সোমবার, ১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
জাতীয়তাবাদের বিষাক্ত মরণছোবলে বেঈমান কামাল আতাতুর্ক যেখানে ইসলামী ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটাতে চেয়েছিল, ওসমানী খেলাফতের সেই ধ্বংসস্তুপে দাড়িয়ে নতুন করে হেলালী নিশান উড়িয়ে চলেছেন উম্মতে মুসলিমাহর অবিসংবাদিত মহানায়ক রজব তাইয়েব এরদোগান ৷ আধুনিক ইউরোপের বুকের ওপর রচনা করে চলেছেন নতুন দিনের ইসলামী ইতিহাস ৷ চলেছেন ধর্মনিরেপক্ষতার কবর রচনা করে মানবতার শাশ্বত পয়গাম ইসলামী ইনসানিয়াতের নজির স্থাপন করে ৷ কেন তার জন্য তার জনগণ বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়, বুক চিতিয়ে আগ্রাসী ট্যাংক বহরের রুখে দেয় অগ্রযাত্রা, অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয় হাসি মুখে, নিশ্চয় সেটা একবিংশ শতাব্দীর নতুন নেতৃত্বের জন্য সব চেয়ে বড় গবেষনার বিষয় ৷ যে তুর্কি ছিল শেষ ইসলামী সালতানাতের অস্তাচল, সেই তুর্কির পূব আকাশেই এই এরদোগানের হাত ধরে বুঝি আবার উদিত হচ্ছে নতুন সালতানাতের সূর্য ৷
ইসলামী উম্মাহর মধ্যগগনে দেদীপ্যমান এরদোগানের স্তুতি গাওয়া বক্ষমান আলোচনার উদ্দেশ্য নয়, বরং বলতে চাই একবিংশ শতাব্দীতে মানবতার মূর্তপ্রতীক মহিয়সি আমিনা এরদোগানের বঙ্গ জয়ের বিস্ময়কর উপাখ্যান! বার্মার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর চালিত পৈশাচিক বর্বরতার নীল কষ্ট যার হৃদয়টাকে বিষিয়ে তুলেছে, মুসলিম নারী আর শিশুদের আর্তনাদ যার বুকটা বিদীর্ণ করে ছেড়েছে, মানবতার বিপর্যয়ে চোখের পানিতে যার বক্ষ ভেসেছে, হাজার মাইলের দূরত্ব তুচ্ছ করে যিনি ছুটে এসেছেন ইনসানিয়াতের প্রতীক হয়ে ৷ হিংস্র হায়েনা সূচির হাতে যখন শান্তির নোবেল, মানবতা যখন পিস্ট সামরিক জান্তার বুটের তলে, নতুন ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির তখন ঝরে ঝরে পড়ে মুসলিম আমিনার চোখের পাতায় ৷ যার মানবপ্রিতিতে দেখা যায়নি কোনো লৌকিকতার ছাপ, কিংবা ভিন্ন উদ্দেশ্যে মেকি কান্নার অভিনয় ৷ রাজনৈতিক স্বার্থে, বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার লক্ষে কাঁদতে দেখা যায় অনেককে, কিন্তু ইনসানিয়াত আর ঈমানী ভ্রাতৃত্বের আবেগ নিয়ে কলিজার টানে ছুটে চলার অনন্য নযির সৃষ্টি করলেন তুর্কি ফাস্ট লেডি আমিনা এরদোগান ৷ সীমান্তের কুতুপালংক শরণার্থিশিবির পরিদর্শনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখলেন ৷ আর অসহায় নারী শিশুদেরকে বুকে জড়িয়ে যেভাবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন, তাতে একবিংশ শতাব্দীর চোখে নতুন করে জীবন্ত হয়ে উঠল নবীজীর বাণী “তাবৎ মুসলিম উম্মাহ এক দেহস্বদৃশ” ৷ মায়ের মত আপন করে, বোনের মত স্নেহের পরশ দিয়ে হালকা করে দিলেন হাজারো মানুষের দুঃখের বোঝা ৷ মালালাদের মত নাচের পুতুল না হওয়ায় প্রথম আলোদের কভারেজ হয়ত পাবেন না সত্যিকার মানবতার এই মহান সেবিকা, কিন্তু লাখো হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠিকই অমর হয়ে থাকবে তাঁর অশ্রুভেজা মমতার ছবি ৷ স্বশ্রদ্ধ সালাম তোমায় হে মুসলিম জননী আমিনা এরদোগান!
তোমার দেখানো পথ ধরে জেগে উঠুক সব ঘুমন্ত মুসলিম পাড়া…