটি। এক জনের পক্ষ থেকে বিচার হলো, বাকি দুজনকে হত্যা করার জন্য তার বিচার কীভাবে হবে? এ জন্যই আল্লাহ্তা‘আলাআখিরাতে এর বিচারের ব্যবস্থা রেখে দিয়েছেন। (নরকে) জাহান্নামে তাকে তিন হত্যার বিচার করা হবে। তদ্রƒপ কোন ব্যক্তি ভালো আমল করে, তার প্রতিদানস্বরূপ রাখা হয়েছে জান্নাত। সেখানে চিরস্থায়ী ভাবে থাকতে হবে। সেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব। যেমন মায়ের পেটে দ্বিতীয় বার প্রবেশ করা অসম্ভব।
* মাদ‘উ বলবে হ্যাঁ আপনিতো এবার আপনার ধর্মই প্রমাণিত করে ফেললেন। এবার বলুন ভাই! এটা শুধু আমাদের ধর্মই নয় বরং আপনাদেরও ধর্ম। তখন সে উত্তর দিবে না, আদি পাপের কারণে পুনরায় বিভিন্ন রূপে জন্মগ্রহণ করবে।
* আমাদের বলতে হবে, না ভাই! এটা সাধারণ যুক্তি-বুদ্ধিরও পরিপন্থি। এটা একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তিও মেনে নিবে না। আপনি তো একজন বুদ্ধিমান মানুষ। পুনর্জন্ম বিশ্বাস করলে কয়েকটি প্রশ্ন দেখা দেয় যার উত্তর কোন হিন্দু ভাইও দিতে পারে না।
* প্রথম প্রশ্ন সাইন্স বলে, পৃথিবী যখন বানানো হয়, তখন প্রথমে জীব- জন্তু সৃষ্টি হয়েছে। এর পর গাছ-পালা, তরু-লতা অস্তিত্বে এসেছে। এর পর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব যে, যখন মানুষই ছিল না, তখন জীব-জন্তু কোন পাপের কারেণে দুনিয়াতে এসেছে?
* দ্বিতীয় প্রশ্ন উঠে, হিন্দুদের বর্ণনা অনুযায়ী শুরুতে যুগ ছিল সত্য। উদাহরণস্বরূপ সত্য যুগে জনসংখ্যা ছিল ১০,০০০। যদি সকলেই ভলো হয় তাহলে ১০,০০০ তো এখনও থাকা উচিত। যদি পূর্বের যুগের ১০,০০০ দশ হাজারের মধ্যে কিছু লোক খারাপ ছিল, তাহলে জন্ম সংখ্যা হিসেবে, জনসংখ্যা কম হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু বাস্তবতা হলো এর উল্টো। পূর্বের তুলনায় জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। তাহলে এটা আবার কীভাবে সম্ভব? এতে বুঝা গেল পুনর্জন্মের এই ধারণা সঠিক নয়।
* তৃতীয় প্রশ্ন হলো, পুরো দুনিয়ার সকল মানুষ ভালো হতে চায়, আর সকলেই যদি ভালোই হয়ে যায়, তাহলে শাক-সবজি কোথা থেকে আসবে। নাউযুবিল্লাহ আল্লাহ কি জালেম (?) ( কখোনই নয়।) এমনটি নয় যে তিনি এক দিকে মানুষকে ভালো হতে বলবেন, আবার অন্যদিকে ভালোও হতে দিবেন না? এটা অসম্ভব। যখন খাবারের কোন জিনিস না থাকবে, তখন এমনিতেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। এমন স্ববিরোধ? কেমন ধর্ম? মোট কথা এই কথা দ্বারা বুঝা গেল যে, এই পুনর্জন্মের বিশ্বাস সঠিক নয়।
এবার সম্ভব হলে ওই বৈঠকেই অথবা অন্যদিন রেসালাতের উপর আলোকপাত করুন। যদি আল্লাহ্ তা‘আলাএকই দেশে একই যুগে বিভিন্ন আকার আকৃতিতে আসেন, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ও অন্যান্য দেশের লোকদের কী অবস্থা হবে?
যদি আল্লাহর অংশ মনে করি তাহলে পাপীকে শাস্তি দিবেন, বা নরকে জ্বালাবেন কেন? এমনটি সঠিক নয়। দুনিয়ার সবকিছু আল্লাহ্ নিজেই পারিচালনা করেন। কিন্তু কিছু কাজের জন্য ফেরেশতাদের নির্দিষ্ট করে রেখেছেন এবং সঠিক পথ দেখানো জন্য রাসূল বা দূতদের পাঠিয়েছেন। যাতে মানুষ এক আল্লাহরই উপাসনা করে। এ জন্যই আদি পিতা আদম (আ.)কে সর্বপ্রথম নবী হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন। দুনিয়াতে যারাই দাবি করেন, আমাদের কাছে ঐশী জ্ঞান আছে, তাদের প্রত্যেকের গ্রন্থে শেষ নবীর আলোচনা বিদ্যমান আছে। তাওরাত, ইঞ্জিল, বৌদ্ধ ধর্ম ও কুরআনে শেষ নবীর আলোচনা পাওয়া যায়। এসব কিছু রয়েছে পৃথক পৃথক ভাষায়, যার একটিই অর্থ হয়- মুহাম্মদ।