বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
মিয়ানমার থেকে পাহাড়, জঙ্গল, ঝোপঝাড় পেরিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির চোখ ফাঁকি দিয়ে পাঁচদিন ধরে গর্ভধারিণী মা ও বাবাকে কাঁধে নিয়ে উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে আকিয়াবের মো: আইয়ুব (২৫)।
সরেজমিনে দেখা যায়, তার কাঁধে ৮০ বছরের বৃদ্ধ পিতা দুলু মিয়া এবং ৬৫ বৃদ্ধা মা আছিয়া খাতুন। বয়সের কারণে আ্ইয়ুবের বাবা খুব একটা হাঁটতে পারেননা, আর মা অসুস্থ। তাই ছেলে আইয়ুব পাঁচদিন ধরে মা-বাবাকে কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়িয়েছেন সীমান্তের বিভিন্ন অঞ্চল।
আইয়ুব জানায়, কখনও জঙ্গলে, কখনও পাহাড়ে রাত কেটেছে মা-বাবাকে নিয়ে। মিয়ানমার থেকে সঙ্গে আনা সামান্য শুকনো খাবার বৃদ্ধ মা-বাবাকে খাইয়েছেন। তাও মাত্র ২দিন। তাই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা মাত্র আইয়ুবসহ বাবা-মা খিদের জ্বালায় কান্না জুড়ে দেন।
উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর কিছু লোক তাদের খাদ্য ও টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে বলে জানান আ্ইয়ুব।
কুতুপালং রাস্তার পাশে দেখা হলে আইয়ুব বলেন, অনেক কষ্ট ও খিদের যন্ত্রণা সহ্য করে পাঁচদিন হেঁটে মা-বাবাকে নিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছি। মিয়ানমার বাহিনী যখন একের পর এক গ্রাম পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, তখন মা-বাবা দুজনকে ঝুঁড়িতে নিয়ে কাঁধে করে পালাতে থাকি, পাঁচদিন ধরে বিভিন্ন জঙ্গল পেরিয়ে অবশেষে উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করি।
শুধু এই পরিবার নয়, সীমান্তজুড়ে রয়েছে এমন অসংখ্য কাহিনী। কেউ বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে এসেছেন, কেউ কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন প্রতিবন্ধী বোনকে। কিন্তু বৃদ্ধ মা বাবা দুজনকে কাধেঁ নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের নজির প্রথম দেখালেন আইয়ুব। স্থানীয় জনগণ নতুন আসা রোহিঙ্গাদের শুকনো খাবার দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তারা চায় সুন্দর জীবন ও বাচাঁর মত মাথা গোজার ঠাঁই।